Prothomalo:
2025-06-15@13:51:13 GMT

সবাইকে ‘বস’ বানাবে এআই

Published: 26th, April 2025 GMT

যাঁরা কর্মীদের বস বা প্রধান হওয়ার আকাঙ্ক্ষা রাখেন, তাঁদের জন্য সুখবর দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফট। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ‘ভবিষ্যতে আমরা সবাই বস হতে পারি। আমাদের অধীনে থাকবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই কর্মী বাহিনী।’

মাইক্রোসফটের পক্ষ থেকে নতুন ধরনের ব্যবসার উত্থানের পূর্বাভাস দেওয়া হচ্ছে। একে বলা হচ্ছে ‘ফ্রন্টায়ার ফার্ম’। এর আওতায় একজন কর্মী স্বয়ংক্রিয় কৃত্রিম বুদ্ধিমান এজেন্ট বা প্রতিনিধিকে কাজ করার জন্য নির্দেশনা দেবেন। মাইক্রোসফটের মতে, প্রত্যেকে এআই প্রতিনিধির বস হয়ে যাবেন।

এ সপ্তাহে মাইক্রোসফটের নির্বাহী জ্যারেড স্পাতারো এক ব্লগ পোস্টে লিখেছেন, ‘এআই প্রতিনিধিদের কর্মী বাহিনীতে যোগদানের হার ক্রমবর্ধমান। এর সঙ্গে সঙ্গে আমরা এসব প্রতিনিধির বসের উত্থান দেখতে পাব। এই বস এমন একজন হবেন, যিনি এআই প্রতিনিধি তৈরি করবেন, তাঁদের প্রতিনিধিত্ব করার পাশাপাশি এগুলো পরিচালনা করবেন। তিনি বিভিন্ন ক্ষেত্রে এআইয়ের প্রভাব বাড়াবেন এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যুগে নিজের ক্যারিয়ারের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারবেন।’

মাইক্রোসফটের নির্বাহী আরও বলেন, ‘বোর্ডরুম থেকে শুরু করে সম্মুখসারির কর্মী পর্যন্ত প্রত্যেক কর্মীকে এআই প্রতিনিধি-চালিত স্টার্টআপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার (সিইও) মতো চিন্তা করতে হবে।’

মাইক্রোসফট তাদের বার্ষিক ওয়ার্ক ট্রেন্ড ইনডেক্স প্রতিবেদনে বলেছে, এআই প্রতিনিধি চালিত কোম্পানিগুলো দ্রুত বড় হয়ে উঠবে, তৎপরতার সঙ্গে কাজের পাশাপাশি এবং দ্রুত প্রতিষ্ঠানের মূল্যায়ন বাড়ায়।

মাইক্রোসফট বলেছে, জ্ঞানী থেকে শুরু করে শিক্ষাবিদ এবং আইনজীবী পর্যন্ত বিভিন্ন পেশার লোকজন সাধারণত জ্ঞান খাটানোর কাজ করে থাকেন। এই জ্ঞান খাটানোর কাজে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রভাব সফটওয়্যার উন্নয়নের মতোই হবে। কোডিং সহায়তা থেকে শুরু করে প্রতিনিধিদের কাজ সম্পাদনের দিকে বিবর্তিত হবে।

সরবরাহ শৃঙ্খলে একজন কর্মীর ভূমিকার উদাহরণ ব্যবহার করে মাইক্রোসফট বলেছে, এই প্রতিনিধিরা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সব ধাপের কাজ পরিচালনা করতে পারে। আর কর্মীরা এ সিস্টেমকে পরিচালনা করেন এবং সরবরাহকারীদের সঙ্গে সম্পর্ক ঠিক রাখেন।

মাইক্রোসফট স্বায়ত্তশাসিত এআই এজেন্ট অথবা এমন সরঞ্জামগুলোর মাধ্যমে কর্মক্ষেত্রে এআই বাস্তবায়নের ওপর জোর দিচ্ছে, যা মানুষের হস্তক্ষেপ ছাড়াই কাজ সম্পাদন করতে পারে। গত বছর মাইক্রোসফটের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়, তাদের কোপাইলট স্টুডিও যাঁরা নিয়েছেন, তাঁরা সম্ভাব্য এআই প্রতিনিধি পাবেন। এর মধ্যে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ম্যাকেনসিও রয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

দেড় শ বছরের পুরোনো রিয়াজউদ্দিন বাজারে বছরে হাজার কোটি টাকার কেনাবেচা

ভোরের আলো ফোটার আগেই শুরু হয় শ্রমিকদের ব্যস্ততা। রাত থেকে ভিড় করে ট্রাকের সারি। কোনোটিতে সবজি, কোনোটিতে চাল আবার কোনোটিতে বিভিন্ন গৃহস্থালি পণ্য। দিন গড়াতে একে একে খোলা হয় বাজারে থাকা কাপড়, মুঠোফোন, জুতা, গৃহস্থালি পণ্যসহ অন্তত কয়েক শ পণ্যের দোকান। বাজারের ভেতরে দোকানে দোকানে চলে বেচাকেনা আর হিসাব-নিকাশ। চট্টগ্রাম নগরের রিয়াজউদ্দিন বাজারে এই চিত্র প্রতিদিনের।

