চার দিনের বিনিয়োগ সম্মেলন গতকাল বৃহস্পতিবার শেষ হয়েছে। এ সম্মেলনে প্রায় সাড়ে চার শ জন বিদেশি বিনিয়োগকারী অংশ নেন। তাঁরা দেশের তিনটি অর্থনৈতিক অঞ্চল ঘুরে দেখেন। বিনিয়োগ পরিবেশেরও খোঁজ নেন। সম্মেলনে ১৫ কোটি ডলার বিনিয়োগে সমঝোতা চুক্তি করেছে চীনা একটি প্রতিষ্ঠান। আর এই সম্মেলনেই স্টার্টআপ কোম্পানি শপআপের ১১ কোটি ডলারের বিদেশি বিনিয়োগ পাওয়ার কথা জানানো হয়। এ ছাড়া একাধিক বিদেশি প্রতিষ্ঠান ও বিনিয়োগ প্রতিনিধিদল বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

সম্মেলনের আয়োজক বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) বলছে, এখন তারা এসব বিনিয়োগ প্রতিশ্রুতি নিয়মিতভাবে ‘ট্র্যাকিং’ করবে। এ জন্য বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখবে সংস্থাটি। যাতে প্রতিশ্রুতিগুলো প্রকৃত বিনিয়োগে রূপ নেয়। ঢাকার ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে গতকাল বিনিয়োগ সম্মেলনের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়। সম্মেলন শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে বিডার কর্মকর্তারা এ পরিকল্পনাগুলো তুলে ধরেন।

বাংলাদেশে বিনিয়োগের সম্ভাবনা, জুলাই বিপ্লবের পর সংঘটিত অর্থনৈতিক সংস্কার তুলে ধরা এবং টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের পাইপলাইন তৈরির লক্ষ্যে এই বিনিয়োগ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত বিনিয়োগকারী, শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়িক নির্বাহী ও নীতিনির্ধারকেরা অংশ নেন। চার দিনের এ আয়োজনে বুধবার ও বৃহস্পতিবার ছিল মূল আনুষ্ঠানিকতা। তার আগে দুদিন সম্মেলনে যোগ দিতে আসা বিনিয়োগকারী ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের চট্টগ্রামের আনোয়ারায় কেইপিজেড, মিরসরাইয়ের জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ও নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চল ঘুরিয়ে দেখানো হয়। গত বুধবার সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। এদিন সম্মেলনস্থলে স্টারলিংকের ইন্টারনেট সেবা পরীক্ষামূলকভাবে সবার জন্য উন্মুক্ত করা হয়।

বিনিয়োগ পরিবেশ নিয়ে প্রশ্ন

বিডার কর্মকর্তারা জানান, সম্মেলনে আগত বিনিয়োগকারীদের বেশির ভাগ প্রশ্নই ছিল ব্যবসা ও বিনিয়োগ পরিবেশ নিয়ে। বিনিয়োগকারীরা জানিয়েছেন, এ দেশে বিনিয়োগের বড় বাধা নীতি ধারাবাহিকতার অভাব। এ ছাড়া রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, সমন্বয়হীনতা, দুর্নীতি, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, শুল্ক-কর, গ্যাস ও বিদ্যুতের সমস্যাও বিনিয়োগকে বাধাগ্রস্ত করে। এসব বিষয়ে বিনিয়োগকারীরা সরকারের অবস্থান জানতে চান।

এ প্রসঙ্গে বুধবার সম্মেলনের এক অধিবেশনে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, বিনিয়োগের বিদ্যমান বাধাগুলো চিহ্নিত করে সরকারের পক্ষ থেকে বিনিয়োগ পরিবেশ নিশ্চিত করা হবে।

পাইপলাইন তৈরি করা হবে

সম্মেলনের শেষ দিনের সংবাদ সম্মেলনে বিডা জানায়, ‘বাংলাদেশে আমরা কোন ধরনের বিনিয়োগ প্রত্যাশা করছি এবং সে জন্য কী পদক্ষেপ নিচ্ছি, সেগুলো বিনিয়োগকারীদের কাছে তুলে ধরা হয়েছে।’ সংবাদ সম্মেলনে বিডার নির্বাহী সদস্য শাহ মোহাম্মদ মাহবুব বলেন, ‘সম্মেলনে কত বিনিয়োগ প্রস্তাব পেয়েছি, সেটি মুখ্য না। এই আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য ছিল সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদের একটি পাইপলাইন তৈরি করা, যাতে তাদের ট্র্যাক করে পরবর্তীতে বিনিয়োগ নিশ্চিত করা যায়। আগের বিনিয়োগ সম্মেলনেও আমরা অনেক প্রতিশ্রুতি পেয়েছিলাম। কিন্তু এসব প্রতিশ্রুতি ট্র্যাক না করায় সেগুলো প্রতিশ্রুতিই থেকে গেছে।’

সংবাদ সম্মেলনে বিডার বিজনেস ডেভেলপমেন্ট প্রধান নাহিয়ান রহমান বলেন, ‘সাধারণত একটি বিনিয়োগ আলোর মুখ দেখতে ১৮ থেকে ২৪ মাস সময় লাগে। এই সময়ের আলোকে সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদের নিয়ে আমরা একটি সুস্পষ্ট পথনকশা তৈরি করব। যেসব বিদেশির কাছ থেকে বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে, নির্দিষ্ট সময় পরপর আমরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করব। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আমরা প্রতিশ্রুতিগুলোকে প্রকৃত বিনিয়োগে রূপ দিতে চাই।’

