বাংলাদেশ সরকারের সফল সামাজিক উদ্যোগের মধ্যে কমিউনিটি ক্লিনিক অন্যতম। ১৯৯৮ সালে প্রাথমিক পর্যায়ে এটি চালু হলেও ২০০৯ সালে পুনরায় কার্যক্রম বেগবান হয়। লক্ষ্য ছিল গ্রামের দরিদ্র জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়া। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এসব ক্লিনিক কি সত্যিই সে প্রত্যাশা পূরণ করতে পারছে?
সরকার কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলে স্বল্প ব্যয়ে মানসম্মত চিকিৎসা দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা, মাতৃস্বাস্থ্যসেবা, শিশুদের টিকা প্রদান, সাধারণ রোগের ওষুধ সরবরাহ ইত্যাদি সেবা দেওয়ার কথা। বাস্তবতা ভিন্ন। কমিউনিটি ক্লিনিকে সাধারণত চিকিৎসক থাকেন না। দায়িত্বে থাকেন কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি)। অধিকাংশ সময় তারা নিয়মিত উপস্থিত হন না। ক্লিনিকগুলোর কার্যক্রম তদারকিতে নিয়মিত পরিদর্শন ব্যবস্থা দুর্বল। ফলে অনিয়ম ও দায়িত্বহীনতা বেশি দেখা যায়। আবার যারা সেবা দেন, তাদের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা সীমিত। জটিল রোগ দূরের কথা, অনেক সময় সাধারণ অসুস্থতারও সঠিক পরামর্শ রোগীরা পান না।
এখানে রয়েছে পর্যাপ্ত অবকাঠামো ও সরঞ্জামের অভাব। অনেক ক্লিনিকে পরীক্ষার সরঞ্জাম, নরমাল ডেলিভারির সুযোগ বা জরুরি সেবা নেই। ফলে এটি রোগীদের খুব বেশি সহায়তা করতে পারে না।
সমস্যাগুলোর মধ্যে আরও একটি হলো সচেতনতার অভাব ও অনীহা। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কাছে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্য শুধু স্থাপনা নয়, বরং কার্যকর ব্যবস্থাপনা ও গুণগত সেবা নিশ্চিত করাই মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত।
হাবিব আল মিসবাহ: শিক্ষার্থী,
আল-কোরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া
hmh42242@gmail.
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
রাইজিংবিডিতে সংবাদ প্রকাশ: ডেরা রিসোর্টের লাইসেন্স বাতিল
মানিকগঞ্জের ঘিওরের বালিয়াখোড়ায় অবস্থিত ডেরা রিসোর্ট এন্ড স্পা সেন্টারের নানা অনিয়ম নিয়ে রাইজিংবিডিতে ‘কবরস্থানে হরিণের খামারসহ নানা অনিয়মের আখড়া ডেরা রিসোর্ট’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর প্রতিষ্ঠানটির লাইসেন্স বাতিল করেছে বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। একইসঙ্গে ডেরা রিসোর্টে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সহকারী নিয়ন্ত্রক (সিনিয়র সহকারী সচিব) শেখ রাশেদুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক নির্দেশনা পত্রে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
জানা গেছে, ডেরা রিসোর্ট এন্ড স্পা সেন্টার ২০২২ সালের ১৮ ডিসেম্বর লাইসেন্স প্রাপ্তির আবেদন করেন। নানা অনিয়মের কারণে তাদের লাইসেন্স নামঞ্জুর করা হয়েছে। রিসোর্টের লাইসেন্স না থাকায় প্রশাসনকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
২০২৫ সালের ১৪ জানুয়ারি ‘ফসলি জমি দখল করে ডেরা রিসোর্ট নির্মাণ, বিপাকে কৃষক’; ১৯ মার্চ ‘ছাড়পত্র ছাড়াই চলছে ডেরা রিসোর্ট, তদন্ত কমিটি গঠন’ শিরোনামে দুটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে রাইজিংবিডি। গত ১৩ সেপ্টেম্বর ‘কবরস্থানে হরিণের খামারসহ নানা অনিয়মের আখড়া ডেরা রিসোর্ট’ শিরোনামে প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় ডেরার লাইসেন্স নামঞ্জুর করে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।
সুশাসনের জন্য নাগরিক মানিকগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ইন্তাজ উদ্দিন বলেন, “অনলাইন নিউজ পোর্টাল রাইজিংবিডিতে ডেরা রিসোর্ট নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোতে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ ও ভোগান্তি তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদক অনুসন্ধান করে ডেরা রিসোর্টের নানা অনিয়ম তুলে এনেছেন। প্রতিবেদন প্রকাশের পর প্রশাসন লাইসেন্স বাতিল করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে এটি ভালো উদ্যোগ। তবে এসব নির্দেশনা কাগজে কলমের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে বাস্তবায়ন করাটাই বড় কাজ। নির্দেশনা বাস্তবায়ন হলে সুশাসন নিশ্চিত হবে।”
মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, “মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার কপি পেয়েছি। সে অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
ডেরা রিসোর্ট এন্ড স্পা সেন্টারের ব্যবস্থাপক ওমর ফারুক বলেন, “লাইসেন্সের বিষয়ে কোন নোটিশ এখনও পাইনি আমরা। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার বিষয়েও জানা নেই। যদি লাইসেন্স বাতিল করে থাকে, তাহলে আমরা আইনিভাবে বিষয়টি সমাধান করব।”
এ বিষয়ে জানতে বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকালে এশিউর গ্রুপের অঙ্গসংগঠন ডেরা রিসোর্ট এন্ড স্পা সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ সাদীর মোবাইলে ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
ঢাকা/চন্দন/এস