নগরের ঐতিহ্যবাহী পাইকারি ও খুচরা এই বাজারের বয়স ১৫০ বছরের বেশি। শুরুতে এক জমিদারবাড়ির পাশে ছোট বাজার ছিল এটি। পরে তা রূপ নেয় দেশের বড় বাজারের একটিতে। একসময় নগরের সব বাজারে পণ্য সরবরাহ করা এই বাজার গত এক দশকে কিছুটা জৌলুশ হারিয়েছে। এরপরও বাজারটির সাড়ে তিন হাজারের বেশি দোকানে প্রতিবছর গড়ে এক হাজার কোটি টাকার ব্যবসা হয় বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

জানা গেছে, শেখ মোহাম্মদ ওয়াশীল সিদ্দিকি নামের এক ব্যক্তি তাঁর ছেলে শেখ রেয়াজুদ্দিন সিদ্দিকির নামে এই বাজারের নামকরণ করেন। বাজারটি প্রায় শত বছর ধরে জমজমাট। তবে নগরের বিভিন্ন এলাকায় বাজার গড়ে ওঠার কারণে এখন এই বাজারে ব্যবসার চাপ কমেছে।

প্রবীণ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এবং বিভিন্ন ইতিহাসবিষয়ক বই ঘেঁটে জানা গেছে, চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনের (বটতলি স্টেশনের) উত্তর পাশে নগরের বাইশ মহল্লার কবরস্থানের পাহাড়টির নাম কুমদান পাহাড়। এই পাহাড়ের পূর্ব দিক ও স্টেশন রোডের উত্তর দিকের সম্পূর্ণ এলাকাটি ছিল জমিদার দেওয়ান বৈদ্যনাথের জমিদারির অন্তর্গত। সেখানে তাঁর বাগানবাড়ি ও সেগুনবাগিচা ছিল। এই এলাকাই বর্তমানে রিয়াজউদ্দিন বাজার।

আবদুল হক চৌধুরীর বন্দর শহর চট্টগ্রাম বই থেকে জানা যায়, দেওয়ান বৈদ্যনাথের উত্তরাধিকারীদের কাছ থেকে এলাকাটি চট্টগ্রামের প্রথম মুসলমান বিএবিএল (আইন স্নাতক) শেখ রেয়াজুদ্দিন সিদ্দিকির বাবা শেখ মোহাম্মদ ওয়াশীল সিদ্দিকি কিনে নেন। রেয়াজুদ্দিনের সময়ে এর প্রথম উন্নয়ন হয়েছিল। তাই এলাকাটির নামকরণ হয়েছে ‘রেয়াজুদ্দিন বাজার’।

বর্তমানে দেওয়ান বৈদ্যনাথের বাড়ির অস্তিত্ব নেই। সময়ের পরিক্রমায় রেয়াজুদ্দিন বাজারও পরিচিত পায় রিয়াজউদ্দিন বাজার নামে। এখন বিশাল এলাকাজুড়ে এই বাজার অবস্থিত। বাজারে প্রবেশের অন্তত ১৫টি পথ রয়েছে। উত্তরে এনায়েতবাজার, দক্ষিণে স্টেশন রোড, পূর্বে জুবলি রোড এবং পশ্চিমে বিআরটিসির বাসস্ট্যান্ড—এ বিশাল এলাকা নিয়েই বর্তমান রিয়াজউদ্দিন বাজার।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, নগরের স্টেশন রোড এলাকা থেকে বাজারে অন্তত ছয়টি সড়ক রয়েছে। এর মধ্যে চৈতন্যগলি ধরে এগিয়ে গেলে সব সবজির আড়তের দেখা মেলে। এর পাশে আজাদ হোটেলের পাশের দুটি পথ ধরে ঢুকলে ইলেকট্রনিক ও অন্যান্য পণ্যের বাজার। নূপুর মার্কেটের পাশ দিয়ে কাপড়ের দোকানগুলো। জুবলি রোডের পাশ দিয়ে সবজি ও মুরগি বাজার। এই পথ আরও কয়েকটি গলি হয়ে আবার স্টেশন রোডে সংযুক্ত।

