জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গণহত্যা এবং প্ররোচনার অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ৪০৮ জনকে আসামি করে আরও একটি মামলা হয়েছে।

মামলায় আসামিদের মধ্যে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী, উপদেষ্টা, এমপি এবং দল ও অঙ্গসংগঠনের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের হুকুমের আসামি করা হয়েছে। পাশাপাশি সাবেক তিন আইজিপি, স্বরাষ্ট্র সচিব, সাবেক ডিএমপি কমিশনারসহ শতাধিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সরাসরি হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর, সাবেক মেয়র, দুদকের সাবেক চেয়ারম্যান, সাবেক নির্বাচন কমিশনার, আমলা, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক, আইনজীবী, অভিনেতা, ব্যাংক মালিকের বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ড ভিন্ন খাতে নেওয়ার জন্য আর্থিক সহযোগিতার অভিযোগ আনা হয়েছে।

মামলায় আসামির তালিকায় রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন আমু, ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, সালমান এফ রহমান, আনিসুল হক, জাহাঙ্গীর কবির নানক, তাজুল ইসলাম, হাছান মাহমুদ, কামরুল ইসলাম, ফারুক খান, আসাদুজ্জামান নূর, জাহিদ মালেক স্বপন, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, নূরে আলম চৌধুরী লিটন, সাবের হোসেন চৌধুরী, লোটাস কামাল, নওফেল চৌধুরী, শাজাহান খান, আব্দুর রাজ্জাক, শেখ হেলাল, তারানা হালিম, সানজিদা খানম, ডা.

প্রাণ গোপাল দত্ত, নিক্সন চৌধুরী, নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন, শামীম ওসমান, নাজমুল হাসান পাপন, কাজী নাবিল আহমেদ, এ কে আজাদ, তারেক সিদ্দিকী, তৌফিক-ই-ইলাহী, গওহর রিজভী, মশিউর রহমান, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর, পরিচালক সাদাত সোবহান তানভীর, এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম, দুদকের সাবেক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ, মোহাম্মদ মইনদ্দিন আব্দুল্লাহ, অভিনেতা ইরেশ যাকের, সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক।

আসামি সাংবাদিকদের মধ্যে রয়েছেন ইকবাল সোবহান চৌধুরী, শাবান মাহমুদ, আরিফ হাসান, মোজাম্মেল হক বাবু, নাঈমুল ইসলাম খান, পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়, নঈম নিজাম, সুভাষ সিংহ রায়, শ্যামল দত্ত, ফারজানা রুপা, মুন্নী সাহা, জ ই মামুন, শাকিল আহমেদ, মিথিলা ফারজানা, মনজুরুল আহসান বুলবুল, হারুন উর রশীদ, নাসিরুদ্দীন সাথী, নবনীতা চৌধুরী, আবুল কালাম আজাদ, ওমর ফারুক, শফিকুর রহমান, ফরিদা পারভীন ও মাসুদা ভাট্টি।

আইনজীবীদের মধ্যে রয়েছেন সৈয়দ রেজাউর রহমান, নজিবুল উল্যাহ হিরু, দুদকের সাবেক দুই প্রসিকিউটর খুরশীদ আলম খান ও মোশাররফ হোসেন কাজল।

সাবেক তিন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমেদ, কে এম নুরুল হুদা ও কাজী হাবিবুল আউয়াল। ইসির সাবেক তিন সদস্য মোহাম্মদ সাদিক, হেলাল উদ্দিন আহমদ ও ড. সাদিক।

৫ আগস্ট রাজধানীর মিরপুরে বিএনপিকর্মী মাহফুজুল আলম শ্রাবণকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তাঁর ভাই মোস্তাফিজুর রহমান বাপ্পী ঢাকার সিএমএম আদালতে ২০ এপ্রিল মামলা করেন। ওই দিন আদালত তাঁর জবানবন্দি নিয়ে অভিযোগটি মিরপুর মডেল থানার ওসি নিয়মিত মামলা হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন। এজাহারে অভিযুক্তদের চারটি ক্যাটেগরিতে ভাগ করে সবার সম্পৃক্ততা ও সুনির্দিষ্ট অপরাধের ধরন উল্লেখ করা হয়েছে। বর্তমানে মামলাটি মিরপুর মডেল থানার ওসি সাজ্জাদ রোমন তদন্ত করছেন।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, শ্রাবণের বাবার নাম মোশাররফ হোসেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি নওগাঁ সদর উপজেলার দোগাছী এলাকায়। তিনি মিরপুরে থাকতেন। গত ৫ আগস্ট দুপুরে ছাত্র-জনতার শান্তিপূর্ণ মিছিল মিরপুর শপিং কমপ্লেক্স ও মিরপুর মডেল থানার মধ্যবর্তী রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় আসামিরা তাঁকে থানার সামনে গুলি করে। স্থানীয়রা মুমূর্ষু অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে পাশের একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে স্বজন ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে দাফন করেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ল ইসল ম র রহম ন আহম দ

