৩ মে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হেফাজতে ইসলামের মহাসমাবেশ
Published: 20th, April 2025 GMT
সংবিধানের মূলনীতিতে বহুত্ববাদ যুক্ত করার বিষয়ে সংবিধান সংষ্কার কমিশনের প্রস্তাবের বিরোধীতা করেছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। এর পরিবর্তে পঞ্চদশ সংশোধনীর পূর্বের অবস্থায় থাকা ‘আল্লাহর ওপর আস্থা এবং বিশ্বাস’ এই মূলনীতির প্রত্যাবর্তন চেয়েছে দলটি। একই সঙ্গে নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের অভিন্ন পারিবারিক ও উত্তরাধিকার আইন প্রণয়নের প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে ইসলামী এই সংগঠনটি। দ্রুত এই প্রস্তাবগুলোর বাতিল চেয়েছে তারা । দাবি আদায়ে আগামী ৩ মে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম।
রোববার রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইডিইবি) মিলনায়তনে হেফাজতে ইসলামের কার্যনির্বাহী পরিষদের এক জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন দলটির মহাসচিব মাওলানা সাজেদুর রহমান। তিনি বলেন, ৩ মে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। রোববার বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন হেফাজতে ইসলামের আমির শাহ্ মুহিদুল্লাহ বাবুনগরী।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ও হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক তাদের দাবিগুলো তুলে ধরনে। তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদী আমলে হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরের গণগত্যা এবং ২০২১ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্রমোদীর বাংলাদেশ আগমনের বিরুদ্ধে হওয়া আন্দোলনে হামলা ও হত্যার বিচার করতে হবে।সংবিদান সষ্কার কমিশনের প্রস্তাবিত বহুত্ববাদক প্রত্যাখান করছে হেফাজতে ইসলাম। এই প্রস্তাব বাতিল করে সংবিধানে ‘আল্লাহর ওপর আস্থা এবং বিশ্বা’- এই মূলনীতি পুনর্বহাল করতে হবে।
মামুনুল হক আরও বলেন, নারী সংষ্কার কমিশনের প্রস্তাবে ধর্মী বিধানের বিশেষ করে ইসলামী উত্তরাধিকার আইন ও ইসলামী পারিবারিক আইনকে বাংলাদেশে নারীর প্রতি বৈষম্যের কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। হেফাজতে ইসলাম এই প্রস্তাবনাকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করছে। ‘ইসলাম কটাক্ষকারী’ এই প্রস্তাবনা, প্রস্তাবকারী কমিশন (নারী সংষ্কার কমিশন) এবং প্রধান উপদেষ্টার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে প্রস্তাব বাস্তবায়নের যে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে তা বাতিলের দাবি জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম। ৩ মের মধ্যে সংষ্কার কমিশনের বিতর্কিত প্রস্তাবগুলো বাতিল করা না হলে মহাসমাবেশ থেকে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানান যুগ্ম-মহাসচিব।
তিনি আরও বলের, হেফাজতে ইসলামের আরও দাবির মধ্যে রয়েছে- ভারতীয় ওয়াকফ আইন সংশোধন ও এটিকে কেন্দ্র করে মুসলমানদের ওপর হামলা বন্ধ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং গণহত্যা বন্ধ করে ফিলিস্তিন দখলদার মুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করা।
মহাসমাবেশ সফল করতে আগামী মঙ্গলবার থেকে ১ সপ্তাহ গণসংযোগ ও আগামী ২৫ এপ্রিল বাদ জুমা প্রতি জেলা উপজেলায় বিক্ষোভ করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে দলটি।
উল্লেখ্য, গত ১৫ জানুয়ারি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড.
হেফজতের মতো বিএনপিও রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতির বিষয়ে পঞ্চদশ সংশোধনীর পূর্বের অবস্থায় ফিরে যেতে চায়। যেখানে ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ নেই। ছিল ‘আল্লাহর ওপর আস্থা এবং বিশ্বাস’।
এদিকে শনিবার নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন তাদের প্রস্তাব জমা দেয়। এতে অভিন্ন পারিবারিক আইনের মাধ্যমে সব ধর্মের নারীদের জন্য বিয়ে, তালাক, উত্তরাধিকার ও ভরণপোষণে সমান অধিকার নিশ্চিত করার জন্য অধ্যাদেশ জারি করার সুপারিশ করা হয়েছে। যার বিরোধীতা করেঝে হেফাজতে ইসলাম।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র প রস ত ব ইসল ম র র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসের ব্যাপারে দ্বিমত নেই কারও: পরিবেশ উপদেষ্টা
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণে কারও দ্বিমত নেই বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেছেন, স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের বিষয়টি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় উঠেছিল। রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি স্থায়ী ক্যাম্পাস লাগবে, এ ব্যাপারে কারও দ্বিমত নেই।
সোমবার শাহজাদপুর উপজেলার পোতাজিয়া ইউনিয়নের বহলবাড়ি এলাকায় রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য প্রস্তাবিত স্থায়ী ক্যাম্পাসের জায়গা পরিদর্শনের সময় এসব কথা বলেন উপদেষ্টা।
স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের জন্য একনেক সভায় অনুমোদনের অপেক্ষায় থাকা ৫১৯ কোটি টাকার একটি প্রকল্প সম্পর্কে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, বরাদ্দ ৫০০ কোটি বেশি নাকি কম, কাজ শুরু হলে আরও পাওয়া যাবে কি যাবে না, তা নিয়ে হতাশার কিছু নেই। চলনবিল অধ্যুষিত বড়াল নদী এবং গোচারণ ভূমির ক্ষতি না করে পরিবেশ ঠিক রেখে ক্যাম্পাস নির্মাণের ওপর গুরুত্ব দেন তিনি।
এর আগে ঢাকা থেকে সকালে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী একাডেমিক ভবন-৩ এ পৌঁছান পরিবেশ উপদেষ্টা। এ সময় তাঁকে স্বাগত জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম হাসান তালুকদার, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সুমন কান্তি বড়ুয়া, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. ফিরোজ আহমদসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বরাদ্দ জমি এবং এর আশপাশের অঞ্চল ঘুরে দেখেন পরিবেশ উপদেষ্টা। এরপর রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসের জন্য প্রস্তাবিত জায়গায় বৃক্ষরোপণ করেন। বৃক্ষরোপণ শেষে এক আলোচনা সভায় অংশ নেন তিনি।