গ্রামীণ ব্যাংকসহ আর্থিক খাতের জন্য চার অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন
Published: 17th, April 2025 GMT
ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা আনতে ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। এ ছাড়া গ্রামীণ ব্যাংক, সরকারি হিসাব নিরীক্ষা এবং রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশের খসড়াও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ ব্যাংক ও আর্থিক খাতের মোট চারটি অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে এ সভা হয়। পরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ ব্রিফিংয়ে বৈঠকের সিদ্ধান্ত তুলে ধরেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ সময় প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, সরকারি হিসাব নিরীক্ষা অধ্যাদেশের উদ্দেশ্যে হচ্ছে আন্তর্জাতিক নিরীক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক কিছু মানদণ্ড আছে। সেই মানদণ্ড যেন বাংলাদেশেও মেনে চলা হয়, সেটি নিশ্চিত করা; যাতে সরকারি অর্থের সঠিক ব্যয় নিশ্চিত করা যায়।
ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশের বিষয়ে রিজওয়ানা হাসান বলেন, একটি শিল্পগোষ্ঠী কয়েকটি ব্যাংকের ওপর একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে কত টাকা এ দেশ থেকে সরিয়ে নিয়েছে। ভবিষ্যতে যাতে এটি আর না হতে পারে, সে জন্য ব্যাংকিং ও করপোরেট খাতে শৃঙ্খলা ও জবাবদিহি আনার জন্য এবং আমানতকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সরকার আমানতকারীদের স্বার্থ সুরক্ষায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে।
রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশটি জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে করা হয়েছে বলে জানান উপদেষ্টা রিজওয়ানা। তিনি বলেন, রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনার কাজকে আলাদা করা হচ্ছে।
গ্রামীণ ব্যাংকে সরকারের মালিকানা কমানোর সিদ্ধান্ত
গ্রামীণ ব্যাংক সংশোধন অধ্যাদেশের বিষয়ে পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, আগে গ্রামীণ ব্যাংক যখন কাজ করত, তখন একটি মূল্যবোধ নিয়ে কাজ করত। সেই মূল্যবোধটি হলো, যাঁরা গ্রামীণ ব্যাংকের সুবিধাভোগী তাঁদেরই গুরুত্ব থাকবে এই ব্যাংক পরিচালনার ক্ষেত্রে। কিন্তু বিগত সময়ে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ও বর্তমান প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে রাজনৈতিকভাবে টার্গেট করা হয়েছিল। তখন তাঁর দর্শন থেকে সরে সরকারি নিয়ন্ত্রণ অনেকাংশ নেওয়া হয়। আজ যে অধ্যাদেশ সংশোধন করা হলো তাতে আগে শুধু গ্রামীণ ব্যাংক কেবল ভূমিহীনদের জন্য কাজ করত। এখন বিত্তহীনদের নিয়েও কাজ করবে। আর পরিচালনা বোর্ডের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, যারা গ্রামীণ ব্যাংকের সুবিধাভোগী তাঁদের মধ্যে ৯ জন নির্বাচিত হয়ে আসবেন। এরপর এই ৯ জনের মধ্যে থেকে ৩ জন মনোনীত হবেন। তাঁদের মধ্যে একজন চেয়ারম্যান নিযুক্ত হবেন।
পরিশোধিত মূলধন আগে সরকারের ছিল ২৫ শতাংশ এবং যাঁরা সুবিধাভোগী তাঁদের ছিল ৭৫ শতাংশ। এখন সরকারের থাকবে ১০ শতাংশ এবং সুবিধাভোগীদের ৯০ শতাংশ। এ ছাড়া গ্রামীণ ব্যাংককে জনস্বার্থ সংস্থা হিসেবে বিবেচনা করার বিধান আনা হয়েছে বলে জানান রিজওয়ানা হাসান।
অর্থনৈতিক অপরাধের বিষয়ে কমিটি হচ্ছে
