কাতারকে বাংলাদেশে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ব্যবহারের প্রস্তাব প্রধান
Published: 23rd, April 2025 GMT
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মূহাম্মদ ইউনূস কাতারের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদারে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তিনি কাতারি বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশে একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল উৎসর্গ করার প্রস্তাব দিয়েছেন, যেখানে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম তৈরির কারখানাও স্থাপন করা যেতে পারে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, কাতারের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী ড.
তিনি কাতারের নিরাপত্তা বাহিনীতে ৭২৫ জন বাংলাদেশি সৈন্য নিয়োগের সিদ্ধান্তের জন্য কৃতজ্ঞতা জানান এবং ভবিষ্যতে এ নিয়োগ আরো সম্প্রসারণের আহ্বান জানান।
পরে লুসাইল সিটিতে কাতারের বাণিজ্যমন্ত্রী শেখ ফয়সাল বিন আল থানির সঙ্গে পৃথক বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ প্রসারে আলোচনা হয়। প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশের পরিবহন, ব্যাংকিং এবং আতিথেয়তা খাতে বিনিয়োগের সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, “আমাদের লক্ষ্য বাংলাদেশকে একটি অর্থনৈতিক ও উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা।”
বিকেলে উপ-প্রধানমন্ত্রী হামাদ বিন আব্দুলআজিজ আল-কাওয়ারীর আমন্ত্রণে চা-চক্রে যোগ দেন তিনি। সেখানে মানবসম্পদ সহযোগিতা বৃদ্ধি, বিশেষ করে বাংলাদেশি শ্রমিক নিয়োগ বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
সকালে তিনি রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে দ্বিগুণ প্রচেষ্টার আহ্বান জানান।
বৈঠকে কাতার ফাউন্ডেশনের সিইও শেখা হিন্দ বিনত হামাদ আল থানি বক্তব্য দেন এবং শিগগিরই বাংলাদেশ সফরের আগ্রহ প্রকাশ করেন।
প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গীদের মধ্যে ছিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন, জ্বালানি উপদেষ্টা ফৌজুল কবির খান, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খালিলুর রহমান, বিডা নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন এবং সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ।
ঢাকা/হাসান/এনএইচ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ইসির ভূমিকা তদন্তে কমিটি গঠন করার নির্দেশ
বিতর্কিত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে জড়িত নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনার ও সচিবালয়ের সচিবদের ভূমিকা তদন্তে অবিলম্বে কমিটি গঠনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এক বৈঠকে এ-সংক্রান্ত আলোচনা শেষে এমন নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা। পরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে ।
এই বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামান, সফররাজ হোসেন ও মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
বৈঠকে নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে যে অতীতের তিনটি বিতর্কিত নির্বাচন আয়োজনে কর্মকর্তাদের ভূমিকা তদন্ত করা এবং তাঁদের জবাবদিহির আওতায় আনা প্রয়োজন।
জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই সনদবৈঠকে কমিশন সদস্যরা জুলাই সনদ তৈরির কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন। কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, বেশ কিছু বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। শিগগিরই সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে সনদ চূড়ান্ত করা সম্ভব হবে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘সবাই জুলাই সনদের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। আশা করি, আগামী জুলাই মাসের মধ্যে আমরা এটি জাতির সামনে উপস্থাপন করতে পারব।’
‘প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে’বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা তাঁর লন্ডন সফরের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, লন্ডনে বাংলাদেশি কমিউনিটির যাঁদের সঙ্গেই দেখা হয়েছে, তাঁরা সংস্কার নিয়ে জানতে চেয়েছেন। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা খুব আগ্রহী। তাঁরা বিস্তারিতভাবে ঐকমত্য কমিশনের কাজ নিয়ে তাঁর (প্রধান উপদেষ্টা) সঙ্গে আলোচনা করেছেন, মতামত দিয়েছেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘যেখানেই গিয়েছি, সেখানকার প্রবাসী বাংলাদেশিরা আমাকে জিজ্ঞেস করছেন, “আমরা আগামী নির্বাচনে ভোট দিতে পারব তো?” আমাদের প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। পোস্টাল ব্যালট এবং আর কী কী অপশন আছে, সেগুলো নিয়ে ভাবতে হবে, সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে।’