স্বামীকে ১০ কোটি টাকার শেয়ার উপহার দিলেন স্ত্রী
Published: 25th, April 2025 GMT
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত প্রযুক্তি খাতের কোম্পানি ই–জেনারেশনের পরিচালক সৈয়দা কামরুন নাহার আহমেদ তাঁর স্বামী শামীম আহসানকে কোম্পানিটির এক কোটি শেয়ার উপহার দিচ্ছেন। সম্প্রতি কোম্পানিটির পক্ষ থেকে এ তথ্য ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে (ডিএসই) জানানো হয়েছে।
ডিএসই সূত্রে জানা যায়, কামরুন নাহার আহমেদ ও তাঁর স্বামী শামীম আহসান দুজনই ই–জেনারেশনের উদ্যোক্তা শেয়ারধারী। দুজনই একসময় কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ছিলেন। বর্তমানে শামীম আহসান কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্বে থাকলেও কামরুন নাহার পরিচালক পদ ছেড়েছেন। এখন তাঁর হাতে থাকা শেয়ারও স্বামীকে উপহার দিয়ে দিচ্ছেন।
কোম্পানি–সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, কামরুন নাহার আহমেদ এখন তাঁর নিজের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত থাকবেন। এর ফলে তিনি ই–জেনারেশনে আর বেশি সময় দিতে পারছেন না। এ কারণে তাঁর হাতে থাকা শেয়ারও স্বামীকে হস্তান্তর করে দিচ্ছেন। ডিএসইতে ২০ এপ্রিল প্রথম দফায় ৫০ লাখ ৩ হাজার ২৮৩টি শেয়ার স্বামীকে উপহার দেওয়ার ঘোষণা দেন। এরপর গত বৃহস্পতিবার জানানো হয়, এই শেয়ার হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে।
ডিএসইতে বৃহস্পতিবার ই–জেনারেশনের প্রতিটি শেয়ারের বাজারমূল্য ছিল ২০ টাকা ৬০ পয়সা। সেই হিসাবে কামরুন নাহারের পক্ষ থেকে তাঁর স্বামীকে উপহার দেওয়া শেয়ারের বাজারমূল্য দাঁড়ায় ১০ কোটি ৩১ লাখ টাকা। স্ত্রীর কাছ থেকে এই শেয়ার উপহার পাওয়ার পর কোম্পানিটিতে শামীম আহসানের শেয়ারের অংশীদারি বাড়বে।
ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, ই–জেনারেশনের শেয়ারের ৩০ শতাংশ রয়েছে কোম্পানিটির উদ্যোক্তা–পরিচালকদের হাতে। বাকি ৭০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক, ব্যক্তিশ্রেণি ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের হাতে। পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) আইনি বিধান অনুযায়ী, তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানির উদ্যোক্তা–পরিচালকদের হাতে সম্মিলিতভাবে সব সময় ৩০ শতাংশ শেয়ার থাকা বাধ্যতামূলক। এ আইনের কারণে কোম্পানিটির উদ্যোক্তা–পরিচালকদের শেয়ার বাইরে বিক্রি বা হস্তান্তরের সুযোগ নেই। কারণ, তাতে উদ্যোক্তা–পরিচালকদের শেয়ারের ন্যূনতম অংশীদারি কমে যাবে। সে ক্ষেত্রে আইন লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটবে। এ কারণে কোম্পানির উদ্যোক্তাদের একজন হিসেবে কামরুন নাহার তাঁর শেয়ার স্বামীকে হস্তান্তর করছেন, যাতে উদ্যোক্তা–পরিচালকদের শেয়ার ৩০ শতাংশের নিচে নেমে না যায়।
জানতে চাইলে শামীম আহসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার স্ত্রী বর্তমানে কোম্পানির সঙ্গে সম্পৃক্ত নেই। তিনি নিজে তাঁর ব্যবসা পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত। এ কারণে তিনি তাঁর নামে থাকা শেয়ার আমাকে “উপহার” হিসেবে হস্তান্তর করেছেন।’ শামীম আহসান আরও জানান, ‘আমরা সম্প্রতি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যাঁরা কোম্পানির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত থাকবেন, শেয়ারের মালিকানা তাঁদের মধ্যে বণ্টন করা হবে। কোম্পানির কর্মকর্তারাও সেই শেয়ারের মালিক হওয়ার সুযোগ পাবেন।’