আয়োজকেরা জানান, গত চার দিনের সম্মেলনে তিনটি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে ব্যবসা বাড়ানো ও বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তবে তারা কী পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করবে, সে রকম কোনো প্রতিশ্রুতি দেয়নি। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করে এসব প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ভবিষ্যতে এ দেশে বিনিয়োগ বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেন। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে স্পেনের খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান ইন্ডিটেক্স, সিমেন্ট খাতের বহুজাতিক কোম্পানি লাফার্জহোলসিম ও চীনের তৈরি পোশাক কোম্পানি হান্ডা ইন্ডাস্ট্রিজ। এর মধ্যে হান্ডা ইন্ডাস্ট্রিজ বাংলাদেশে ১৫ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে বলে সমঝোতা চুক্তি করেছে। এর বাইরে বিডার নির্বাহী পরিচালক আশিক চৌধুরী গত বুধবার স্টার্টআপ কোম্পানি শপআপের ১১ কোটি ডলারের বিদেশি বিনিয়োগ পাওয়ার কথা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেন।

এদিকে বাংলাদেশে বিনিয়োগ সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে আগামী মাসে ২০০ বিনিয়োগকারীসহ চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী বাংলাদেশ সফরে আসবেন বলে জানিয়েছেন বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান। দুবাইভিত্তিক কোম্পানি ডিপি ওয়ার্ল্ড চট্টগ্রামের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আর বাংলাদেশ সফররত যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য দূত ব্যারোনেস রোজি উইন্টারটন দেশের স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষা খাতে প্রশিক্ষণ, প্রযুক্তি বিনিময় ও দীর্ঘমেয়াদি অংশীদারত্বের বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন বলে সম্মেলন আয়োজকেরা জানান।

সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে গত মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার সঙ্গে প্রথমবারের মতো একটি চুক্তি করেছে বাংলাদেশ। নাসার আর্টেমিস কর্মসূচির সঙ্গে সম্পর্কিত এই চুক্তি অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের ৫২টি দেশের সঙ্গে মিলে মহাকাশ অনুসন্ধানে অংশ নিতে পারবেন বাংলাদেশি তরুণেরা। এ ছাড়া বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নের জন্য আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) সঙ্গে একটি চুক্তি সই করেছে বিডা।

সমাপনী দিনে সম্মেলনস্থলে একাধিক বিষয়ভিত্তিক কর্ম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। তৈরি পোশাক, ডিজিটাল অর্থনীতি, স্বাস্থ্যসেবা, সেমিকন্ডাক্টর এবং কৃষি ও কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্পের বিনিয়োগ সম্ভাবনা নিয়ে এসব অধিবেশনে আলোচনা হয়। সম্মেলনে দেশীয় উদ্যোক্তারা অংশ নেন। তার মাধ্যমে দেশি-বিদেশি উদ্যোক্তাদের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন আয়োজকেরা।

অর্থনীতিতে বিশেষ অবদানের জন্য বিভিন্ন শ্রেণিতে দেশের চারটি প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠান চারটি হলো বিকাশ, ফেব্রিক লাগবে, ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ ও স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস। গত বুধবার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব প্রতিষ্ঠানের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন প্রধান উপদেষ্টা।

একই অনুষ্ঠানে এ দেশে কোরিয়ার বিনিয়োগকারী ও ইয়াংওয়ান করপোরেশনের চেয়ারম্যান কিহাক সাংকে বাংলাদেশের সম্মানসূচক নাগরিকত্ব দেওয়া হয়। বাংলাদেশের শিল্প খাতের বিকাশ, বিপুল জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান ও বৈদেশিক আয়ে অবদানের জন্য তাঁকে এ সম্মাননা দেওয়া হয়। আশির দশকে বাংলাদেশের পোশাকশিল্প উদ্যোক্তাদের মধ্যে তিনি ছিলেন প্রথম বিদেশি বিনিয়োগকারী। আয়োজকেরা বলছেন, একজন বিদেশি বিনিয়োগকারীকে সম্মানিত করার মাধ্যমে অন্য বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগে আগ্রহী করে তুলতেই এই সম্মাননা দেওয়া হয়।

সম্মেলনে সরকারি বিভিন্ন সংস্থা এবং বিএনপি, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও জামায়াতে ইসলামী—এই তিন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বিনিয়োগকারীদের মিথস্ক্রিয়ার জন্য পৃথক ব্যবস্থা ছিল। এতে করে বিনিয়োগকারীরা এসব সংস্থা ও দলের কাছ থেকে বিভিন্ন বিষয়ে তাঁদের অবস্থান জানার সুযোগ পান।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর মকর ত গ পর ব শ উপদ ষ ট ন র জন র জন য সরক র ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস

স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।

মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’

সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।

অনাহারে মৃত্যু ১৫৪

গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।

গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।

ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩

জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।

বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।

গাজায় স্টিভ উইটকফ

শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