বৈশাখে চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীদের উচ্ছ্বাস
Published: 14th, April 2025 GMT
বাঙালির প্রাণের উৎসব পয়লা বৈশাখের নববর্ষ উদযাপন। নানা আয়োজনে দেশের বিভিন্ন স্থানে মহাসমারোহে পালিত হচ্ছে দিনটি। সরকারি ছুটির দিন হওয়ায় পয়লা বৈশাখের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে রাজধানীর বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্র। রাজধানীর মিরপুর জাতীয় চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীদের প্রচণ্ড ভিড় দেখা গেছে।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) বিকেলে গিয়ে দেখা যায়, চিড়িয়াখানার প্রধান ফটকের সামনে প্রচণ্ড ভিড়। প্রাণী ও পাখির খাঁচাগুলোর সামনে মানুষের ভিড়। নারায়ণগঞ্জ সদর থেকে বাবা-মা ও দুই ছেলে-মেয়ে নিয়ে চিড়িয়াখানায় ঘুরতে এসেছেন মোহাম্মদ হোসেন। তিনি বলেন, “একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করি।পয়লা বৈশাখ ও ঈদে ছুটি পাই। ঈদের গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিলাম। নববর্ষে আজ সবাই চিড়িয়াখানায় ঘুরতে এসেছি।”
আরো পড়ুন:
রঙে-আলোয় উজ্জ্বল বর্ষবরণ
চট্টগ্রামে নববর্ষের পূর্ব নির্ধারিত সব অনুষ্ঠান হবে: জেলা প্রশাসন
কথা হয় দর্শনার্থী মরজিনা আহসানের সঙ্গে। তিনি বলেন, “সকালে ভাই-বোনরা সিরাজগঞ্জ থেকে ঢাকায় এসেছি। সবাইকে নিয়ে জাতীয় চিড়িয়াখানায় ঘুরতে এলাম।”
সানাউল হক নামের একজন দর্শনার্থী বলেন, “ঈদের সময় বাবা অসুস্থ থাকায় হাসপাতালে থাকতে হয়েছে। ছেলে-মেয়ে নিয়ে কোথাও ঘুরতে যাইনি। আজ পয়লা বৈশাখ বের হয়েছি।”
জাতীয় চিড়িয়াখানার তথ্য অনুযায়ী, বাঘ, ভাল্লুক, হরিণ, সিংহ, বানর, জলহস্তী, কুমির, সাপ, ইম্পালা, গয়াল,উট পাখি, লামা, ময়না, টিয়া, ক্যাঙারু, জিরাফ, জেব্রা, হাতি, ময়ূর, উটপাখি, ইমু, শঙ্খচিল, কুড়াবাজ, তিলাবাজ, গন্ডার, হায়েনাসহ ১৩৬ প্রজাতির তিন হাজার ৩৪টি প্রাণী ও পাখি রয়েছে চিড়িয়াখানায়।
জাতীয় চিড়িয়াখানার পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম তালুকদার বলেন, “জাতীয় চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড় আজ। সরকারি ছুটি হওয়ায় আজ দর্শনার্থীর চাপ বেশি। চিড়িয়াখানার ভেতরে ধুলা যাতে না হয়, সে কারণে নিয়মিত পানি ছিটানো হয়।”
ঢাকা/আসাদ/সাইফ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর নববর ষ উৎসব
এছাড়াও পড়ুন:
যেকোনো উৎসবকে রাজনৈতিক প্রভাবের ঊর্ধ্বে রাখার আহ্বান বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকের
কেবল বাংলা নববর্ষই নয়, যেকোনো উৎসবকে রাজনৈতিক প্রভাবের ঊর্ধ্বে রাখার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম।
মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে "বাংলা নববর্ষ: ইতিহাস, সংস্কৃতি ও উত্তরাধিকার" শীর্ষক এক সেমিনারে বাংলা নববর্ষের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট, সাংস্কৃতিক তাৎপর্য ও সামাজিক প্রভাব নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ অনুরোধ করেন।
সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম বলেন, কেবল বাংলা নববর্ষই নয়, যেকোনো উৎসবকে রাজনৈতিক প্রভাবের ঊর্ধ্বে রাখা জরুরি। রাজনীতির সঙ্গে রাষ্ট্র ও সমাজের সম্পর্ক সঠিকভাবে গড়ে উঠলে কোনো উৎসবই নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত হয় না। মানুষের দৈনন্দিন জীবনে সাংস্কৃতিক চিন্তা-চেতনার যে স্বকীয়তা রয়েছে, তা অক্ষুণ্ন রাখাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত। বুদ্ধিভিত্তিক ও সচেতন উদ্যোগের মাধ্যমে ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব। বাংলা নববর্ষের প্রতি জনগণের গভীর অনুরাগ রয়েছে, তাই এটিকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখতে হবে।
সেমিনারে আইআরডিসি’র সাধারণ সম্পাদক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হকের সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন
আইআরডিসি-এর সভাপতি ও ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিলাল হোসাইন।
সেমিনারে ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. নাছির আহমেদ তার মূল প্রবন্ধে বাংলা নববর্ষের ঐতিহাসিক বিবর্তন এবং নববর্ষ উদযাপনের ঐতিহ্য ও উত্তরাধিকার নিয়ে দুই পর্বে বিশদ আলোচনা করেন। তিনি বলেন, বাংলা নববর্ষ কেবল বাঙালিদের উৎসব নয়, বরং এটি ধর্ম, গোত্র ও সম্প্রদায় নির্বিশেষে সকল বাংলাদেশির একটি সমন্বিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এছাড়া, বাংলা সনের উৎপত্তি, এর অর্থনৈতিক প্রাসঙ্গিকতা এবং ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক মাত্রা নিয়েও তিনি গভীরভাবে আলোকপাত করেন।
এছাড়াও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দীন এবং বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. ফজলে এলাহি চৌধুরী প্যানেল আলোচক হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন। তাঁরা বাংলা নববর্ষের আন্তর্জাতিক ও সামাজিক সংহতি এবং সাংস্কৃতিক বিকাশে এর ভূমিকা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ মতামত তুলে ধরেন। একইসাথে বাংলা নববর্ষের বহুমাত্রিক তাৎপর্য ও এর প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে গঠনমূলক আলোচনা করেন।
এসময় সেমিনারে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, গবেষক উপস্থিত ছিলেন।