রিজওয়ানা হাসান বলেন, এই অধ্যাদেশগুলো অনুমোদনের আলোচনায় সিদ্ধান্ত হয়, যেসব গোষ্ঠী অর্থনৈতিক অপরাধ (ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইম) করেছে, তাদের বিষয়ে তদন্ত ও বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করার জন্য একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
উপদেষ্টা আরও বলেন, অভিন্ন জলরাশির পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে দুটি আইন রয়েছে। এর একটিতে বাংলাদেশ অনুস্বাক্ষরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আরও পড়ুনটেলিফোন-খুদে বার্তায়ও সমন জারি, ভুয়া মামলার শাস্তি বাড়ছে২ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সরক র র র জওয় ন র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
অফিসে আপনি কি ১১ ঘণ্টার বেশি কাজ করেন
প্ল্যান ওয়ান জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা নিয়ে চলছে আলোচনা। সেখানে দুই হাজার ফুলটাইম কর্মজীবীর ওপর একটা জরিপ পরিচালনা করা হয়। পেশাগত কাজ বা চাপের সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যের সম্পর্ক নিয়ে পরিচালিত গবেষণাটি থেকে পাওয়া গেছে চমকপ্রদ তথ্য।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, যাঁরা কর্মক্ষেত্রে ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি কাজ করেন, তাঁদের খাদ্যাভ্যাস তুলনামূলকভাবে অস্বাস্থ্যকর, তাঁরা অন্যদের তুলনায় মানসিক চাপে ভোগেন বেশি। ঠিকমতো পানি খাওয়ার প্রবণতা কম। পরিবার, প্রকৃতি ও পোষা প্রাণীর সঙ্গে সময় কাটানোর প্রবণতাও কম। কম ঘুমান। আর যেকোনো মানসিক আঘাত থেকে সেরে ওঠার পর্যাপ্ত সময় বা সুযোগ পান না। এই মানুষেরাই বেশি হতাশায় ভোগেন।
শুধু তা-ই নয়, দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়া এবং হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকের মতো কার্ডিওভাস্কুলার রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বেশি। যাঁরা ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় অফিস করেন, তাঁদের মধ্যে কর্মক্ষেত্রে অসুস্থ হয়ে যাওয়ার সংখ্যাও অনেক।
আরও পড়ুন২৫ বছর ধরে অফিসে যাননি তিনি১৩ মার্চ ২০২৫যদি ১১ ঘণ্টা কর্মক্ষেত্রে থাকতেই হয়, তাহলে যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেনরাতে ৮ ঘণ্টা ঘুমাতেই হবে। তাতে শরীর ও মস্তিষ্ক দিনের শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রমের ধকল কাটিয়ে ওঠার সুযোগ পাবে।
কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিরতি নিন। সবুজের দিকে তাকান। ডেস্কে গাছ রাখতে পারেন। উঠে একটু হাঁটুন। ব্যায়াম করুন। সহকর্মীর সঙ্গে চা খেতে খেতে গল্প করুন। গবেষণা জানাচ্ছে, ছোট ছোট বিরতি কাজে মনোযোগ পুনঃস্থাপন করতে সাহায্য করে এবং কাজের গুণমান বাড়ায়।
দুপুরে খাওয়ার পর একটা ন্যাপ নিতে পারেন।
২ লিটারের একটা বোতলে পানি রাখবেন। প্রতিদিন ১ বোতল পানি অবশ্যই শেষ করবেন। তা ছাড়া পানি, শরবত, জুস, ডাবের পানি, তরমুজ, শসা, আনারস ইত্যাদি খাবেন। হাইড্রেটেড থাকলে এনার্জি ধরে রেখে কাজ করা সহজ হয়।
প্রক্রিয়াজাত খাবার, কার্বোনেটেড ড্রিংক, চিনিযুক্ত খাবার বাদ দিন। এসব কেবল আপনার ক্লান্তি বাড়াবে।
আর সম্ভব হলে কর্মক্ষেত্রে কথা বলে আপনার কর্মঘণ্টা ৮ ঘণ্টায় নিয়ে আসতে পারলে তো কথাই নেই।
সূত্র: এনবিসি নিউজ
আরও পড়ুনঅফিসের বাড়তি কাজকে যেভাবে ‘না’ বলবেন১৩ মার্চ ২০২৫