১৯৯২ সালের ঘটনা। তখন ডোনাল্ড ট্রাম্পের নামের আগে ‘মার্কিন প্রেসিডেন্ট’ যুক্ত হয়নি। তিনি ছিলেন কেবলই একজন মার্কিন ব্যবসায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের প্লাজা হোটেলের মালিক। সে সময় ‘হোম অ্যালোন টু: লস্ট ইন নিউইয়র্ক’–এ অতিথি চরিত্রে অভিনয় করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

তিন দশকেরও বেশি পুরোনো দৃশ্যটি আবারও আলোচনায় এসেছে। অনেকে সিরিজটি থেকে সাত সেকেন্ডের দৃশ্যটি ফেলে দেওয়ার দাবি তুলেছেন। বিষয়টি নিয়ে বেশ বেকায়দায় পড়েছেন নির্মাতা ক্রিস কলম্বাস। সান ফ্রান্সিসকো ক্রনিকলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, তিনিও চান, দৃশ্যটি বাদ দেওয়া হোক।

এর পরিণতি নিয়েও ওয়াকিবহাল ক্রিস কলম্বাস। মজার ছলে বলেন, ‘আমি দৃশ্যটি কর্তন করতে পারব না। যদি কর্তন করি তাহলে সম্ভবত দেশ থেকে বের করে দেওয়া হবে। হয়তো আমাকে ইতালি কিংবা অন্য কোথাও যেতে হবে।’

কী আছে সেই দৃশ্যে

নিউইয়র্কের প্লাজা হোটেলের সামনে ছবির একটা বড় অংশের শুটিং হয়েছে প্লাজা হোটেলে। আর সেখানে একটি দৃশ্যে দেখা গেছে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। ছবিতে তিনি নিজের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন।

ছবিতে দেখা গেছে, বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট তখন মূল চরিত্র কেভিনকে প্লাজা হোটেলের লবির দিকে পথ চিনিয়ে নিয়ে গেছেন। ২০১৯ সালে এক ভাষণে ট্রাম্প বলেন, ‘হোম অ্যালোন টু’ ছবিতে তাঁকে যেভাবে দেখা গেছে, তাতে তিনি অত্যন্ত গর্বিত।
ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘তখন আমি তরুণ ছিলাম। আর ছবিটা অভাবনীয় হিট হয়। এখনো বড়দিনের সবচেয়ে সফল ছবিগুলোর একটি (হোম অ্যালোন টু)। এই ছবির সঙ্গে আমার সংশ্লিষ্টতা আমার জন্য অত্যন্ত গর্বের।’

এই ছবির মূল চরিত্র কেভিন নামের এক শিশু। বড় পর্দায় সেই চরিত্রকে রূপ দেন ম্যাকলি কালকিন। সে মা-বাবাকে হারিয়ে ফেলে। তারপর হন্যে হয়ে খুঁজতে থাকে হোটেলে। তখন সে ওভারকোট আর লাল টাই পরা এক ভদ্রলোককে জিজ্ঞেস করে, হোটেলের লবি কোথায়। তখন সেই মানুষটি কেভিনকে বলেন, ‘নিচে যাও, তারপর বাঁ দিকে।’ ছবির সেই লোকটা ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ক্রিস কলম্বাস পরিচালিত ‘হোম অ্যালোন টু’ ছবি বানাতে খরচ হয়েছে ২৩ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। আর ১৯৯২ সালের বড়দিন উপলক্ষে মুক্তির পর ছবিটি আয় করেছে প্রায় ৩০৫ কোটি টাকা।

আরও পড়ুনঅভিনয় করে অত্যন্ত গর্বিত: ডোনাল্ড ট্রাম্প২৬ ডিসেম্বর ২০১৯.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

সোনার টয়লেট ‘আমেরিকা’ নিলামে উঠছে, সর্বনিম্ন দর কত জানেন

নিলামঘর সদবিস গতকাল শুক্রবার ইতালীয় শিল্পী মরিজিও ক্যাটেলানের তৈরি সম্পূর্ণ সোনার টয়লেটটি নিলামে তোলার কথা ঘোষণা করেছে। এ ভাস্কর্যটির নাম ‘আমেরিকা’।

