ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা আনতে ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। এ ছাড়া গ্রামীণ ব্যাংক, সরকারি হিসাব নিরীক্ষা এবং রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশের খসড়াও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ ব্যাংক ও আর্থিক খাতের মোট চারটি অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে এ সভা হয়। পরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ ব্রিফিংয়ে বৈঠকের সিদ্ধান্ত তুলে ধরেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ সময় প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, সরকারি হিসাব নিরীক্ষা অধ্যাদেশের উদ্দেশ্যে হচ্ছে আন্তর্জাতিক নিরীক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক কিছু মানদণ্ড আছে। সেই মানদণ্ড যেন বাংলাদেশেও মেনে চলা হয়, সেটি নিশ্চিত করা; যাতে সরকারি অর্থের সঠিক ব্যয় নিশ্চিত করা যায়।

ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশের বিষয়ে রিজওয়ানা হাসান বলেন, একটি শিল্পগোষ্ঠী কয়েকটি ব্যাংকের ওপর একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে কত টাকা এ দেশ থেকে সরিয়ে নিয়েছে। ভবিষ্যতে যাতে এটি আর না হতে পারে, সে জন্য ব্যাংকিং ও করপোরেট খাতে শৃঙ্খলা ও জবাবদিহি আনার জন্য এবং আমানতকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সরকার আমানতকারীদের স্বার্থ সুরক্ষায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে।

রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশটি জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে করা হয়েছে বলে জানান উপদেষ্টা রিজওয়ানা। তিনি বলেন, রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনার কাজকে আলাদা করা হচ্ছে।

গ্রামীণ ব্যাংকে সরকারের মালিকানা কমানোর সিদ্ধান্ত

গ্রামীণ ব্যাংক সংশোধন অধ্যাদেশের বিষয়ে পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, আগে গ্রামীণ ব্যাংক যখন কাজ করত, তখন একটি মূল্যবোধ নিয়ে কাজ করত। সেই মূল্যবোধটি হলো, যাঁরা গ্রামীণ ব্যাংকের সুবিধাভোগী তাঁদেরই গুরুত্ব থাকবে এই ব্যাংক পরিচালনার ক্ষেত্রে। কিন্তু বিগত সময়ে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ও বর্তমান প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে রাজনৈতিকভাবে টার্গেট করা হয়েছিল। তখন তাঁর দর্শন থেকে সরে সরকারি নিয়ন্ত্রণ অনেকাংশ নেওয়া হয়। আজ যে অধ্যাদেশ সংশোধন করা হলো তাতে আগে শুধু গ্রামীণ ব্যাংক কেবল ভূমিহীনদের জন্য কাজ করত। এখন বিত্তহীনদের নিয়েও কাজ করবে। আর পরিচালনা বোর্ডের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, যারা গ্রামীণ ব্যাংকের সুবিধাভোগী তাঁদের মধ্যে ৯ জন নির্বাচিত হয়ে আসবেন। এরপর এই ৯ জনের মধ্যে থেকে ৩ জন মনোনীত হবেন। তাঁদের মধ্যে একজন চেয়ারম্যান নিযুক্ত হবেন।

পরিশোধিত মূলধন আগে সরকারের ছিল ২৫ শতাংশ এবং যাঁরা সুবিধাভোগী তাঁদের ছিল ৭৫ শতাংশ। এখন সরকারের থাকবে ১০ শতাংশ এবং সুবিধাভোগীদের ৯০ শতাংশ। এ ছাড়া গ্রামীণ ব্যাংককে জনস্বার্থ সংস্থা হিসেবে বিবেচনা করার বিধান আনা হয়েছে বলে জানান রিজওয়ানা হাসান।

অর্থনৈতিক অপরাধের বিষয়ে কমিটি হচ্ছে

রিজওয়ানা হাসান বলেন, এই অধ্যাদেশগুলো অনুমোদনের আলোচনায় সিদ্ধান্ত হয়, যেসব গোষ্ঠী অর্থনৈতিক অপরাধ (ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইম) করেছে, তাদের বিষয়ে তদন্ত ও বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করার জন্য একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

উপদেষ্টা আরও বলেন, অভিন্ন জলরাশির পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে দুটি আইন রয়েছে। এর একটিতে বাংলাদেশ অনুস্বাক্ষরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

আরও পড়ুনটেলিফোন-খুদে বার্তায়ও সমন জারি, ভুয়া মামলার শাস্তি বাড়ছে২ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরক র র র জওয় ন র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

বাংলাদেশ ক্রিকেটের সমস্যা কী, সমাধান কোথায়: শুনুন তামিমের মুখে

এই মুহূর্তে বাংলাদেশ ক্রিকেটে সবচেয়ে বড় সমস্যা কী? কোন বিষয়টি সবার আগে সমাধান করা উচিত?

দুটি প্রশ্নের উত্তরে অনেকেই অনেক কথাই বলবেন। বাংলাদেশ ক্রিকেটের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত কারও বিষয়টি ভালো জানার কথা। যেমন তামিম ইকবাল। প্রথম আলোর প্রধান ক্রীড়া সম্পাদক উৎপল শুভ্র তামিমের সামনে দুটি প্রশ্ন রেখেছিলেন। তামিমের উত্তর, ‘আমার কাছে মনে হয় যে আমাদের ফ্যাসিলিটিজ (অনুশীলনের পর্যাপ্ত সুযোগ–সুবিধা) নাই।’

প্রথম আলোর কার্যালয়ে উৎপল শুভ্রকে দেওয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে আড্ডার মেজাজে তামিম বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে অনেক কথাই বলেছেন। নিজের ক্যারিয়ার, ভবিষ্যৎ লক্ষ্য—এসব নিয়েও বেশ খোলামেলা কথা বলেন সাবেক এই ওপেনার।

আলাপচারিতার একপর্যায়েই বাংলাদেশ ক্রিকেটে এ মুহূর্তের সমস্যার প্রসঙ্গ উঠেছিল। অনুশীলনের পর্যাপ্ত সুযোগ–সুবিধার অভাবকে সামনে টেনে এনে তামিম বলেছেন, ‘একটা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট দলের যে ফ্যাসিলিটিজ দরকার হয় কিংবা বাংলাদেশের মতো দেশে সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলার একটি (ক্রিকেট), যে ফ্যাসিলিটিজ থাকা উচিত, তার আশপাশেও নেই। পৃথিবীর তৃতীয়, চতুর্থ ধনী বোর্ডের যে ফ্যাসিলিটিজ থাকা উচিত, আমরা এর আশপাশেও নেই।’

তামিম বিষয়টি ভালোভাবে ব্যাখ্যা করলেন, ‘ক্রিকেট দলের প্রতি ভক্তদের যে প্রত্যাশা, সেটা পূরণের জন্য যে ফ্যাসিলিটিজ দরকার, আমরা তার আশপাশেও নেই। আপনি মাঝারি মানের ক্রিকেটার হতে পারেন কিংবা মাঝারি মানের ব্যাটসম্যান হতে পারেন, সঠিক অনুশীলনের মাধ্যমে কিন্তু আপনি মাঝারি মান থেকে দুই ধাপ ওপরে উঠতে পারবেন।’

মুশফিকুর রহিম

সম্পর্কিত নিবন্ধ