এছাড়াও পড়ুন:

ধর্ষণের শিকার শিশুটির চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন বিএনপি নেতা অমিত

যশোরের চৌগাছায় ধর্ষণের শিকার ৭ বছরের সেই শিশুর চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। একই সঙ্গে শিশুটির আইনি সুবিচার পেতে জেলার জাতীয়তাবাদী আইনজীবীদের নির্দেশনা দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার যশোর জেনারেল হাসপাতালে শিশুটিকে দেখতে গিয়ে তিনি এই ঘোষণা দেন। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শিশুটির চিকিৎসার ব্যাপারে তিনি কথা বলেন।

বুধবার যশোরের চৌগাছায় বাড়ির পাশে শিশুটিকে ধর্ষণ করে প্রতিবেশী দাদা। এরপর শিশুটিকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিশুটির মা থানায় অভিযোগ দিলে অভিযুক্ত মিজানুর রহমানকে (৫৫) আটক করে পুলিশ। বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে পাঠালে বিচারক কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

শিশুটির মা হাসপাতালে জানান, তার মেয়েটি বুধবার বিকেলে বাড়ির পাশে খেলা করছিল। এসময় শিশুটিকে একা পেয়ে মিজানুর জোর করে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করে। এরপর মেয়েটি রক্তাক্ত অবস্থায় বাড়িতে ফিরে কান্না করছিল। তার কাছ থেকে ঘটনা শুনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতালে আনা হয়। তার চিকিৎসা চলছে। 

যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. হোসাইন সাফায়েত বলেন, শিশুটিকে আশাঙ্কাজনক অবস্থায় আনা হয়। তার শরীরের ক্ষত স্থানে অপারেশন করা হয়েছে। এখন শিশুটিকে অবজারভেশনে রাখা হয়েছে। এখন শঙ্কামুক্ত। 

চৌগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, শিশুটির শরীরে প্রাথমিকভাবে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে, রিপোর্ট পাওয়ার পর আসল ঘটনা জানা যাবে। ঘটনার পরেই অভিযুক্তকে আটক করা হয়েছে। অভিযুক্ত আসামিকে বিচারক কারাগারে প্রেরণ করেছে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিশুটির চিকিৎসার খোঁজ খবর নিতে যান বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। এ সময় তার সঙ্গে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন, বিএনপিপন্থী চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) যশোরের নেতৃবৃন্দ ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এসময় বিএনপি নেতা অমিত শিশুর চিকিৎসার দায়িত্ব নেন এবং শিশুটির পরিবার আইনি বিচার পেতে  জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নেতৃবৃন্দদের নির্দেশনা দেন।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন বলেন, শিশুটির সঙ্গে পাশবিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। শিশুটির বাবা বিদেশ থাকে। এই পরিবারে কোন পুরুষ সদস্য নেই। তাছাড়া তারা গরীব। ঘটনাটি জানার পর বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের নেতৃত্বে আমরা শিশুটিকে দেখতে যাই। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দণ্ডাদেশ বহালের রায়ের বিরুদ্ধে ১০ আসামির আপিল ও লিভ টু আপিল
  • যে ‘ধর্মীয় অনুপ্রেরণায়’ ইরানে এই হামলা চালাল ইসরায়েল
  • দক্ষিণ ভারতের নিষ্পেষিত মুসলিম নারীদের কণ্ঠস্বর
  • সুবিচার মিলবে কত বছরে
  • ধর্ষণের শিকার শিশুটির চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন বিএনপি নেতা অমিত
  • রেফারেন্স ও মতামতপ্রক্রিয়া নিয়ে রিট খারিজ, আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন
  • আইনজীবী তালিকাভুক্তির লিখিত পরীক্ষা