গাজা পরিস্থিতি যে কারণে ইউক্রেনের তুলনায় গুরুতর
Published: 15th, April 2025 GMT
বিশ্বব্যাপী চলমান দুটি ভয়াবহ সংঘাত হলো ‘ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ’ এবং ‘গাজা যুদ্ধ’। এ দুটি যুদ্ধ ভিন্ন অবস্থান ও ভূরাজনৈতিক কারণে নির্মমতার প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠেছে। তবে প্রথমটিতে তুলনামূলক সামরিক মানদণ্ডে ভারসাম্য থাকলেও দ্বিতীয়টিতে একতরফা হামলা, প্রাণঘাতী অস্ত্রের ঝনঝনানি সব হিসাব-নিকাশ পাল্টে দিচ্ছে। সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হচ্ছে, গাজা যুদ্ধে হতাহতের সংখ্যা কেন সাড়ে ১৯ মাস আগে শুরু হওয়া ইউক্রেন যুদ্ধের তুলনায় এত বেশি এবং গাজার বাসিন্দারা কেন নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে পারছেন না? অন্যদিকে ইউক্রেনীয়রা কীভাবে সরে যেতে পেরেছেন?
একবিংশ শতাব্দীর আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও মানবিক সংকটগুলো আমাদের সামনে আরেক প্রশ্ন তুলে ধরেছে। সব যুদ্ধ কি একইভাবে কাঁদায়? ইউক্রেন ও গাজার দুই যুদ্ধক্ষেত্রের চিত্র স্পষ্ট করে, বৈশ্বিক প্রতিক্রিয়া ও সহানুভূতির মানদণ্ড এক নয়। একদিকে ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে মানবাধিকার, গণতন্ত্র ও আঞ্চলিক সার্বভৌমত্বের প্রতি সহানুভূতির জোয়ার; অন্যদিকে গাজার নারকীয় হত্যাযজ্ঞ যেন নিছক ‘নিরাপত্তা ইস্যু’ হিসেবে মূল্যায়িত।
তুলনামূলক যুদ্ধ দুটি পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, প্রাণহানির পরিসংখ্যানে গাজার বেসামরিক নাগরিক হতাহতের সংখ্যা ইউক্রেনের তুলনায় অনেক বেশি। অবরুদ্ধ ভূখণ্ডটির নারী ও শিশুরাই এর প্রধান শিকার। ইউনিসেফসহ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, গাজায় নিহতের অর্ধেকেরও বেশি সংখ্যক শিশু। পক্ষান্তরে ইউক্রেনে সামরিক-বেসামরিক হতাহতের অনুপাত তুলনামূলক ভারসাম্যপূর্ণ। ইউক্রেনের অধিকাংশ এলাকায় বেসামরিক হতাহতের হার তুলনামূলক কম। কারণ সেখান থেকে মানুষকে আগাম সরানো গেছে। ইউরোপীয় দেশগুলো ইউক্রেনীয় উদ্বাস্তুদের সাদরে আশ্রয় দিয়েছে। অন্যদিকে গাজায় নিরাপদ আশ্রয়স্থল বলে কিছু নেই। শরণার্থী শিবির, হাসপাতাল, স্কুল– সব ধরনের স্থাপনাই প্রতিনিয়ত হামলার লক্ষ্যবস্তু। সীমান্ত, বিদ্যুৎ, পানি, ওষুধ সরবরাহ– সবকিছুর ওপরে ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণ ও নিষেধাজ্ঞা।
ইউক্রেন যুদ্ধের শুরুতেই লক্ষাধিক মানুষ পশ্চিম দিকে সরে যায়। পোল্যান্ড, হাঙ্গেরি, জার্মানিসহ বিভিন্ন দেশ সশ্রদ্ধ চিত্তে তাদের গ্রহণ করে। বিপরীতে গাজা একটি ‘ওপেন এয়ার প্রিজন’ বা উন্মুক্ত কারাগার হিসেবে পরিচিতি পায়, যা আকাশ, স্থল ও সমুদ্রপথে অবরুদ্ধ। এমনকি যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরও কোনো মানবিক করিডোর তৈরি হয়নি, যা দিয়ে নিরস্ত্র মানুষ নিরাপদ স্থানে চলে যেতে পারে।
ইউক্রেনে হামলার ঘটনায় পশ্চিমা বিশ্ব (ন্যাটো জোট, ইইউ জোট ও যুক্তরাষ্ট্র) একযোগে নিন্দা জানিয়েছে। বিপুল পরিমাণে সামরিক, অর্থনৈতিক ও মানবিক সহায়তা অব্যাহত রয়েছে কিয়েভের জন্য। ইউক্রেনের যোদ্ধাদের জাতীয় বীর হিসেবে তুলে ধরেছে অধিকাংশ গণমাধ্যম। অন্যদিকে গাজায় বর্বরোচিত হামলার ঘটনায় ইসরায়েলের
