ঠাকুরগাঁও হতে পারে মেডিকেল ট্যুরিজমের হাব
Published: 19th, April 2025 GMT
চীনের ১ হাজার শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল ঠাকুরগাঁওয়ে স্থাপন করা হলে ভারতের একটি অংশের মানুষও এই হাসপাতালের সেবা গ্রহণে আগ্রহী হবে। যোগাযোগব্যবস্থা সহজ ও উন্নত হওয়ায় রংপুর বিভাগের ৮টি জেলাসহ ভারত, নেপাল, ভুটান ও চীনের মানুষও চিকিৎসাসেবা নিতে পারবে। ফলে এই জেলা হতে পারে মেডিক্যাল ট্যুরিজম হাব। ‘আমরা ঠাকুরগাঁওবাসী’ আয়োজিত মানববন্ধনে এসব কথা বলেন বক্তারা।
চায়না-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ জেনারেল হাসপাতাল ঠাকুরগাঁওয়ে স্থাপনের দাবিতে শনিবার বিকেল ৩টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। এতে ঠাকুরগাঁও উন্নয়ন ফোরামসহ ঢাকায় ঠাকুরগাঁওবাসীর বিভিন্ন সংগঠন অংশ নেয়।
মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন ঠাকুরগাঁও উন্নয়ন ফোরামের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ দেলাওয়ার হোসেন।
তিনি বলেন, চীনের ১ হাজার শয্যাবিশিষ্ট বিশেষায়িত হাসপাতাল যদি ঠাকুরগাঁওয়ে হয়, তাহলে শুধু রংপুর বিভাগের আট জেলা নয় বরং ভারত, নেপাল, ভুটান ও চীনের মানুষও চিকিৎসাসেবা নিতে পারবে।
দেলাওয়ার হোসেন বলেন, চীনের চিকিৎসাব্যবস্থা উন্নত হওয়ায় এবং বাংলাদেশে অভিজ্ঞ চিকিৎসক থাকায় ভারতের একটি অংশের মানুষও এই হাসপাতালের সেবা গ্রহণে আগ্রহী হবে। বাংলাদেশের চিকিৎসা সিলেবাস অনেক উন্নত হওয়ায় এই মেডিকেল কলেজে উচ্চতর ডিগ্রি নিতে আগ্রহী হবেন বিদেশি শিক্ষার্থীরা।
তিনি আরও বলেন, ঠাকুরগাঁওয়ের সঙ্গে দেশের সব জেলার সড়ক ও রেলপথের যোগাযোগ আছে। অচিরেই বিমানপথও হয়তো যুক্ত হবে। ঠাকুরগাঁও-পঞ্চগড় হাইওয়ের পাশে সালান্দরে সুগার মিলের অব্যবহৃত জমি আছে ১৫০-২০০ একর। আগে আখ চাষ হলেও এগুলো এখন পরিত্যক্ত পড়ে থাকে। ফলে চীনের আর্থিক সহযোগিতায় ১ হাজার শয্যাবিশিষ্ট বিশেষায়িত হাসপাতালটি ঠাকুরগাঁওই সবচেয়ে উপযুক্ত স্থান। তাই ঠাকুরগাঁওবাসীর পক্ষ থেকে এই হাসপাতাল আমাদের প্রাণের ঠাকুরগাঁওয়ে স্থাপনের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরামের (এনডিএফ) সভাপতি ডা.
