বাংলাদেশে ভোটের সময় নিয়ে উত্তেজনা বাড়তে পারে
Published: 24th, April 2025 GMT
সংসদ নির্বাচনের সময় নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে মতানৈক্য; তাতে রাজনৈতিক উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে। নির্বাচন কবে হবে, তা নিয়ে এখনও অস্পষ্টতা রয়ে গেছে। পুলিশ বাহিনী পুরোপুরি কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত নিরাপত্তা নিয়ে অনিশ্চয়তা থেকে যাবে। এসব কারণে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডও ব্যাহত হতে পারে। বিশ্বব্যাংকের ‘বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট’ প্রতিবেদনে নির্বাচন এবং রাজনীতি নিয়ে শঙ্কার কথা বলা হয়েছে।
গত বুধবার ওয়াশিংটন থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির হার ৩ দশমিক ৩ শতাংশে নেমে আসতে পারে। নীতিগত অনিশ্চয়তা ও উচ্চ সুদের কারণে বেসরকারি বিনিয়োগে তেমন গতি আসার সম্ভাবনা নেই। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্যযুদ্ধের কারণে বাংলাদেশের রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে রাজনীতি প্রসঙ্গে আরও বলা হয়, রাজনৈতিক অস্থিরতা, আর্থিক খাতের দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠার ক্ষেত্রে ধীরগতি ও মূল্যস্ফীতির চাপ অর্থনেতিক প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করবে। এতে আরও বলা হয়, ড.
বিশ্বব্যাংক মনে করে, কিছু কিছু খাতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সংস্কার করতে হবে। সংস্কারের ক্ষেত্রে প্রথম অগ্রাধিকার হওয়া উচিত সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা। দ্বিতীয়ত, সরকারি ও করপোরেট খাতে সুশাসন আরও সুসংহত করা। তৃতীয়ত, দেশে উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের যে চাহিদা, তা মেটাতে রাজস্ব আদায় বাড়ানোর বিকল্প নেই।
তারা মনে করছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের রাজস্ব-জিডিপির অনুপাত ছিল মাত্র ৭ দশমিক ৪ শতাংশ। এই রাজস্ব দিয়ে দেশের প্রয়োজনীয় উন্নয়নমূলক কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। চতুর্থত, বাংলাদেশের আর্থিক খাতের ভঙ্গুরতা নিয়ে কথা বলেছে বিশ্বব্যাংক। তারা বলেছে, দেশে আর্থিক খাত যেভাবে ভঙ্গুর হয়ে পড়েছে, তাতে জরুরি ভিত্তিতে এই খাতের স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার করা দরকার।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাল্টা শুল্কের বিষয়ে বিশ্বব্যাংক বলেছে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছর এই বাণিজ্যনীতির প্রভাব বাংলাদেশের অর্থনীতিতে তেমন একটা পড়বে না। আগামী অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এর প্রভাব পুরোপুরি অনুভূত হবে। সংস্থাটি বলেছে, প্রভাব ঠিক কতটা পড়বে, তা এখনই সুনির্দিষ্ট হয়ে বলা যাবে না। কারণ, ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত ও নীতি ক্ষণে ক্ষণে বদলায়। সেই অনিশ্চয়তা মাথায় রেখেও তাদের হিসাব, বৈশ্বিক এই বাণিজ্যযুদ্ধের কারণে বাংলাদেশের রপ্তানি ও প্রকৃত জিডিপি প্রবৃদ্ধি যথাক্রমে ১ দশমিক ৭ শতাংশ ও শূন্য দশমিক ৫ শতাংশীয় পয়েন্ট হারে কমবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব শ বব য ক র জন ত ক দশম ক সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