পক্ষে পশ্চিমা শক্তিধর দেশগুলোর স্পষ্ট সমর্থন ও মানবিক সহায়তা অব্যাহত রয়েছে। রাজনৈতিক বিবেচনায় পশ্চিমা গণমাধ্যমে গাজার জনগণকে হামাসের সঙ্গে মিলিয়ে প্রায়শ নিরাপত্তার ওপর হুমকি হিসেবে দেখানো হয়।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর শুরু হওয়া গাজা যুদ্ধে এখন পর্যন্ত প্রাণহানির সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে চললেও জাতিসংঘের হিসাবে ইউক্রেনে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ১০-১৫ হাজার মানুষ। প্রায় ৩৬৫ বর্গকিলোমিটার আয়তনের গাজা একটি সংকীর্ণ এবং বেষ্টিত উপকূলীয় ভূখণ্ড। উভয় সীমান্তজুড়ে কাঁটাতারের বেড়া, সেনাচৌকি এবং অবরোধ কার্যকর থাকায় বেসামরিক নাগরিকদের বাইরে যাওয়ার কোনো পথ নেই। সেই সঙ্গে আকাশ ও স্থলপথ উভয়ই নিয়ন্ত্রিত।
ইউক্রেনের নাগরিকদের জন্য হামলার এলাকা থেকে সরে যাওয়া অনেক সহজ ছিল। কিন্তু গাজার বাসিন্দারা আদতে উন্মুক্ত আকাশের নিচে আটকে পড়া বন্দির মতো। গাজার নারী-শিশুরা দখলদার ইসরায়েলের নির্বিচার বিমান হামলার মুখে সেখানেই থাকতে বাধ্য হচ্ছে। গাজা ছাড়তে হলে ভিসা, নিরাপদ করিডোর ও শাসকগোষ্ঠীর অনুমতিপত্র প্রয়োজন, যা তাদের পক্ষে পাওয়া প্রায় অসম্ভব। এতে বহির্বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে নিরুপায় ও অবরুদ্ধ এক জনগোষ্ঠীতে পরিণত হয় গাজাবাসী।
অপরদিকে ইউক্রেনীয়দের রাজনৈতিক অভিভাবক প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি শিশু ও নারীদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করেননি। প্রতিপক্ষের ওপর মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায় চাপানোর হীনচেষ্টা করেননি রাজনীতিতে অনেকটা অপরিপক্ব এই জেলেনস্কি। কিয়েভ সরকার ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন যৌথভাবে ইউক্রেনীয় নারী-শিশুদের নিরাপত্তার সঙ্গে সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করে।
গাজার হত্যাযজ্ঞ ও ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যে মৌলিক পার্থক্য হলো সাধারণ জনগণের সরে যাওয়ার অধিকার এবং যুদ্ধাস্ত্রের ধরনে। ইউক্রেনের নাগরিকদের যেমন একটি রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক কাঠামোর সহায়তা ছিল, গাজার মানুষের জন্য তেমন কোনো অবকাশ ছিল না। গাজা এখন সম্পূর্ণ ঘেরাওকৃত মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে, যেখানে মানুষ শুধু আকাশপথে বোমা হামলায় নয় বরং মুসলিম বিশ্বের একাংশ এবং পশ্চিমাদের নীরবতাতেও প্রতিনিয়ত ক্ষতবিক্ষত হচ্ছে।
মোশফেকুর রহমান: সংবাদকর্মী
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইউক র ন য দ ধ ইউক র ন র ইউক র ন য় র জন ত ন র পদ
এছাড়াও পড়ুন:
প্রতিদিন কেন মৃত্যুকে স্মরণ করতে হবে
মৃত্যু জীবনের একটি অবশ্যম্ভাবী সত্য, যা প্রত্যেকটি মানুষের জন্য নির্ধারিত। ইসলামে মৃত্যুকে ভয়ের বিষয় হিসেবে নয়; বরং আল্লাহর দিকে ফিরে যাওয়ার একটি স্বাভাবিক ধাপ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘প্রত্যেক প্রাণী মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৮৫)
