কমিশনের লক্ষ্য গ্রহণযোগ্য জাতীয় সনদ তৈরি করা: অধ্যাপক আলী রীয়াজ
Published: 24th, April 2025 GMT
সবার সঙ্গে আলোচনা করে একটি সর্বজন গ্রহণযোগ্য জাতীয় সনদ তৈরি করা ঐকমত্য কমিশনের লক্ষ্য বলে জানান কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রিয়াজ।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) ঢাকার সংসদ ভবনে এল. ডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আমজনতার দলের আলোচনার শুরুতে তিনি এসব কথা বলেন।
অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, “গত ৫৩ বছরের দেশের শাসন কাঠামোতে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণে ঘাটতি এবং প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা ছিল বলেই একটি ফ্যাসিবাদী শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।”
তিনি বলেন, “ঐকমত্য কমিশনের লক্ষ্য হচ্ছে সবার সঙ্গে আলোচনা করে একটি সর্বজন গ্রহণযোগ্য জাতীয় সনদ তৈরি করা। যা ভবিষ্যত বাংলাদেশের পথরেখা তৈরি করবে।”
ঐকমত্য কমিশনের আলোচনা নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে অনুঘটক হিসেবে কাজ করবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “গত ১৬ বছর ধরে দেশের সর্বস্তরের মানুষ যে ফ্যাসিবাদের নিপীড়ন সহ্য করেছে, তা যেন আর ফিরে না আসে। এখন নতুন বাংলাদেশ গড়ার সময় এসেছে৷ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের অব্যাহত আলোচনা নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে অনুঘটক হিসেবে কাজ করবে।”
আমজনতার দলের সভাপতি মিয়া মশিউজ্জামানের নেতৃত্বে আলোচনায় আরো অংশগ্রহণ করেন দলের সাধারণ সম্পাদক মো.
এ সময় কমিশনের সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড. ইফতেখারুজ্জামান, বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
প্রথম পর্যায়ে গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর মধ্যে সংবিধান সংস্কার কমিশন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে উল্লেখিত গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলোর ওপর রাজনৈতিক দলের সুনির্দিষ্ট মতামত জানাতে অনুরোধ করে সুপারিশগুলোর স্প্রেডশিট আকারে ৩৯টি রাজনৈতিক দলের কাছে পাঠানো হয়। এরইমধ্যে সংস্কার বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ৩৫টি দলের কাছ থেকে মতামত পেয়েছে। আমজনতার দলসহ এ পর্যন্ত ১৬টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে প্রথম পর্যায়ের আলোচনা শেষ করেছে কমিশন।
ঢাকা/এএএম/ইভা
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
প্রাথমিক পর্যায়ে ঐকমত্যের তালিকা রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠানো হবে
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, “মার্চ মাস থেকে মে মাস পর্যন্ত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রাথমিক পর্যায়ের আলোচনায় অনেকগুলো বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আবার এসবের মধ্য থেকে কিছু কিছু বিষয় দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনায়ও ফিরে এসেছে। কিন্তু সামগ্রিকভাবে প্রাথমিক পর্যায়ের আলোচনায় যেসব বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তার একটা তালিকা রাজনৈতিক দলগুলোকে বুধবার পাঠানো হবে।”
মঙ্গলবার ঢাকার ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা শেষে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় কমিশনের সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
আরো পড়ুন:
অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন উপহার দিতে আমরা কাজ করছি: প্রধান উপদেষ্টা
কিছু দল পিআর ছাড়া নির্বাচনে যাবে না বলে শপথ করেছে: ফখরুল
নারীর সংসদীয় প্রতিনিধিত্ব সংক্রান্ত আলোচনার অগ্রগতির বিষয়েও সাংবাদিকদের অবহিত করেন অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
তিনি জানান, প্রায় সব রাজনৈতিক দল জাতীয় সংসদে নারী আসন সংখ্যা ১০০ এ উন্নীত করার বিষয়ে একমত হয়েছে। যদিও এই আসনগুলো কেমন নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় নির্ধারিত হবে, তা নিয়ে এখনো চূড়ান্ত ঐকমত্য হয়নি। তবে বর্তমানে সংরক্ষিত ৫০টি আসন বহাল থাকবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
অধ্যাপক রীয়াজ বলেন, “পর্যায়ক্রমে নারীদের আসন কীভাবে বৃদ্ধি করা যায়, সে বিষয়ে আমরা অনেকটাই ঐকমত্যের জায়গায় এসেছি৷ কমিশনের পক্ষ থেকে আগামীকাল একটি লিখিত ভাষ্য দেওয়া হবে, যা গ্রহণযোগ্য হবে বলে আশা করছি।”
মঙ্গলবারের আলোচনায় নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার, মহা-হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক এবং ন্যায়পাল নিয়োগের বিধান নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার বিষয়ে আলী রীয়াজ জানান, কমিশনের পক্ষ থেকে আজ একটি সংশোধিত ও সমন্বিত প্রস্তাব রাজনৈতিক দলগুলোর সামনে উপস্থাপন করা হয়েছে। ৫ সদস্যবিশিষ্ট বাছাই কমিটির প্রস্তাব নিয়ে কোনো দলই আপত্তি করেনি। তবে র্যাংক চয়েজ পদ্ধতির ব্যবহার নিয়ে এখনো দ্বিধা রয়েছে। বিশেষ করে বিএনপিসহ কয়েকটি দলের ভিন্নমত রয়েছে। এ বিষয়ে আলোচনা করে কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে।
এদিন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেয় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টিসহ মোট ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি।
ঢাকা/এএএম/এসবি