অপহরণকারী আখ্যা দিয়ে বাবাকে পেটাচ্ছিল, পাশে কাঁদছিল শিশু রাইসা
Published: 14th, April 2025 GMT
কিশোরগঞ্জের ভৈরব থেকে নিজের তিন বছরের মেয়েকে নিয়ে অটোরিকশাযোগে জেলাশহরে ফিরছিলেন সোহেল মিয়া (৩০)। পথে কুলিয়ারচর উপজেলার রামদি ইউনিয়নের তাতারকান্দি এলাকায় তাকে শিশু অপহরণকারী আখ্যা দিয়ে অটোরিকশা থেকে নামায় স্থানীয় কিছু লোকজন। এ সময় পেছনে হাত বেঁধে সন্তানের সামনে সোহেল মিয়াকে উপস্থিত মানুষ পেটাতে থাকে। পাশেই রাইসা বাবা বাবা বলে চিৎকার করলেও তার কথা কেউ শোনেনি।
বিষয়টি দেখে একজন কুলিয়ারচর থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে বাবা-মেয়েকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
কুলিয়ারচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
আরো পড়ুন:
বাংলাদেশে তিনটি বড় হাসপাতাল করতে চায় চীন: স্বাস্থ্য উপদেষ্টা
কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের ওষুধ ‘চুরি’, আটক ২
এ ঘটনায় সাধারণ ডায়েরি মোতাবেক পুলিশ পদক্ষেপ নিবে কি-না জানতে চাইলে ওসি বলেন, ‘‘ঘটনাটি ভুল বুঝাবুঝির মাধ্যমে হয়েছে। জনগণতো জনগণই। কাউকে সন্দেহ হলে পুলিশকে খবর দেওয়া উচিত। আইন নিজের হাতে তোলে তো অপরাধ।’’
অপর আরেক প্রশ্নের জবাবে ওসি জানান, এ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, সবাইকে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।
সোহেল মিয়া কিশোরগঞ্জ পৌরসভা এলাকার হারুয়া সওদাগর পাড়ার বাসিন্দা। সোহেল মিয়ার স্বজনেরা জানান, সোহেলের সঙ্গে প্রতিবেশী সাবিনা আক্তারের (২৫) ১০ বছর আগে বিয়ে হয়। এই দম্পতির তিন সন্তান রয়েছে। কিছু দিন হয় সোহেলকে তালাক দিয়ে চলে যান সাবিনা। সন্তান রয়ে যায় বাবার কাছে। তিন বছর বয়সী রাইসা মায়ের কাছে যেতে অস্থির। কোনো উপায় না পেয়ে রাইসাকে সঙ্গে নিয়ে সাবেক স্ত্রীর খোঁজে বের হয়েছিলেন সোহেল। ভৈরবে এক স্বজনের বাড়িতে রাইসার মা থাকতে পারে, ভেবে কয়েক দিন আগে রাইসাকে নিয়ে সেখানে যান সোহেল, কিন্তু তাঁকে পাননি। গতকাল রবিবার (১৩ এপ্রিল) ভৈরব থেকে বাড়ি ফেরার সময় আগরপুর বাসস্ট্যান্ডে অপ্রীতিকর পরিস্থিতির শিকার হন তিনি।
ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করার পর কুলিয়ারচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আহত সোহেল মিয়াকে প্রাথমিক চিকিৎসা করিয়েছে পুলিশ। বর্তমানে পরিবারের সদস্যদের তত্ত্বাবধানে বেসরকারি হাসপাতালে তিনি চিকিৎসা নিচ্ছেন।
ঢাকা/রুমন/বকুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক ল য় রচর
এছাড়াও পড়ুন:
ছাড়া পেলেন অপহৃত কৃষক, এক অপহরণকারী অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার
কক্সবাজারের টেকনাফে ফসলি জমি থেকে বাড়ি ফেরার পথে অপহরণ হওয়া কৃষক মো. ফরিদ উল্লাহ (৪৩) মুক্তি পেয়েছেন। গতকাল রোববার রাত ১০টার দিকে উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের কোনারপাড়া এলাকায় তাঁকে ছেড়ে দেন অপহরণকারীরা। পুলিশ জানিয়েছে, তাদের অভিযানের মুখে অপহরণকারীরা ফরিদ উল্লাহকে ছেড়ে দিয়েছেন। ফরিদকে ছেড়ে দিয়ে পালানোর সময় অস্ত্র, গুলিসহ এক অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তির নাম মো. রিদুয়ান (২০)। তিনি টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের উলুচামারী এলাকার আবদুস সালামের ছেলে। গত শনিবার রাতে মো. ফরিদ উল্লাহকে অপহরণ করা হয়। তিনি হ্নীলা ইউনিয়নের দক্ষিণ আলীখালী এলাকার মোহাম্মদ সৈয়দের ছেলে।
পুলিশ জানায়, শনিবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে হ্নীলা ইউনিয়নের উলুচামারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়–সংলগ্ন এলাকায় ফসলি খেত থেকে বাড়ি ফিরছিলেন ফরিদ উল্লাহ। এ সময় তাঁকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে পাশের পাহাড়ে নিয়ে যান অপহরণকারীরা। রাতে ঘটনাটি ফরিদের পরিবার থেকে পুলিশকে অবহিত করা হয়। এরপর পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে অপহরণকারীদের অবস্থান শনাক্ত করে অভিযানে যায়। পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতি টের পেয়ে ফরিদকে ছেড়ে দিয়ে পালাচ্ছিলেন অপহরণকারীরা। এ সময় ধাওয়া দিয়ে একটি বন্দুক, চারটি গুলিসহ মো. রিদুয়ানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, রিদুয়ান চিহ্নিত মাদক কারবারি। এর পাশাপাশি অপহরণের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগেও তাঁর বিরুদ্ধে টেকনাফ থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। অপহরণের ঘটনায় ভুক্তভোগী ফরিদের স্ত্রী বাদী হয়ে রিদুয়ানের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছেন। রিদুয়ানকে আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। উদ্ধার হওয়া ফরিদ পুলিশি হেফাজতে রয়েছে বলেও জানান তিনি।