সৈয়দ মঞ্জুর এলাহীর ৩৭ কোটি টাকার শেয়ার পেলেন দুই সন্তান
Published: 23rd, April 2025 GMT
বেসরকারি মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের (এমটিবি) সদ্যপ্রয়াত চেয়ারম্যান ও বিশিষ্ট শিল্পোদ্যোক্তা সৈয়দ মঞ্জুর এলাহীর প্রায় ৩৭ কোটি টাকার শেয়ার পাচ্ছেন তাঁর দু্ই সন্তান। ব্যাংকটির অন্যতম উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান সৈয়দ মঞ্জুর এলাহীর হাতে ব্যাংকটির প্রায় ৩ কোটি ৪৩ লাখ ৩০ হাজার শেয়ার ছিল। তাঁর মৃত্যুর পর উত্তরাধিকার হিসেবে এসব শেয়ার এখন তাঁর দুই সন্তান সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর ও মুনিজে মঞ্জুরের মধ্যে সমভাবে বণ্টন করা হচ্ছে। আজ বুধবার এমটিবির পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এমটিবি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি। তাই নিয়ম অনুযায়ী, ব্যাংকটির উদ্যোক্তা–পরিচালকদের শেয়ার হস্তান্তর–সংক্রান্ত তথ্য স্টক এক্সচেঞ্জ ও পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে জানাতে হয়। তারই অংশ হিসেবে ব্যাংকটির সদ্য প্রয়াত চেয়ারম্যান সৈয়দ মঞ্জুর এলাহীর হাতে থাকা শেয়ার হস্তান্তরের তথ্য ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ওয়েবসাইটের মাধ্যমে শেয়ারধারীদের জানানো হয়।
এমটিবি জানিয়েছে, সৈয়দ মঞ্জুর এলাহীর হাতে থাকা ব্যাংকটির মোট শেয়ার দুই সন্তানের মধ্যে হস্তান্তর করা হচ্ছে ৩ কোটি ১২ লাখ ৬৬ হাজার ৩২১টি। বাকি ৩০ লাখ ৬৩ হাজার ৬৩২টি শেয়ার হস্তান্তর নিষেধাজ্ঞা বা লকইনে থাকায় আপাতত সেগুলোর হস্তান্তর করা হচ্ছে না। হস্তান্তর নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষে এসব শেয়ারও উত্তরাধিকারদের মধ্যে হস্তান্তর করা হবে। বর্তমানে যেসব শেয়ার হস্তান্তর করা হচ্ছে, তা প্রয়াত সৈয়দ মঞ্জুর এলাহীর ছেলে সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর ও মেয়ে মুনিজে মঞ্জুরের মধ্যে সমভাবে বণ্টন করা হবে। ঢাকার শেয়ারবাজারে আজ দিন শেষে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের প্রতিটি শেয়ারের বাজারমূল্য ছিল ১১ টাকা ৭০ পয়সা। সেই হিসাবে ৩ কোটি ১২ লাখ ৬৬ হাজার ৩২১টি শেয়ারের বাজারমূল্য দাঁড়ায় ৩৬ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। সেই হিসাবে প্রয়াত বাবার কাছ থেকে সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর ও মুনিজে মঞ্জুর উভয়ই ১৮ কোটি ২৯ লাখ টাকার সমমূল্যের শেয়ার পাচ্ছেন।
এমটিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর ব্যাংকটির একজন প্লেসমেন্ট শেয়ারধারী। আর মুনিজে মঞ্জুর সাবেক পরিচালক ও উদ্যোক্তা শেয়ারধারী।
গত ১২ মার্চ সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ( (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন বিশিষ্ট এই শিল্পোদ্যোক্তা। এ ছাড়া তিনি অ্যাপেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন। সৈয়দ মঞ্জুর এলাহীর মৃত্যুর পর উত্তরাধিকারী হিসেবে তাঁর সম্পদ ও শেয়ার সন্তানদের মধ্যে হস্তান্তর করা হচ্ছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এমট ব
এছাড়াও পড়ুন:
অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার
অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’
সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।
সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।
এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’
অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি বরাবর অভিযোগ করেন।
এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।