কর্ণাটকে ক্রিকেট খেলার সময় বচসা, যুবককে পিটিয়ে হত্যা
পাড়ার গলিতে ক্রিকেট খেলার সময় এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। কর্ণাটকের ম্যাঙ্গালুরু জেলার কুডুপু এলাকার ভাত্রা কাল্লুর্তি মন্দিরের কাছে রোববার ঘটনাটি ঘটেছে। খেলার সময় ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ স্লোগান দেওয়ায় তাঁকে গণপিটুনি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে ঠিক কী ঘটেছিল, কারা কারা এর সঙ্গে জড়িত ছিল সে ব্যাপারটি এখনও পরিষ্কার নয় বলে জানিয়েছে কর্ণাটক রাজ্য সরকার। ঘটনাটির তদন্ত শুরু করেছে স্থানীয় পুলিশ। এরই মধ্যে ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, ওইদিন বিকেল তিনটার দিকে সেখানে ক্রিকেট ম্যাচ চলছিল। টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছিল ১০টি দলের শতাধিক খেলোয়াড়। খেলার সময় দুই ব্যক্তির মধ্যে বচসা হয়। হঠাৎ করেই ওই ঘটনায় আরও একাধিক ব্যক্তি জড়িয়ে পড়েন। একজন নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে লক্ষ্য করে অনেকেই তখন লাঠিসোঁটা নিয়ে তার ওপর চড়াও হয়, পেছন থেকে অনেকে লাথিও মারেন। নিহত ওই ব্যক্তি কেরলের বাসিন্দা, তিনি শ্রমিকের কাজ করতেন। তবে এখনও পুলিশের পক্ষ থেকে তার পরিচয় নিশ্চিত করা হয়নি।
বিকেল ৩টার দিকে ওই ঘটনা ঘটলেও সাড়ে পাঁচটা নাগাদ ঘটনাস্থল থেকে ওই ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধারের পর বিষয়টি জানতে পারে স্থানীয় পুলিশ। এই ঘটনায় কুলশেখর চৌকির বাসিন্দা দীপক কুমার নামে এক ব্যক্তি কিছু ছবি ও ভিডিওসহ থানায় লিখিত অভিযোগ জানানোর পরই নড়েচড়ে বসে ম্যাঙ্গালুরু গ্রামীণ পুলিশ। অভিযোগ পেয়েই একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা হয়েছে।
রাতেই ওয়েনলক জেলা হাসপাতালের পক্ষে যে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট সামনে আসে তাতে জানা যায়, ভুক্তভোগী ব্যক্তিকে অনবরতভাবে আঘাতের কারণে তার শরীরের ভেতরে প্রচণ্ড রক্তক্ষরণ হয়। ওই ব্যক্তির পিঠ, নিতম্ব ও যৌনাঙ্গে কাঠের টুকরো দিয়ে আঘাতের চিহ্ন নথিভুক্ত করেছেন তদন্তকারী কর্মকর্তারা।
এই ঘটনায় ম্যাঙ্গালুরুর পুলিশ কমিশনার অনুপম আগরওয়াল জানান, ‘এটি অত্যন্ত নিষ্ঠুর ও নজিরবিহীন ঘটনা। ওই ব্যক্তির শরীরের আঘাত যথেষ্ট ভয়ঙ্কর। সময়মতো চিকিৎসা না পাওয়ার কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে।’
পুলিশ কমিশনার জানান, এখন পর্যন্ত ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা সকলেই কুডুপু, নির্মারগা, ভামঞ্জুর ও আশপাশের এলাকার বাসিন্দা। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান এই ঘটনার পেছনে ২৫ জন জড়িত। গণপিটুনিতে মৃত্যুর ধারায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এই মামলার সাজা হিসেবে দোষীদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড কিংবা ফাঁসিও হতে পারে।
এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কর্ণাটকের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জি পরমেশ্বরা। রাজ্যের মানুষকে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ঠিক কী ঘটেছিল, কারা কারা এর সঙ্গে জড়িত ছিল সে ব্যাপারে আমরা এখনও পরিষ্কার নয়। এখনই কোনো নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের মানুষের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তোলা ঠিক নয়।