একই শিরোনামে একই সংবাদ ১৩ পত্রিকায়, সম্পাদকদের কারণ দর্শানোর নোটিশ
Published: 19th, April 2025 GMT
ময়মনসিংহ থেকে প্রকাশিত স্থানীয় ১৩টি দৈনিক ও সাপ্তাহিক পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট। পত্রিকাগুলোর দ্বিতীয় ও তৃতীয় পৃষ্ঠায় সবগুলো নিউজ হুবহু কপি করে পত্রিকা প্রকাশ করার জন্য তাদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না সে ব্যাপারে জানতে চাওয়া হয়েছে। বুধবার জেলা প্রশাসন থেকে নোটিশটি জারি করা হয়েছে। সমকালের কাছে খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট উম্মে হাবীবা মীরা।
নোটিশে বলা হয়, চলতি বছরের ৩০ মার্চ থেকে ১৩ এপ্রিল এই সাত দিনের ভিন্ন ভিন্ন পত্রিকায় একই দিনে একই সংবাদ একই হেডিং এ দ্বিতীয় ও তৃতীয় পৃষ্ঠায় প্রকাশিত হয়। ভিন্ন ভিন্ন সম্পাদক ও প্রকাশকের পত্রিকায় এমন সংবাদ প্রকাশ করা কেন অবৈধ হবে না এটিও জানতে চাওয়া হয়েছে নোটিশে।
চিঠি পাওয়ার পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে সশরীরে উপস্থিত হয়ে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ব্যাখ্যাসহ জবাব দাখিল করার অনুরোধ করা হয়। জবাব তা পেলে তাদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়।
স্থানীয় পত্রিকাগুলো হলো, মো.
সূত্র জানায়, এ ১৩টি পত্রিকা ভিন্ন ভিন্ন প্রেসের নামে ডিক্লারেশন নিলেও স্থানীয়ভাবে একই প্রেসে মুদ্রিত হয়। যে কারণে দ্বিতীয় ও তৃতীয় পৃষ্ঠার ছাপা হুবহু মিল রয়েছে।
এছাড়া দৈনিক জাহান এর প্রকাশক শেখ মেহেদী হাসান নাদিমের বিরুদ্ধে নিজ পত্রিকার অফিসে অবৈধভাবে আগ্নেয়াস্ত্র তৈরি বিক্রয় ও মাদক কারবারের অভিযোগ রয়েছে। মো. শামসুল আলম খান সম্পাদিক ‘দৈনিক আজকের ময়মনসিংহ’ পত্রিকাটি ঢাকা থেকে প্রকাশিত হওয়ার কথা থাকলেও এটি ময়মনসিংহের একটি প্রেস থেকে প্রকাশিত হয়।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট উম্মে হাবীবা মীরা সমকালকে বলেন, আমরা লক্ষ্য করেছি ময়মনসিংহের স্থানীয় এ পত্রিকাগুলোর ভেতরের পাতা হুবহু কপি করা। অনেক পত্রিকা আছে যারা কোন একটি নিউজ কিছুটা পরিবর্তন করে তাদের পত্রিকায় দিয়ে থাকে। কিন্তু এখানে বিষয়টা ভিন্ন। তাদের পত্রিকাগুলোতে ফটোকপির মতো পুরো পৃষ্ঠাই কপি করে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এসব পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশকদের আমরা নোটিশ করেছি। তাদের কাছে আমরা এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট বক্তব্য আশা করছি।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে টঙ্গীতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ
বন্ধ কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে গাজীপুরের টঙ্গীতে বিক্ষোভ করেছেন যমুনা অ্যাপারেলস লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা। আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে মিলগেট এলাকায় প্রথমে ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে পরে আঞ্চলিক সড়কে তাঁরা বিক্ষোভ করেন।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের পরিদর্শক ইসমাইল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, শ্রমিকেরা সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করলে তাঁদের সড়ক থেকে সরে যেতে বলা হলে তাঁরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। পরে সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
কারখানার শ্রমিক ও শিল্প পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, টঙ্গীর যমুনা অ্যাপারেলস কারখানায় ২২ এপ্রিল বিশৃঙ্খলাসহ নানা অভিযোগে কারখানার ১১৪ শ্রমিককে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয় কর্তৃপক্ষ। শ্রম আইন অনুযায়ী তাঁদের সব পাওনা পরিশোধও করা হয়। শ্রমিক অসন্তোষ এড়াতে ২৩, ২৪ ও ২৫ এপ্রিল কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। পরে ২৬ এপ্রিল কারখানা খুলে দেওয়া হলে সকালে শ্রমিকেরা কাজে যোগ দেন। এরপর ওই দিন চাকরিচ্যুত শ্রমিকদের পুনর্বহালের দাবিতে কারখানার ভেতরে কর্মবিরতি শুরু করেন তাঁরা। এর পর থেকে শ্রমিক অসন্তোষ এড়াতে কারখানা বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ।
আজ সকালে বন্ধ কারখানা খুলে দেওয়া ও ছাঁটাই করা শ্রমিকদের পুনর্বহালের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন শ্রমিকেরা। প্রথমে তাঁরা ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান নিলে পুলিশ তাঁদের সরিয়ে দেয়। পরে তাঁরা আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করেন। এ সময় শিল্প পুলিশ, থানা–পুলিশ ও যৌথ বাহিনীর সদস্যরা শ্রমিকদের ধাওয়া ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে ছত্রভঙ্গ করে দেন।
কারখানার শ্রমিকদের অভিযোগ, ১০ দিন আগে কারখানার কোয়ালিটি সেকশনের শ্রমিক মো. হুমায়ুন দুই দিনের ছুটি চেয়েছিলেন। ছুটি না পেয়ে হুমায়ুন নিজেই অনুপস্থিত থাকেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে কারখানার অ্যাডমিন অ্যান্ড কমপ্লায়েন্স কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান তাঁর সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়ান এবং হুমায়ুনকে মারধর ও গুম করার হুমকি দেন। একপর্যায়ে হুমায়ুনকে কারখানার নিচতলার গুদামঘরের বাথরুমে আটকে রাখা হয়। চার ঘণ্টা পর হুমায়ুন মুঠোফোনে সহকর্মীদের খবর দিলে তাঁরা তাঁকে উদ্ধার করেন। এ ঘটনার জেরে কারখানা কর্তৃপক্ষ ১১৪ শ্রমিককে ছাঁটাই করে। শ্রমিক ছাঁটাই, গুমের হুমকি ও বহিরাগতদের দিয়ে শ্রমিকদের ওপর হামলার অভিযোগে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকেরা। এ সময় কারখানা খুলে দেওয়ার দাবি জানানো হয়।