সদবিস জানিয়েছে, এ শিল্পকর্ম এটাই দেখাতে চায়, কখনো কখনো শিল্পের ‘মূল্য’ আর তার বাজারে বিক্রির ‘মূল্য’ এক নয়। এটি শুধু শিল্পকর্মই নয়, একটি পুরোপুরি ব্যবহারযোগ্য টয়লেটও। এ টয়লেটেরই অনুরূপ একটি সংস্করণ ২০১৯ সালে ইংল্যান্ডের বিখ্যাত ব্লেনহাইম প্রাসাদ থেকে চুরি হয়ে বিশ্বজুড়ে আলোচনায় আসে।

১৮ নভেম্বর নিউইয়র্কে এ নিলাম অনুষ্ঠিত হবে। টয়লেটটির সর্বনিম্ন দর ধরা হয়েছে এর সোনার বর্তমান বাজারমূল্য অনুযায়ী। এতে ব্যবহৃত হয়েছে প্রায় ১০১ দশমিক ২ কিলোগ্রাম (২২৩ পাউন্ড) খাঁটি সোনা, যার দাম এখন প্রায় ১০ মিলিয়ন (১ কোটি) মার্কিন ডলার (প্রায় ১২২ কোটি টাকা)।

সদবিসের নিউইয়র্ক শাখার সমসাময়িক শিল্প বিভাগের প্রধান ডেভিড গ্যালপারিন বলেন, ক্যাটেলান হচ্ছেন এমন একজন শিল্পী, যিনি তাঁর কাজের মাধ্যমে সবাইকে ভাবাতে ও চমক দিতে পছন্দ করেন।

ক্যাটেলান শুধু বিতর্ক সৃষ্টিকারীই নন; বরং অত্যন্ত সফল শিল্পী। তাঁর আরেকটি কাজ, ‘কমেডিয়ান’। অর্থাৎ দেয়ালে টেপ দিয়ে আটকানো একটি কলা। গত বছর নিউইয়র্কের এক নিলামে ৬২ লাখ ডলারে বিক্রি হয়েছিল শিল্পকর্মটি।

‘আমেরিকা’র দুটি সংস্করণ ২০১৬ সালে তৈরি করা হয়েছিল। যেটি এবার নিলামে উঠছে, সেটি ২০১৭ সাল থেকে এক অজ্ঞাত সংগ্রাহকের কাছে রয়েছে। অন্য সংস্করণটি ২০১৬ সালে নিউইয়র্কের গুগেনহাইম জাদুঘরের একটি বাথরুমে প্রদর্শনের জন্য স্থাপন করা হয়। সেখানে ১ লাখের বেশি দর্শক সার বেঁধে এসেছিলেন।

এর আগে ২০১৬ সালে ক্রিস্টিস নিলামে ক্যাটেলানের আরেকটি ভাস্কর্য ‘হিম’ ১ কোটি ৭২ লাখ ডলারে বিক্রি হয়। ভাস্কর্যটিতে নাৎসি নেতা অ্যাডলফ হিটলারকে হাঁটু গেড়ে প্রার্থনার ভঙ্গিতে দেখা যায়।

ক্যাটেলান নিজেই বলেছেন, তাঁর ‘আমেরিকা’ ভাস্কর্যটি অতিরিক্ত সম্পদ ও বিলাসিতাকে ব্যঙ্গ করে তৈরি করা হয়েছে। তিনি একবার বলেছিলেন, ‘তুমি ২০০ ডলারের দুপুরের খাবার খাও বা ২ ডলারের হটডগ, শেষ ফলাফল টয়লেটে গিয়ে একই হয়।’

‘আমেরিকা’র দুটি সংস্করণ ২০১৬ সালে তৈরি করা হয়েছিল। যেটি এবার নিলামে উঠছে, সেটি ২০১৭ সাল থেকে এক অজ্ঞাত সংগ্রাহকের কাছে রয়েছে। অন্য সংস্করণটি ২০১৬ সালে নিউইয়র্কের গুগেনহাইম জাদুঘরের একটি বাথরুমে প্রদর্শনের জন্য স্থাপন করা হয়। সেখানে ১ লাখের বেশি দর্শক সার বেঁধে এসেছিলেন।

