২২ বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশগ্রহণে পাবিপ্রবিতে ব্যবসা-প্রযুক্তি সম্মেলন
Published: 16th, April 2025 GMT
দেশের ২২টি সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশগ্রহণে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পাবিপ্রবি) প্রথমবারের মতো ‘ব্যবসা বিষয়ক উদ্ভাবন, প্রযুক্তি ও টেকসই উন্নয়ন’ বিষয়ক জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) পাবিপ্রবির ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের উদ্যোগে ‘ব্যবসায়িক উদ্ভাবন ও প্রযুক্তির মাধ্যমে টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জন’ প্রতিপাদ্যে দিনব্যাপী এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
উদ্যোক্তা বিকাশে প্রযুক্তি নির্ভর ধারণা ছড়িয়ে দিতে এবং টেকসই ব্যবসায়িক মডেলের সম্ভাবনা অন্বেষণে এ আয়োজন বিশেষ তাৎপর্য বহন করবে বলে জানান আয়োজকরা।
সম্মেলনে জমা পড়া ৪০টি গবেষণাপত্রের মধ্য থেকে বাছাই করা হয়েছে ২৭টি প্রবন্ধ। এগুলো উপস্থাপন করা হয় হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তি, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স, ব্যবস্থাপনা-১, ব্যবস্থাপনা-২, মার্কেটিং ও পর্যটন- এ পাঁচটি ট্র্যাকে।
ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো.
সম্মেলনে মূল বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. নূর উন নবী। শিল্প খাতের বাস্তব অভিজ্ঞতা তুলে ধরতে ‘বিজনেস ব্রিলিয়ান্স’ সেগমেন্টে বক্তব্য দেন প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবুল কালাম আজাদ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. এস এম আব্দুল আওয়াল বলেন, “আমি উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান ও শিক্ষার্থীদের গবেষণা উন্নয়নের লক্ষ্যে জাতীয় সম্মেলন করার পরিকল্পনা করি। এরই অংশ হিসেবে আজ ব্যবসা শিক্ষা অনুষদ সম্মেলনের আয়োজন করে। পর্যায়ক্রমে মানবিক, প্রকৌশলী, বিজ্ঞান অনুষদে এই কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হবে। আমার বিশ্বাস, এই সেশনগুলো শিক্ষার্থীদের জ্ঞান আরোহনের সুযোগ ও নতুন উদ্ভাবনী চিন্তা বাড়াতে সহায়ক হবে।”
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “অর্থ কোন বিষয় নয়, বিষয় হলো উদ্ভাবনী আইডিয়া। ইফেক্টিভ সব আইডিয়া জেনারেট করতে পারলে সফল হওয়া সম্ভব। একটু তাকালেই খুলনার আকিজ উদ্দিনকে দেখো, যার জন্ম খুলনার ফুলতলায়। ব্রিটিশ আমলে সে কলকাতায় চলে যায় চাকরি খুঁজতে। মাত্র ১৬ টাকা নিয়ে সেখানে গিয়ে থাকার কোন জায়গা না পেয়ে শিয়ালদা স্টেশনে থাকতে শুরু করে।”
তিনি আরো বলেন, “আকিজ সাহেব দিনে মাত্র ছয় আনার ছাতু খেয়ে দিন পার করতেন। এভাবেই আস্তে আস্তে ছয় আনার একটা ভ্যারাইটিজ দোকান খুলে বসেন, যেখানে সকল পণ্যের মুল্য ছয় আনা। নাইনটি নাইন শপের মতো তুমুল জনপ্রিয় হয়ে ওঠে আকিজ সাহেবের ছয় আনার দোকান। এভাবে যদি নতুন নতুন আইডিয়া জেনারেট করা যায়, তাহলেই অর্থ কোন ফ্যাক্টর নয়।”
উপাচার্য বলেন, “রাজনৈতিক গতিশীলতা বদলে গেছে। প্রথাগত রাজনীতি ভবিষ্যতে আর কার্যকর হবে না। ভবিষ্যতের রাজনীতি হবে অর্থনীতিকে কেন্দ্র করে। তোমাদের অর্থনৈতিক অবস্থান যত শক্তিশালী হবে, ততই তুমি দেশকে নেতৃত্ব দিতে পারবে। বিশ্বকে শাসন করতে পারবে।”
ঢাকা/আতিক/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপ চ র য প ব প রব ব যবস য়
এছাড়াও পড়ুন:
চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা
‘চাকরি খেয়ে ফেলব, দেখে নেব তোমাকে, চেন আমি কে?’ কারবন্দী কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজু (৪৯) মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ২ কারারক্ষীকে এভাবে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে দেখতে যান তার কয়েকজন স্বজন। কারা নিয়মানুযায়ী সাক্ষাৎ কক্ষে বেঁধে দেওয়া সময়ে কথা শেষ করার কথা থাকলেও তিনি তার মানতে রাজি নন। তিনি দীর্ঘ সময় কথা বলতে চাইলে সাক্ষাৎ কক্ষে দায়িত্বরত মহিলা কারারক্ষী পপি রানী কারাবন্দী নেতার স্বজনদের সময়ের মধ্যে কথা শেষ করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু। তখন তিনি বলেন, ‘এই আপনি কে? ডিস্টার্ব করছেন কেন? চিনেন আমাকে? চাকরি খেয়ে ফেলব।’
এ সময় সাক্ষাৎ কক্ষে সাজুর স্বজনরাও পপি রানীর সঙ্গেও আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। পপি রানীকে নিরাপদ করতে সুমন নামের আরেকজন কারারক্ষী এগিয়ে এলে তাকে লাথি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন সাজু। উত্তেজনার একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হন প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি সাজুর স্বজনদের সাক্ষাৎ কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। তারাও চলে যাওয়ার সময়ে কারারক্ষীদের গালিগালাজ করেন।
এ ব্যাপারে কারারক্ষী পপি রানী বলেন, ‘আমি ডিউটিরত অবস্থায় তিনি আমাকে প্রভাব দেখিয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন। আমি জেলার স্যারের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।’
প্রত্যক্ষদর্শী কারারক্ষী মো. সুমন বলেন, ‘আমরা তো ছোট পদে চাকরি করি, আমাদের নানান নির্যাতন সহ্য করতে হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আর কিছু বলতে পারব না।’
প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাক্ষাৎ কক্ষের ভেতরে পুলিশ সদস্যকে গালিগালাজ করা হয়। পরে আমি গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার এ জি মো. মামুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। বন্দীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও আমরা মানবিকতা প্রদর্শন করি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করলে জেলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রংপুর শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।