মৃত্যুর স্মরণ মুসলিমদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ আধ্যাত্মিক অনুশীলন, যা জীবনের উদ্দেশ্যকে স্মরণ করিয়ে দেয় এবং আমাদের পার্থিব লোভ-লালসা থেকে দূরে রাখে।
মৃত্যু: মুমিনের জন্য স্বস্তিপৃথিবী একটি পরীক্ষার ক্ষেত্র, যেখানে মানুষ নানা দুঃখ-কষ্ট, অভাব, প্রিয়জনের মৃত্যু, দারিদ্র্য ও অন্যান্য চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়। মুসলিমদের জন্য এ পরীক্ষা হলো আল্লাহর নির্দেশ মেনে চলার মাধ্যমে জীবন যাপন করা।
কোরআনে বলা হয়েছে, ‘(আল্লাহ) যিনি মৃত্যু ও জীবন সৃষ্টি করেছেন, যাতে তিনি তোমাদের পরীক্ষা করেন, তোমাদের মধ্যে কে উত্তম কাজ করে।’ (সুরা মুলক, আয়াত: ২)
আনন্দের ধ্বংসকারীকে (মৃত্যুকে) বেশি বেশি স্মরণ করো। তিরমিজি, হাদিস: ২৩০৭মৃত্যু মুমিনের জন্য একটি স্বস্তি। এটি পার্থিব পরীক্ষা ও কষ্ট থেকে মুক্তি দেয় এবং আল্লাহর রহমতের আলিঙ্গনে নিয়ে যায়। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘মুমিন মৃত্যুর মাধ্যমে স্বস্তি পায়।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬৫০৭)।
এমনকি নবীজি (সা.)-এর জীবনেও এ সত্য প্রতিফলিত হয়েছে। তাঁর মৃত্যুর সময় মৃত্যুর ফেরেশতা আল্লাহর পক্ষ থেকে তাঁকে মৃত্যু বিলম্বিত করার সুযোগ দিয়েছিলেন, কিন্তু তিনি আল্লাহর কাছে ফিরে যাওয়ার পথ বেছে নিয়েছিলেন।
আরও পড়ুনমৃত্যু থেকে পালানোর পথ নেই১৮ মার্চ ২০২৫মৃত্যুকে স্মরণ করার গুরুত্বমৃত্যু স্মরণ একটি গভীর আধ্যাত্মিক অনুশীলন। যখন আমরা কোনো প্রিয়জনের মৃত্যু দেখি, তখন পার্থিব বিষয়গুলো তুচ্ছ মনে হয়। আমরা আমাদের জীবনের উদ্দেশ্য নিয়ে পুনর্বিবেচনা করি।
নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘হৃদয় মরিচার মতো মলিন হয়।’ লোকেরা জিজ্ঞাসা করল, ‘কীভাবে তা পরিষ্কার করা যায়?’ তিনি বললেন, ‘মৃত্যু স্মরণ ও কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে।’ (নাহজুল ফাসাহা)।
এ ছাড়া তিনি বলেছেন, ‘আনন্দের ধ্বংসকারীকে (মৃত্যুকে) বেশি বেশি স্মরণ করো।’ (তিরমিজি, হাদিস: ২৩০৭)
হজরত আলী (রা) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি প্রায়ই মৃত্যুকে স্মরণ করে, সে অল্প সম্পদেও সন্তুষ্ট থাকে। সে কখনো লোভী বা কৃপণ হয় না।’ (বিহারুল আনওয়ার)
মৃত্যুর জন্য কী কামনা করা যায়ইসলামে আত্মহত্যা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। তাই কোনো বিপদ বা কষ্টের কারণে মৃত্যুর জন্য প্রার্থনা করা অনুমোদিত নয়। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ যেন বিপদের কারণে মৃত্যু কামনা না করে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬৩৫১)।
তবে শহীদ হওয়ার জন্য দোয়া করা, অর্থাৎ আল্লাহর পথে মৃত্যুবরণের জন্য প্রার্থনা করা ইসলামে অনুমোদিত।
ইসলামের দৃষ্টিকোণে মৃত্যু জীবনের সমাপ্তি নয়; বরং এটি পার্থিব জীবন থেকে চিরস্থায়ী জীবনের দিকে একটি সেতু। মৃত্যু মুমিনের জন্য এটি আল্লাহর সঙ্গে মিলিত হওয়ার একটি সুযোগ।মৃত্যুই শেষ কথা নয়ইসলামের দৃষ্টিকোণে মৃত্যু জীবনের সমাপ্তি নয়; বরং এটি পার্থিব জীবন থেকে চিরস্থায়ী জীবনের দিকে একটি সেতু। এটি ভয় বা দুঃখের বিষয় হলেও মুমিনের জন্য এটি আল্লাহর সঙ্গে মিলিত হওয়ার একটি সুযোগ। মৃত্যু স্মরণ ও এর জন্য প্রস্তুতি আমাদের জীবনকে আরও অর্থবহ করে।
