হারকিউলিস-করোনা বোরেলিস গ্রেট ওয়াল মূলত বিভিন্ন গ্যালাক্সির বিশাল জালিকা, যা মহাবিশ্বের সবচেয়ে বড় কাঠামো। এই কাঠামোর আকার এতই বিশাল যে সেটির পুরো অংশ কোনো মানুষের পক্ষে দেখা সম্ভব নয়। এত দিন ধারণা করা হতো যে হারকিউলিস-করোনা বোরেলিস গ্রেট ওয়াল এক হাজার কোটি আলোকবর্ষ এলাকাজুড়ে বিস্তৃত। তবে নতুন এক গবেষণায় বলা হয়েছে, হারকিউলিস-করোনা বোরেলিস গ্রেট ওয়াল এক হাজার কোটি নয়, দেড় হাজার কোটি আলোকবর্ষ এলাকাজুড়ে বিস্তৃত হতে পারে।

সুপারনোভা বিস্ফোরণের মাধ্যমে সৃষ্ট গামা-রে বার্স্ট বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা গ্রেট ওয়ালের নতুন দৈর্ঘ্য নির্ধারণ করতে সক্ষম হয়েছেন। গবেষণার তথ্যমতে, হারকিউলিস-করোনা বোরেলিস গ্রেট ওয়াল ক্লাস্টারটি পূর্বের ধারণার চেয়ে আকারে বেশ বড়। গবেষকেরা রেডশিফটসহ ৫৪২টি গামা-রে বার্স্ট পরীক্ষা করেছেন, যা প্রায় দেড় হাজার কোটি আলোকবর্ষজুড়ে বিস্তৃত।

২০১৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও হাঙ্গেরির একদল বিজ্ঞানী হারকিউলিস-করোনা বোরেলিস গ্রেট ওয়াল আবিষ্কার করেন। এই বিশাল কাঠামোর গঠন ও উৎপত্তির তথ্য এখনো রহস্যে ঘেরা। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, এত বড় কাঠামো মহাবিশ্বের বর্তমান মডেল অনুসারে অল্প সময়ে গঠিত হওয়া কঠিন। আর তাই হারকিউলিস-করোনা বোরেলিস গ্রেট ওয়াল মহাবিশ্বের বৃহৎ আকারের কাঠামো ও গ্যালাক্সির বিবর্তন সম্পর্কে প্রচলিত জ্ঞানকে চ্যালেঞ্জ করছে।

গত ফেব্রুয়ারি মাসে বিজ্ঞানীরা কুইপু নামে আরেকটি বৃহৎ কাঠামো আবিষ্কারের দাবি করেছেন। তাঁদের দাবি, এই কাঠামো ১ হাজার ৩০০ কোটি আলোকবর্ষ এলাকাজুড়ে বিস্তৃত। আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির চেয়ে ১৩ হাজার গুণ বড় এই কাঠামো।

সূত্র: এনডিটিভি

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

‘আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব’

ঘড়ির কাঁটায় তখন দুপুর ২টা ২০ মিনিট। মাথার ওপর প্রখর রোদের উত্তাপ। প্রচণ্ড গরমে ত্রাহি অবস্থায় একটু বিশ্রাম নিতে গাছের ছায়ার খোঁজে ক্লান্ত পথিক। এমন সময় ঘর্মাক্ত শরীরে একটি ভবন নির্মাণের কাজ করতে দেখা গেল কয়েকজন শ্রমিককে। তাদের একজন তোঁতা মিয়া, অপরজন হাবিবুল।

হাবিবুল পাথর ভরেই যাচ্ছেন, তোঁতা মিয়া সেগুলো মাথায় করে একের পর এক টুড়ি ছাদ ঢালাইয়ের জন্য পৌঁছে দিচ্ছেন নির্দিষ্ট স্থানে। সেখানেও বালু-পাথরের মিশ্রণ করছেন আরও কয়েকজন। তাদের কর্মযজ্ঞের এক ফাঁকে কথা হয় তোঁতা মিয়ার সঙ্গে।

আলাপকালে তোঁতা মিয়া বলেন, ‘সারাদিন কাম (কাজ) কইরা ৫০০ ট্যাহা (টাকা) হাজিরা পাই। এইডি দিয়া কোনোমতে বউ-পুলাপান নিয়া দিন পার করতাছি। মে দিবস-টিবস কী কইতারতাম না। আমরার মতো গরিব মানুষ কাম না করলে পেডে ভাত জুটতো না এইডাই কইতারবাম।’

গতকাল বুধবার ঈশ্বরগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণকাজ করার সময় এসব কথা বলেন তোঁতা মিয়া (৪৫)। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহ সদর উপজেলার আকুয়া এলাকায়। এ সময় কথা হয় আরেক নির্মাণ শ্রমিক একাদুল মিয়ার সঙ্গে। একাদুলও জানেন না মে দিবস কী। তিনি বলেন, ‘এই কাম কইরা খাইয়া-না খাইয়া বউ-পুলাপান লইয়া কোনোরহমে দিন পার করতাছি। বর্তমান বাজারো জিনিসপাতির দাম বাড়লেও আমরার মজুরি বাড়ে না। পাঁচ বছর আগেও যা পাইতাম, অহনও তাই পাই।’ তিনি বলেন, ‘কয়েক ট্যাহা সঞ্চয় করবাম এই বাও (উপায়) নাই। অসুখ অইয়া চার দিন ঘরে পইড়া থাকলে না খাইয়া থাহন লাগব। আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব?’

আজ বৃহস্পতিবার মহান মে দিবস। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের এই দিনটি সারাবিশ্বের শ্রমিক শ্রেণির কাছে গুরুত্বপূর্ণ। বহির্বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হয় নানা আয়োজনে। কিন্তু যাদের অধিকার আদায়ের জন্য এ দিনটি পালন করা হয়– তারাই জানেন না দিবসটি সম্পর্কে। তাদের আরেকজন দিনমজুর রাজন মিয়া। রাজন জানান, এসব দিবসে তাদের মতো গরিব মানুষের কোনো লাভ-লোকসান নেই। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