অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মূহাম্মদ ইউনূস কাতারের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদারে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তিনি কাতারি বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশে একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল উৎসর্গ করার প্রস্তাব দিয়েছেন, যেখানে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম তৈরির কারখানাও স্থাপন করা যেতে পারে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, কাতারের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী ড.

সাওদ বিন আবদুলরহমান আল থানির আমন্ত্রণে আয়োজিত উচ্চপর্যায়ের বৈঠক ও প্রীতিভোজে অংশ নেন তিনি। সেখানে তিনি কাতারি শিল্প উদ্যোক্তাদের জন্য বাংলাদেশে বিনিয়োগের সুযোগ সহজতর করার এবং প্রয়োজনীয় অবকাঠামোগত সহায়তা প্রদানের প্রস্তুতির কথা জানান।

তিনি কাতারের নিরাপত্তা বাহিনীতে ৭২৫ জন বাংলাদেশি সৈন্য নিয়োগের সিদ্ধান্তের জন্য কৃতজ্ঞতা জানান এবং ভবিষ্যতে এ নিয়োগ আরো সম্প্রসারণের আহ্বান জানান।

পরে লুসাইল সিটিতে কাতারের বাণিজ্যমন্ত্রী শেখ ফয়সাল বিন আল থানির সঙ্গে পৃথক বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ প্রসারে আলোচনা হয়। প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশের পরিবহন, ব্যাংকিং এবং আতিথেয়তা খাতে বিনিয়োগের সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, “আমাদের লক্ষ্য বাংলাদেশকে একটি অর্থনৈতিক ও উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা।”

বিকেলে উপ-প্রধানমন্ত্রী হামাদ বিন আব্দুলআজিজ আল-কাওয়ারীর আমন্ত্রণে চা-চক্রে যোগ দেন তিনি। সেখানে মানবসম্পদ সহযোগিতা বৃদ্ধি, বিশেষ করে বাংলাদেশি শ্রমিক নিয়োগ বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।

সকালে তিনি রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে দ্বিগুণ প্রচেষ্টার আহ্বান জানান।

বৈঠকে কাতার ফাউন্ডেশনের সিইও শেখা হিন্দ বিনত হামাদ আল থানি বক্তব্য দেন এবং শিগগিরই বাংলাদেশ সফরের আগ্রহ প্রকাশ করেন।

প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গীদের মধ্যে ছিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন, জ্বালানি উপদেষ্টা ফৌজুল কবির খান, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খালিলুর রহমান, বিডা নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন এবং সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ।

ঢাকা/হাসান/এনএইচ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