পিস্তল উঁচিয়ে হুঙ্কারের পাল্টা জবাব– ‘আয় গুলি কর’
Published: 11th, April 2025 GMT
নদীতে পাশাপাশি দুটি নৌকা। হাতে লাঠিসোটা নিয়ে ১০-১২ যুবক নৌকার ওপর দাঁড়িয়ে ছিলেন। তাদের মধ্যে একজন হঠাৎ অস্ত্র উঁচিয়ে নদীতীরে থাকা এক পক্ষের দিকে হুঙ্কার ছাড়েন। অস্ত্রধারীর পরনে টি-শার্ট, প্যান্ট ও হাতে ব্রেসলেট। হুঙ্কারের পর অশালীন শব্দ ব্যবহার করে ওপাশ থেকে পাল্টা উত্তর– ‘আয় গুলি কর।’
বুধবার বিকেলে ঢাকার অদূরে সাভারের কাতলাপুরে বংশী নদীর মিলনঘাট এলাকার দৃশ্য ছিল এটি। সশস্ত্র এ গ্রুপের ভিডিও ফুটেজ দ্রুত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। শুধু অস্ত্র প্রদর্শন নয়, দুটি ট্রলার ছিনিয়ে নেয় তারা। খোঁজ নিয়ে জানা গেল, খেয়াঘাটের চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ ও ইজারা নিয়ে দু’পক্ষের দ্বন্দ্বের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। যাদের হুমকি দেওয়া হয়, তারা বর্তমানে ঘাটের ইজারাদার। এ ঘটনায় সাভার পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম সাভার মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। পরে সেটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়।
মামলার এজাহারে বলা হয়, সাভারের কাতলাপুরের কর্ণপাড়া মিলনঘাট পরিচালনা করছেন কামরুল ইসলাম। কিছুদিন ধরে মানিকগঞ্জের সিংগাইর থানার ফুডনগর মোল্লাপাড়ার অন্তর খান (২৬), মোর্শেদ খান (২৫), মোশাররফ খান (২৮), হৃদয় (২৫), রনি খানসহ (৪২) অজ্ঞাতনামা ১০-১২ জন ঘাট পরিচালনায় বাধা দেন। ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করছিলেন তারা। গত বুধবার সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে তাঁরা পিস্তল, ধারালো দেশি অস্ত্র, রামদা, চাকু ও রড নিয়ে মিলনঘাটে উপস্থিত হয়ে ফের চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে কামরুলকে মারধর করেন। এক পর্যায়ে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে অন্তর খান পিস্তলসদৃশ আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি ছোড়েন। তারা খোকন ও আরমান মাঝিকে মারধর করেন। কামরুলের দুটি ইঞ্জিনচালিত নৌকা (ট্রলার) ছিনিয়ে নিয়ে সেখান থেকে চলে যান।
অস্ত্র হাতে যাঁকে দেখা গেছে, সেই অন্তর খানের ছবিসহ বিভিন্ন পোস্টার সাভারের দেয়ালে দেয়ালে সাঁটানো। সাভার পৌর ছাত্রদলের পরিচয় দিয়ে ওই পোস্টারে স্থানীয়দের ‘ঈদের শুভেচ্ছা’ জানিয়েছেন তিনি। অন্তরের গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জের সিংগাইরে।
কামরুল ইসলামের ছেলে হেদায়েতুল্লাহ সমকালকে বলেন, চাঁদা না দেওয়ায় তারা বাবাকে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছিলেন। সাভার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ জুয়েল মিঞা বলেন, মিলনঘাটে ট্রলার ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় এক যুবককে পিস্তল হাতে দেখা গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তবে গুলির ঘটনার তথ্য পাওয়া যায়নি। বৃহস্পতিবার মানিকগঞ্জের ভাটিরচরে অভিযান চালিয়ে ট্রলার উদ্ধার করা হয়েছে। জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সেই আছিয়ার পরিবারকে গরু ও ঘর দিল জামায়াত
মাগুরায় যৌন নিপীড়নের শিকার হয়ে মারা যাওয়া আলোচিত শিশু আছিয়ার পরিবারকে দুটি গরু ও একটি গোয়ালঘর উপহার দেওয়া হয়েছে। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের পক্ষ থেকে আছিয়ার পরিবারকে এ উপহার দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেলে মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার জারিয়া গ্রামে আছিয়ার বাড়িতে উপস্থিত হয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে উপহার হস্তান্তর করেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য এবং কুষ্টিয়া ও যশোর অঞ্চলের পরিচালক মোবারক হোসাইন।
এ সময় জেলা জামায়াতের আমির এম বি বাকের, সাবেক আমির ও কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা আব্দুল মতিনসহ স্থানীয় এবং জেলা কমিটির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আরো পড়ুন:
শিশু ছাত্রীকে যৌন নির্যাতন, মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা
অপারেশনের পর শিশুর মৃত্যু: তদন্ত কমিটি গঠন, থানায় মামলা
গত ১৫ মার্চ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান আছিয়ার বাড়িতে যান। তিনি শিশুটির মৃত্যুর ঘটনায় দ্রুত বিচার চান। সে সময় আছিয়ার পরিবারকে স্বাবলম্বী করতে একটি গোয়াল ঘর এবং দুটি গরু দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন জামায়াতের আমির।
আট বয়সী আছিয়া মাগুরার নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের শিকার হয় বলে পরিবারের তরফ থেকে অভিযোগ ওঠে। গত ৬ মার্চ অচেতন অবস্থায় মাগুরার ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নেওয়া হয় তাকে। অবস্থার অবনতি হলে মাগুরা হাসপাতালের চিকিৎসকদের পরামর্শে শিশুটিকে নেওয়া হয় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে থেকে সেদিন সন্ধ্যায় উন্নত চিকিৎসার জন্য শিশুটিকে ঢাকায় নেওয়া হয় এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে ভর্তি করা হয়। দুই দিন পর ৮ মার্চ তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নেওয়া হয়। ১৩ মার্চ বৃহস্পতিবার সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় আছিয়ার।
ঢাকা/শাহীন/রফিক