ই–জেনারেশন ২০২১ সালে বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলামের মেয়াদকালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির অনুমোদন পায়। কোম্পানিটি প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিওর মাধ্যমে শেয়ারবাজার থেকে ১৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করে। যদিও কোম্পানিটি তালিকাভুক্তির ক্ষেত্রে ডিএসইর আপত্তি ছিল। কিন্তু শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলামের সিদ্ধান্তের কাছে সেই আপত্তি টেকেনি।
ঢাকার বাজারে ই–জেনারেশনের শেয়ারের দাম এখন গত দুই বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে। গত বছরের ১৬ মে এর শেয়ারের বাজারমূল্য সর্বোচ্চ ৫২ টাকায় উঠেছিল। তার আগের এক বছর কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ৪৫ টাকার ঘরে ছিল। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার দিন শেষে এই শেয়ারের দাম কমে ২০ টাকা ৬০ পয়সায় নেমে আসে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ ম ম আহস ন উপহ র দ
এছাড়াও পড়ুন:
ডিএসইতে ৭৫ শতাংশ শেয়ার-মিউচুয়াল ফান্ডের দরপতন
চলতি সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবার (৩ নভেম্বর) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচকের বড় পতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। লেনদেনে শেষে ডিএসইতে এ দিন ৩০০টি বা ৭৫.৩৮ শতাংশের বেশি শেয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দরপতন হয়েছে।
এ দিন আগের কার্যদিবসের চেয়ে ডিএসইতে লেনদেন কমলেও সিএসইতে কিছুটা বেড়েছে। তবে উভয় পুঁজিবাজারে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দাম কমেছে।
আরো পড়ুন:
৭ কোটি টাকা সংগ্রহে লিও আইসিটি ক্যাবলসের কিউআইও’র আবেদন
বিএসইসির চেয়ারম্যানের সঙ্গে আইসিএসবির প্রতিনিধিদলের সাক্ষাৎ
বাজার পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, অনেক দিন ধরে পুঁজিবাজারে লেনদেনের শুরুতে সূচকের উত্থান দেখা গেলেও লেনদেন শেষে তা পতনে রূপ নেয়। সোমবার সকাল থেকেই ডিএসইএক্স সূচকের নিম্নমুখী প্রবণতায় লেনদেনের শুরু হয়। লেনদেনের শেষ হওয়ার আগমুহূর্ত পর্যন্ত তা অব্যাহত ছিল। তবে গত কয়েক মাসের ব্যবধানে পুঁজিবাজারে লেনদেন অনেক কমে গেছে।
ডিএসই ও সিএসই সূত্রে জানা গেছে, দিনশেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ৫৪.৮৭ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৬১ পয়েন্টে। ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১২.৩৬ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৬৬ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ২১.৯৪ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৯৬০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
ডিএসইতে মোট ৩৯৮টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে ৪৫টি কোম্পানির, কমেছে ৩০০টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৫৩টির।
ডিএসইতে মোট ৫১৮ কোটি ৬২ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৫৪৪ কোটি ৭৬ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট।
অন্যদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সিএসসিএক্স সূচক আগের দিনের চেয়ে ৪৯.৫৯ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৮ হাজার ৭৭৬ পয়েন্টে। সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৮৭.৯৭ পয়েন্ট কমে ১৪ হাজার ২২৫ পয়েন্টে, শরিয়াহ সূচক ২.১৬ পয়েন্ট কমে ৮৯৬ পয়েন্টে এবং সিএসই ৩০ সূচক ৪.২৫ পয়েন্ট কমে ১২ হাজার ৬৬৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
সিএসইতে মোট ১৯৩টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে ৪২টি কোম্পানির, কমেছে ১২৬টির এবং অপরিবর্তিত আছে ২৫টির।
সিএসইতে ২৪ কোটি ৫৩ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ১৬ কোটি ৫১ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট।
ঢাকা/এনটি/বকুল