কমেছে আড়তের হাঁকডাক

রিয়াজউদ্দিন বাজার বিখ্যাত মূলত সবজির আড়তের জন্য। নগরের সব খুচরা-পাইকারি বাজারে এখানকার আড়ত থেকে সবজি সরবরাহ করা হয়। একসময় উপজেলাগুলোতেও সবজি সরবরাহ হলেও এখন সেই জৌলুশ কমেছে। ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ২০০টি সবজির আড়ত রয়েছে বাজারে।

এসব আড়তের একেকটির বয়সও অন্তত ৫০-৬০ বছর। প্রতিদিন রাত থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ব্যাপারীরা রিয়াজউদ্দিন বাজারে সবজি নিয়ে আসেন। এসব সবজি কমিশন ভিত্তিতে বিক্রি করেন আড়তদারেরা। সবজিভেদে কমিশনের পরিমাণও ভিন্ন। যেমন আলু ছাড়া অন্যান্য সবজির ক্ষেত্রে প্রতি ১০০ টাকায় ৬ টাকা ২৫ পয়সা কমিশন। আলু-পেঁয়াজের ক্ষেত্রে সেটি প্রতি কেজিতে ৫০ পয়সার আশপাশে। আড়তদার সমিতির তথ্যমতে, সবজির বাজারেও আগের জৌলুশ নেই। তবু এখনো বছরে ৫০ কোটি টাকার বেশি ব্যবসা হয় এসব আড়তে।

প্রায় ২৫ বছর ধরে রিয়াজউদ্দিন বাজারের আড়তে ব্যবসা করছেন ফারুক শিবলী। বর্তমানে রিয়াজউদ্দিন বাজার আড়তদার কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক তিনি। ফারুক শিবলী বলেন, গত এক দশকে আড়তগুলো বদলে গেছে। এখন আর আগের মতো ব্যস্ততা নেই। নগরের অনেক বাজারে ছোট ছোট পাইকারি আড়ত হয়েছে। তাঁরা ব্যাপারীদের কাছ থেকে মালামাল কিনে বিক্রি করে।

হাজার কোটি টাকার বেচাকেনা

সবজি ছাড়াও রিয়াজউদ্দিন বাজারে রয়েছে মাছ, মাংস, চাল, ফল, মুদি, পানসুপারি, মসলা, ইলেকট্রনিকস, মুঠোফোন, অন্দরসজ্জা সামগ্রী, স্টেশনারিসহ অন্তত ১০০ ধরনের দোকান। সব কটির আলাদা আলাদা সমিতি থাকলেও সব সমিতি রিয়াজউদ্দিন বাজার বণিক কল্যাণ সমিতির আওতাধীন। সমিতির তথ্য অনুযায়ী, বাজারে ছোট–বড় ২০টি সমিতি তাঁদের আওতায়, যেখানে দোকান সংখ্যা সাড়ে তিন হাজারের বেশি।

বণিক সমিতির তথ্য অনুযায়ী, পণ্যের এমন বৈচিত্র্যময় বাজার সারা দেশে খুবই কমই আছে। রিয়াজউদ্দিন বাজারে সব ধরনের পণ্যই পাওয়া যায়। সব মিলিয়ে রিয়াজউদ্দিন বাজারে বছরে বেচাকেনা ১ হাজার কোটি টাকার বেশি। যদিও কাগজে–কলমে এর সুনির্দিষ্ট হিসাব নেই।

রিয়াজউদ্দিন বাজার বণিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি ছালামত আলী বলেন, আগের সেই জৌলুশ না থাকলেও এখনো চট্টগ্রামের পাইকারি বাজার হিসেবে এ বাজার এগিয়ে। ঈদে পোশাক বিক্রি ছাড়াও সারা বছর সবজি, মুদি, গৃহস্থালি পণ্যসহ সব মিলিয়ে বছরে ৭০০ কোটি টাকার বেশি বেচাকেনা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সুপারম্যানের কাছে আছে পৃথিবীর শক্তি সংকটের সমাধান
  • দেড় শ বছরের পুরোনো রিয়াজউদ্দিন বাজারে বছরে হাজার কোটি টাকার কেনাবেচা
  • ইরান হরমুজ প্রণালি বন্ধ করলে কী কী ঘটতে পারে?
  • ইরান–ইসরায়েলের পাল্টাপাল্টি হামলা রূপ নিতে পারে দীর্ঘমেয়াদি সংঘাতে
  • ইরানে হামলার আগে গোপনে ইসরায়েলে হেলফায়ার ক্ষেপণাস্ত্র পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র
  • ভারত থেকে আইফোন রপ্তানি কেন বাড়ছে
  • সুনামগঞ্জে তাজা গ্রেনেড উদ্ধারের পর নিষ্ক্রিয় করল সেনাবাহিনী
  • কমেছে সবজির দাম
  • বাজারে সবজির সরবরাহ বেড়েছে, নিম্নমুখী চালের দাম
  • ঈদের পর ঢিলেঢালা বাজার, পণ্যের দামও কমেছে