যশোরের শার্শা উপজেলায় একটি কওমি মাদ্রাসার ছাত্রীদের কক্ষে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের ঘটনায় নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ)। দ্রুত নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্তের মাধ্যমে এ ঘটনায় দোষীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানিয়েছে সংস্থাটি।

আজ রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি জানায় এমজেএফ। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি যশোরের শার্শা উপজেলার একটি মহিলা মাদ্রাসায় ছাত্রীদের হোস্টেলে নাইট ভিশন (রাতের অন্ধকারেও দেখা যায় এমন) ১৬টি সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের অভিযোগ উঠেছে। একজন অভিভাবক অভিযোগ দায়ের করে কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করলে বিষয়টি সামনে আসে। এ ঘটনার মাধ্যমে শিশুদের মানবাধিকার হরণের মতো গর্হিত কাজ করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে এমজেএফের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম বলেন, এমন ঘটনার মাধ্যমে শুধু গোপনীয়তা লঙ্ঘন হয়েছে তা–ই নয়, এটি শিশুদের নিরাপত্তা ও মর্যাদাহানি করার মতো গুরুতর অপরাধ। ছাত্রীদের থাকার ঘরে এমন যন্ত্রপাতি স্থাপন অত্যন্ত ভীতিকর ব্যাপার। এমজেএফ দ্রুত, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানাচ্ছে।

এমজেএফ দেশের অন্যান্য মাদ্রাসা ও আবাসিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়। এতে আরও বলা হয়, এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এর পেছনে আরও অনেক লুকানো ঘটনা বা অনিয়ম থাকতে পারে, যা হয়তো এখনো প্রকাশ পায়নি। দেশের অন্যান্য মেয়ে ও ছেলেদের হোস্টেলেও এমন পরিস্থিতি বিদ্যমান থাকতে পারে। দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রাবাস ও ছাত্রীনিবাসে সমন্বিত অথবা পৃথক তদন্ত পরিচালনার ব্যবস্থা করতে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে এমজেএফ।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ধর্ষণ, ভিডিওভিত্তিক যৌন সহিংসতা ও সাইবার অপরাধ–সম্পর্কিত সাম্প্রতিক বিভিন্ন ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। সবাইকে নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, বাংলাদেশসহ গোটা বিশ্ব যখন নারী অধিকারের সুরক্ষা ও ক্ষমতায়ন নিয়ে অঙ্গীকারবদ্ধ, তখন এমন নৃশংসতা সহ্য করা যায় না। এমজেএফ জোরালোভাবে সমাজের প্রত্যেক নাগরিকের প্রতি ভয়ের সংস্কৃতি ও নীরবতা ভেঙে বেরিয়ে এসে, প্রতিটি মেয়ের নিরাপত্তা ও মর্যাদার পক্ষে জোরালো প্রতিবাদ গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছে।

আরও পড়ুনযশোরে ছাত্রীদের কক্ষে সিসি ক্যামেরা, মনিটর শিক্ষকের কক্ষে, মাদ্রাসায় পুলিশের অভিযান১০ এপ্রিল ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ঘটন য়

এছাড়াও পড়ুন:

সাজেকে নিহত খুবি শিক্ষার্থী রিংকীর মরদেহ নেওয়া হবে গাইবান্ধা

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের সেশনাল ট্যুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থী মোছা. রুবিনা আফসানা রিংকীর মরদেহ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে তার বাড়ি গাইবান্ধায় নেওয়া হবে।

এছাড়া শিক্ষার্থী নিহত ও আহতের ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ে শোক ঘোষণা করা হয়েছে। একই সাথে এদিন সকল ক্লাস-পরীক্ষাও বন্ধ রয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. নাজমুস সাদাত এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘‘খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থীদের সেশনাল ট্যুরের সময় রাঙামাটির সাজেক যাওয়ার পথে গাড়ি দুর্ঘটনার শিকার হয়। এতে পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী মোছা. রুবিনা আফসানা রিংকী নিহত হন। দুর্ঘটনায় নিহত রুবিনা আফসানা রিংকির মরদেহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে তাদের বাড়ি গাইবান্ধায় নেওয়া হবে। এই দুর্ঘটনায় আরো কয়েকজন শিক্ষার্থী ও শিক্ষক আহত হয়েছেন। আহতদেরকে দ্রুত চিকিৎসার জন্য খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তিনজনকে চট্টগ্রামে স্থানান্তর করা হচ্ছে ।”

তিনি বলেন, “এই শোকাবহ ঘটনায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার গভীরভাবে মর্মাহত। আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ে শোক ঘোষণা করা হয়েছে, সকল ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ রাখা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাগড়াছড়ি এবং বান্দরবানের সিভিল প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। ছাত্রদের সঙ্গে শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত আছেন। তিনি নিজে এবং সহকারী পরিচালকসহ কর্মকর্তারা খাগড়াছড়ি রওনা হয়েছেন।”

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদসহ সকল উপাসনালয়ে নিহত শিক্ষার্থীর আত্মার মাগফিরাত এবং আহতদের সুস্থতার জন্য বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনা করার জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ করেন তিনি। 

এদিকে, সাজেকে শিক্ষার্থী নিহত ও আহতের ঘটনায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সব ধরনের সেশনাল ট্যুর অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করেছে কর্তৃপক্ষ। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-রেজিস্ট্রার কাকলি রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষ ৪র্থ বর্ষ টার্ম-২ এর সেশনাল ট্যুরে অংশগ্রহণরত অবস্থায় সড়ক দুর্ঘটনায় একজন শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে আরো কয়েকজন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন। শিক্ষার্থীর এই অকাল মৃত্যুতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার গভীরভাবে শোকাহত এবং আহতদের দ্রুত চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

এ পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সকল দূরপাল্লার সেশনাল ট্যুর স্থগিত করার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ করেছে কর্তৃপক্ষ।

উল্লেখ্য, রাঙামাটির বাঘাইছড়ির সাজেক পর্যটনকেন্দ্রে যাওয়ার পথে চান্দের গাড়ি পাহাড়ের খাদে পড়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী নিহত হন। এসময় আহত হয়েছেন আরো ১১ জন। বুধবার দুপুর ১২টার দিকে সাজেকের হাউসপাড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। 

নিহত রুবিনা আফসানা রিংকী খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। আহতরা সবাই একই বিভাগের শিক্ষার্থী।

ঢাকা/নুরুজ্জামান/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