গনঅধিকার পরিষদের মুখপাত্র ও সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ফারুক হাসান বলেন, ঠাকুরগাঁও বাসীর প্রাণের দাবি পূরণে দলমত নির্বিশেষে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আমরা এক দাবিতে একত্রিত হয়েছি। সরকার এই দাবি পূরণ করলে উত্তরবঙ্গের মানুষের স্বাস্থ্য সেবা সহজ হবে।
ঢাকাস্থ ঠাকুরগাঁও জেলা সোসাইটির সভাপতি ও সাবেক কর কমিশনার আসাদুজ্জামান বলেন, ঠাকুরগাঁও থেকে ঢাকায় ১২-১৪ ঘণ্টার দূরত্ব। অনেকে ঢাকায় উন্নত চিকিৎসার জন্য আসতে না পেরে সুচিকিৎসার অভাবে মারা যান। ঠাকুরগাঁওয়ে চীন-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতাল নির্মিত হলে, বাংলাদেশের মানুষ তথা উত্তরাঞ্চলের ১৫-১৬টি জেলার মানুষ যেমন লাভবান হবে। একই সঙ্গে নেপাল, ভুটান এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মানুষ এখানে এসে চিকিৎসা নিতে পারবে। আমরা সরকারের কাছে নিবেদন জানাই, ঠাকুরগাঁওয়ে এই হাসপাতালটি স্থাপনে যা যা স্টেপ নেওয়া দরকার আপনারা নেবেন।
বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বেলাল হোসাইন বলেন, এই হাসপাতাল শুধু স্বাস্থ্যসেবা নয়, বরং একটি অঞ্চলের অর্থনীতি, কর্মসংস্থান ও সামগ্রিক উন্নয়নের চালিকাশক্তি হয়ে উঠবে। সরকারের উচিত, এই দাবি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা।
ইবনে সিনা ট্রাস্টের সিনিয়র এজিএম মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, চিকিৎসা শুধু বড় শহরের মানুষের একচেটিয়া সুবিধা হতে পারে না। ঠাকুরগাঁওয়ে আন্তর্জাতিক হাসপাতাল স্থাপনের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা আরো বিকেন্দ্রীকৃত হবে এবং স্বাস্থ্য পর্যটনের দিকেও নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলবে।
ঢাকাস্থ ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা কল্যাণ সমিতির আহ্বায়ক এ পারভেজ লাবু বলেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে অবহেলিত ২টি জেলার একটি ঠাকুরগাঁও অপরটি পঞ্চগড়। আমরা চাই এই অবহেলিত জনগোষ্ঠীর জন্য চীন-বাংলাদেশ ফেন্ডশিপ জেনারেল হাসপাতালটি ঠাকুরগাঁওয়ে স্থাপন করা হোক। তিনি ঠাকুরগাঁও-পঞ্চগড় মহাসড়কে এই হাসপাতাল স্থাপনের দাবি জানান।
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকাস্থ ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা কল্যাণ সমিতির সদস্য সচিব মো. মকছেদুল ইসলাম সোহাগ, বিশিষ্ট ব্যাংকার আবুল কালাম আজাদ, ঢাকাস্থ ঠাকুরগাঁও ছাত্রকল্যাণ পরিষদের সভাপতি আসাদুল্লাহ আল গালিব। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাবেক ছাত্রনেতা আব্দুর রহমান, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী হেলাল হোসেন, অ্যাডভোকেট আদিব, ইঞ্জিনিয়ার জামিল প্রমুখ।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ঠ ক রগ ও ঢ ক স থ ঠ ক রগ ন বল ন ব যবস সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
না’গঞ্জকে মেট্রোরেল প্রকল্প-২ এ সংযুক্ত করার দাবিতে নিসচার মানববন্ধন
রাজধানী ঢাকার সাথে মেট্রোরেল প্রকল্প-২ এ নারায়ণগঞ্জকে যুক্ত করার দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করেছে নিরাপদ সড়ক চাই নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার নেতৃবৃন্দ।
সকালে নিরাপদ সড়ক চাই নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার আয়োজনে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। পরে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জায়েদুল ইসলাম মিয়ার হাতে স্মারকলিপি প্রদান করেন সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা।
মানববন্ধনে নিরাপদ সড়ক চাই নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এস এম জামানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, যুগ্ম সম্পাদক হাবিবুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আতাউর রহমান, আইন বিষয়ক সম্পাদক এড: হাবিবুর রহমান, অর্থ বিষয়ক সম্পাদক হাসানউদৌলা, কার্যকরী সদস্য আনোয়ারুল ইসলাম, সদস্য আল আমিন, কাউসার আলম, ফারুক মৃধা, রফিকুল ইসলাম, ইব্রাহিম, রাজু আহাম্মদ, হুমায়ুন, কাকলী প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তব্যরা বলেন, নারায়ণগঞ্জে আয়তনের তুলনায় জনসংখ্যা অনেক গুণ বেশি। এখান থেকে প্রতিদিন ২ লাখেরও বেশি মানুষ ঢাকা যাতায়াত করে এবং ৫০ হাজার মানুষ কর্মের তাগিদে প্রতিদিন নারায়ণগঞ্জে আসেন।
"যে সক্রিয় লাইন আছে, সে লাইনে মাত্র ৪ লাখ যাত্রী যাতায়াতের জন্য মতিঝিল থেকে উত্তরা এমআরটি-৬ হতে পারে। তবে, ৩ লাখ মানুষের জন্য নারায়ণগঞ্জে এমআরটি-২ হতে পারবে না কেন?
কোন অজুহাতেই এমআরটি-২ প্রকল্প থেকে নারায়ণগঞ্জকে বাদ দেওয়া যাবে না।’ প্রয়োজনে বৃহত্তর আন্দোলনের হুশিয়ারী দেন বক্তারা।