মরিজিও ক্যাটেলান হচ্ছেন এমন একজন শিল্পী, যিনি তাঁর কাজের মাধ্যমে সবাইকে ভাবাতে ও চমক দিতে পছন্দ করেন।ডেভিড গ্যালপারিন, সদবিস-এর নিউইয়র্ক শাখার সমসাময়িক শিল্প বিভাগের প্রধান

ওই সময় গুগেনহাইম ভাস্কর্যটি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে তাঁর প্রথম দফায় ক্ষমতায় থাকাকালে ধার দেওয়ার প্রস্তাব দেয়। কারণ তিনি জাদুঘর থেকে একটি ভ্যান গঘ চিত্রকর্ম ধার নিতে চেয়েছিলেন।

২০১৯ সালে ‘আমেরিকা’ প্রদর্শিত হয় উইনস্টন চার্চিলের জন্মস্থান হিসেবে বিখ্যাত ব্লেনহাইম প্রাসাদে। কিন্তু প্রদর্শনীর কয়েক দিনের মধ্যেই একদল চোর ভবনে ঢুকে সেটি পাইপলাইন থেকে খুলে নিয়ে পালিয়ে যায়।

চলতি বছরের শুরুতে দুই ব্যক্তিকে ওই চুরির দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তবে সোনার টয়লেটটি আজও উদ্ধার করা যায়নি। তদন্তকারীরা ধারণা করছেন, এটি সম্ভবত ভেঙে গলিয়ে ফেলা হয়েছে।

গ্যালপারিন বলেন, তিনি অনুমান করতে চান না ‘আমেরিকা’ শেষ পর্যন্ত কত দামে বিক্রি হতে পারে। তবে তাঁর ভাষায়, ক্যাটেলানের ‘ডাকটেপে আটকানো কলা’ শিল্পকর্মটি যেমন ‘অমূল্য ধারণা থেকে মূল্য তৈরি করা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল, ‘আমেরিকা’ ঠিক তার উল্টো। এখানে মূল উপকরণটিই (সোনা) অত্যন্ত মূল্যবান, যা বেশির ভাগ শিল্পকর্মে থাকে না।

ক্যাটেলান বলেছেন, তাঁর ‘আমেরিকা’ ভাস্কর্যটি অতিরিক্ত সম্পদ ও বিলাসিতাকে ব্যঙ্গ করে তৈরি করা হয়েছে। তিনি একবার বলেছিলেন, ‘তুমি ২০০ ডলারের দুপুরের খাবার খাও বা ২ ডলারের হটডগ, শেষ ফলাফল টয়লেটে গিয়ে একই হয়।’

‘আমেরিকা’ প্রদর্শিত হবে সদবিসের নতুন নিউইয়র্ক কার্যালয় ব্রয়্যার বিল্ডিংয়ে, ৮ নভেম্বর নিলাম শুরু হওয়ার আগপর্যন্ত। এটি একটি বাথরুমে স্থাপন করা হবে, যা দর্শকেরা কাছ থেকে দেখতে পাবেন।

তবে গুগেনহাইম ও ব্লেনহাইম প্রাসাদের মতো এবার দর্শকদের টয়লেটটি ব্যবহার করার সুযোগ থাকবে না। তাঁরা শুধু দেখতে পারবেন, কিন্তু ফ্লাশ করতে পারবেন না।

আরও পড়ুনসোনার আস্ত একটি কমোড চুরি করেছিলেন তিনি০৩ এপ্রিল ২০২৪

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মামদানিকে বারাক ওবামার ফোন, করলেন নির্বাচনী প্রচারের প্রশংসা
  • নিউইয়র্কের এত ইহুদি কেন জোহরান মামদানির পক্ষে প্রচার চালাচ্ছেন
  • সোনার টয়লেট ‘আমেরিকা’ নিলামে উঠছে, সর্বনিম্ন দর কত জানেন
  • জুলাই বিরোধিতা: ৩০ শিক্ষক-কর্মচারী ও ৩৩ ছাত্রলীগ নেতার ‘শাস্তি’
  • ভোটের আগে মামদানি-কুমোর এগিয়ে থাকার লড়াই
  • এককালের প্রেম যখন উপেক্ষিত