মানিকগঞ্জে অনুমোদনহীন ফার্মেসিতে ওষুধ বিক্রির হিড়িক
Published: 25th, April 2025 GMT
মানিকগঞ্জে ঔষুধ প্রশাসনের যথাযথ নজরদারির অভাবে ফার্মেসি মালিকরা অনুমোদন ছাড়াই ওষুধ বিক্রি করছেন। আর এসব ফার্মেসির ওষুধ খেয়ে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছেন রোগীরা। রাইজিংবিডির অনুসন্ধান বলছে, মানিকগঞ্জে কমপক্ষে ৭০টি ফার্মেসি অনুমোদন ছাড়াই ওষুধ বিক্রি করছেন। এতে করে এ অঞ্চলের মানুষের দিন দিন স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ছে।
ডাক্তার দেখানোর পর বা হাসপাতালে ভর্তি থেকে রোগীর সুস্থ হতে প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী ওষুধ প্রয়োজন হয়। সাধারণত সবাই নিকটস্থ ফার্মেসি থেকে জীবন রক্ষাকারী এসব ওষুধ কিনে থাকেন। নিয়মানুযায়ী রোগীদের কাছে যে কেউ ওষুধ বিক্রি করতে পারবেন না। না জেনে বুঝে এসব ওষুধ বিক্রি করলে জীবন রক্ষার বদলে জীবন বিপন্ন হতে পারে। ওষুধ বিক্রি করতে বা ফার্মেসি খুলতে যথাযথ নিয়ম মেনে আবেদন করে ঔষধ প্রশাসনের অনুমোদন নিতে হয়। তবে অনেক ফার্মেসি মালিক কোন অনুমোদন না নিয়েই জীবন রক্ষাকারী ওষুধ বিক্রি করছেন। ফলে রোগীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্র বাসস্ট্যান্ড, হাসপাতাল গেট, শহীদ স্মরনী সড়ক, উপজেলাগুলোর গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় রয়েছে অর্ধশত অনুমোদনহীন ফার্মেসি। এসব ফার্মেসি থেকে জীবন রক্ষাকারী গুরুত্বপূর্ণ ওষুধসহ প্রাথমিক চিকিৎসার সকল ওষুধই বিক্রি হচ্ছে। নিয়ম নীতি না মেনে ওষুধ বিক্রি করায় বাড়ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি।
মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডের অন্যতম ব্যস্ততম এলাকা কাঁচাবাজার। কাঁচাবাজার থেকে পশ্চিম দিকে সেওতা এলাকার দিকে চলে গেছে একটি সড়ক। এ সড়কের আশেপাশে গড়ে উঠেছে শহরের নামিদামি বেসরকারি ক্লিনিক হাসপাতাল। প্রতিদিন দূর দূরান্ত থেকে শত শত রোগী ভীড় করেন এসব ক্লিনিক হাসপাতালে। ক্লিনিক-হাসপাতাল থেকে বের হওয়ার পর রোগীর স্বজনরা কাঁচাবাজার মার্কেট থেকে ওষুধ কেনেন। কাঁচাবাজার সড়কের বড় ফার্মেসির নাম মাস্টার ফার্মেসি। প্রতিদিন শত শত মানুষ এ ফার্মেসি থেকে ওষুধ কেনেন। কিন্তু এ মাস্টার ফার্মেসির ঔষুধ প্রশাসনের কোনো অনুমোদন নেই।
মানিকগঞ্জের হাসপাতাল গেটের পাশেই দলিল সুপার মার্কেটের গলির শেষে রয়েছে ফ্রেন্ডস ফার্মেসি। এ ফার্মেসির নেই ওষুধ বিক্রির অনুমোদন। জয়রা রোড এলাকার আল আবরার হাসপাতালের আল আবরার ফার্মেসিসহ জেলা শহর, উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ এলাকার অনেক ফার্মেসি অনুমোদন ছাড়াই ওষুধ বিক্রি করছেন। প্রশাসনের নজরদারি না থাকায় ফার্মেসি মালিকরাও ধরা ছোঁয়ার বাইরে থাকছেন।
মাস্টার ফার্মেসির মালিক নিহার রঞ্জন সরকার বলেন, “পাঁচ মাস ধরে ফার্মেসির ব্যবসা করছি। ফার্মেসির লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছি কিন্তু এখনো হাতে পাইনি।”
অনুমোদন না পাওয়ার আগেই কেন ওষুধ বিক্রি করছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আবেদনের সাথে ফার্মেসির ছবি সংযুক্ত করে দিতে হয়, তাই ফার্মেসি চালু রেখেছি।”
আল আবরার ফর্মেসির মালিক আরশ্বাদ উল্লাহ বলেন, “আল আবরার হাসপাতালের ইনডোরে ওষুধ বিক্রি করা হয়। বাণিজ্যিকভাবে বাইরে ওষুধ বিক্রি করা হয় না। তাই আবেদন করিনি। আগামীতে আবেদন করে ওষুধ বিক্রি করব।”
মানিকগঞ্জ কেমিস্ট এন্ড ড্রাগিস্ট সমিতির সভাপতি সাজমুল হক বলেন, “যেসকল ফার্মেসি মালিকরা অনুমোদন ছাড়া ওষুধ বিক্রি করছেন, তাদের আমরা সব সময় অনুমোদন নেওয়ার জন্য অনুরোধ করে থাকি। তারপরও তারা আমাদের সমিতির অনুরোধ না রাখলে এর চেয়ে বেশি কিছু আমাদের করণীয় থাকে না।”