বিপদে পড়লে মৃত্যু স্মরণের দোয়া আমাদের ধৈর্য ধরতে এবং আল্লাহর ওপর ভরসা রাখতে সাহায্য করে। কোরআনে বলা হয়েছে, ‘যারা বিপদে পড়ে বলে, ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন (আমরা আল্লাহর জন্য এবং তাঁর দিকেই ফিরে যাব।)’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৫৬)
এ আয়াত মৃত্যুর সংবাদ শোনার সময়ও পাঠ করা হয়। এটি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে বিপদ আল্লাহর পক্ষ থেকে আসে এবং তিনি আমাদের সামর্থ্যের বাইরে পরীক্ষা দেন না। (সুরা বাকারা, আয়াত: ২৮৬)।
প্রতিটি বিপদের মধ্যে আমাদের জন্য কল্যাণ নিহিত রয়েছে। এ বিপদ ক্ষণস্থায়ী। কারণ, আমরা আল্লাহর কাছে ফিরে যাব।
আরও পড়ুনসন্তান জন্মের আগে মৃত্যু কামনা করেন নবীর মা৩১ মে ২০২৫কয়েকটি দোয়ামৃত্যু ভাবাপন্ন বিপদ হলে: কঠিন বিপদের সময় পাঠ করা যায়, তা হলো নবীজি (সা.)-এর শেখানো: ‘হে আল্লাহ, যতক্ষণ জীবন আমার জন্য কল্যাণকর, ততক্ষণ আমাকে জীবিত রাখো এবং যখন মৃত্যু আমার জন্য উত্তম, তখন আমাকে মৃত্যু দাও।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬৩৫১)
মৃত্যু নিকটবর্তী হলে: মৃত্যুর সময় শুধু আল্লাহই জানেন। তবে আমরা বা আমাদের প্রিয়জন মৃত্যুর কাছাকাছি থাকি এবং ভয় বা উদ্বেগ অনুভব করি, তবে এই দোয়া পাঠ করা যায়: ‘হে আল্লাহ, মৃত্যুর যন্ত্রণা ও কষ্ট থেকে আমাকে সাহায্য করো।’ (তিরমিজি, হাদিস: ৯৭৮)।
নবীজি (সা.) নিজেও তাঁর মৃত্যুর সময় এই দোয়া পাঠ করেছিলেন।
হে আল্লাহ, যতক্ষণ জীবন আমার জন্য কল্যাণকর, ততক্ষণ আমাকে জীবিত রাখো এবং যখন মৃত্যু আমার জন্য উত্তম, তখন আমাকে মৃত্যু দাও।সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬৩৫১সহজ মৃত্যুর জন্য দোয়া: নবীজি (সা.) একটি দীর্ঘ দোয়ার শেষে বলেছেন, ‘এবং আমার মৃত্যুকে আমার জন্য স্বস্তির উৎস করো, যা আমাকে সব অনিষ্ট থেকে রক্ষা করবে।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২৬৮৮)
এখানে সহজ মৃত্যু বলতে পার্থিব অর্থে আরামদায়ক মৃত্যু (যেমন ঘুমের মধ্যে মৃত্যু) বোঝায় না; বরং এটি বোঝায় মৃত্যুর ফেরেশতার আগমন থেকে শুরু করে পরকালে স্থানান্তর পর্যন্ত একটি সহজ প্রক্রিয়া।
মৃত্যুর কঠিন পরীক্ষা থেকে আশ্রয়: একটি দোয়ায় নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘হে আল্লাহ, আমি তোমার কাছে অলসতা, বার্ধক্য, কাপুরুষতা, অক্ষমতা এবং জীবন ও মৃত্যুর পরীক্ষা থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করি।’ (সুনানে নাসাঈ, হাদিস: ৫৪৯১)
মৃত্যুর সময় শয়তান থেকে বাঁচতে: নবীজি (সা.) এ–সময় দোয়া করেছেন, ‘আমি তোমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করি যেন শয়তান আমার মৃত্যুর সময় আমাকে ক্ষতি করতে না পারে।’ (আবু দাউদ, হাদিস: ১৫৫২)
ইসলামে মৃত্যুকে ভয়ের বিষয় হিসেবে নয়; বরং আল্লাহর সঙ্গে পুনর্মিলনের একটি সুযোগ হিসেবে দেখা হয়। নিয়মিত মৃত্যু স্মরণ আমাদের জীবনের উদ্দেশ্যকে স্মরণ করিয়ে দেয়, লোভ-লালসা থেকে দূরে রাখে এবং আমাদের ভালো কাজের পথে রাখে।
আরও পড়ুনমৃত্যু কি শেষ, মৃত্যু আসলে কী৩১ জুলাই ২০২৩