মানিকগঞ্জ জেলা স্বাস্থ্য অধিকার ফোরামের সমন্বয়কারী বিমল রায় বলেন, “জীবন রক্ষাকারী ওষুধ বিক্রিতে অনুমোদন থাকা বাধ্যতামূলক। সরকারি অনুমোদন ছাড়াই যারা ওষুধ বিক্রি করছেন তাদের আইনের আওতায় আনা উচিত। যেসব ফার্মেসি মালিকরা ড্রাগ লাইসেন্স ছাড়া ওষুধ বিক্রি করছেন ঔষধ প্রশাসনের উচিত তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা। এছাড়া জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন ও ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর এ বিষয়ে নজরদারি বাড়াতে পারে।”
ঔষধ প্রশাসন মানিকগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সুলতানা রিফাত ফেরদৌস বলেন, “অনুমোদনহীন ফার্মেসিগুলোর বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হয়। তারপরও এসব ফার্মেসিগুলো পরিচালিত হয়। এসব ফার্মেসিগুলোর ওষুধ বিক্রি বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
ঢাকা/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এসব ফ র ম স ম ন কগঞ জ ম ল কর করছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
বিশ্বকে ১৫০ বার ধ্বংস করার মতো পারমাণবিক অস্ত্র আমাদের আছে: ট্রাম্প
বেইজিংয়ের জন্য ওয়াশিংটন একটি ‘হুমকি’ বলে স্বীকার করে নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। অথচ মাত্র কয়েক দিন আগে তিনি চীনের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছিলেন।
সিবিএস নিউজের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, ‘চীন সব সময় আমাদের ওপর নজরদারি করছে।’
মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো আগে থেকেই চীনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের বিদ্যুৎ গ্রিড ও পানি সরবরাহব্যবস্থার কিছু অংশে অনুপ্রবেশের অভিযোগ করে আসছে। বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে মার্কিন মেধাস্বত্ব ও নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য চুরির অভিযোগও তারা করেছে।
এবার ট্রাম্পও চীনের নজরদারির বিষয়টি স্বীকার করে নিলেন।
আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্রকে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার নির্দেশে আতঙ্ক-উত্তেজনা, ট্রাম্প আসলে কী চান০১ নভেম্বর ২০২৫এ প্রসঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, ‘আমরাও তাদের জন্য হুমকি। আপনি যেসব বিষয় নিয়ে বললেন, তার অনেক কিছু আমরাও তাদের ক্ষেত্রে করি।’
ট্রাম্প আরও বলেন, ‘দেখুন, এটা খুবই প্রতিযোগিতাপূর্ণ বিশ্ব, বিশেষ করে যখন চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের বিষয় আসে। আমরা সব সময় তাদের ওপর নজর রাখছি এবং তারা সব সময় আমাদের ওপর নজর রাখছে। এখন পর্যন্ত, আমি মনে করি, আমরা খুব ভালোভাবে মিলেমিশে আছি। আর আমি মনে করি, তাদের হটিয়ে দেওয়ার বদলে তাদের সঙ্গে কাজ করে আমরা আরও বড়, আরও ভালো এবং আরও শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারব।’
মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো আগে থেকেই চীনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের বিদ্যুৎ গ্রিড ও পানি সরবরাহ ব্যবস্থার কিছু অংশে অনুপ্রবেশের অভিযোগ করে আসছে। বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে মার্কিন মেধাস্বত্ব এবং নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য চুরির অভিযোগও তারা করেছে।চীনের পারমাণবিক অস্ত্রট্রাম্প চীনের পারমাণবিক অস্ত্রের ভান্ডার নিয়েও কথা বলেছেন। তিনি বলেন, বেইজিং দ্রুত তাদের অস্ত্রভান্ডার বাড়াচ্ছে।
ট্রাম্প বলেন, ‘দেখুন, অন্য যেকোনো দেশের চেয়ে আমাদের হাতে বেশি পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। রাশিয়া আছে দ্বিতীয় স্থানে। চীন তৃতীয় স্থানে, যদিও তারা এখনো অনেক দূরে আছে, কিন্তু পাঁচ বছরের মধ্যে তারা সমান অবস্থানে পৌঁছে যাবে। আপনি জানেন, তারা দ্রুত এগুলো তৈরি করছে এবং আমি মনে করি আমাদের নিরস্ত্রীকরণের বিষয়ে কিছু করা উচিত।’
১৯৪৫ সালের ১৬ জুলাই পারমাণবিক বোমার পরীক্ষা চালায় যুক্তরাষ্ট্র