Prothomalo:
2025-08-01@21:58:15 GMT

রোমান ব্যবসায়ীর ইসলাম গ্রহণ

Published: 29th, April 2025 GMT

একদিন হজরত ওমর ফারুক (রা.) মসজিদে নববিতে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এমন সময় হঠাৎ এক রোমান ব্যবসায়ী এসে ঠিক তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে বলল, ‘আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশাহাদু আন্না মুহাম্মাদান রাসুলুল্লাহ’। ওমর ফারুক (রা.) জিজ্ঞেস করলেন, ‘কী ব্যাপার, কী হলো তোমার?’ তিনি বললেন, ‘আমি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য মুসলমান হয়েছি।’

ওমর (রা.

) জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোমার ইসলাম গ্রহণের বিশেষ কোনো কারণ আছে কি?’ তিনি বললেন, হ্যাঁ! আমি তাওরাত, বাইবেল, জাবুরসহ আগের নবীদের অনেক কিতাব পড়েছি। সম্প্রতি একজন মুসলিম বন্দী কোরআনের একটি আয়াত তিলাওয়াত করছিলেন। তা শুনে আমি বুঝতে পারলাম যে, এই ছোট্ট একটি আয়াতে সব প্রাচীন কিতাবের সারবস্তু চলে এসেছে। নিশ্চিত হলাম যে, এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে এসেছে। বলা যায় আয়াতের বরকতেই ইসলাম গ্রহণ করেছি।’

আরও পড়ুনঅন্য নবীদের কথা মহানবী (সা.) কীভাবে বলতেন২২ এপ্রিল ২০২৫

ওমর (রা.) জিজ্ঞেস করলেন, ‘কোন আয়াত সেটি?’

রোমান ব্যবসায়ী আয়াতটি তিলাওয়াত করেন, ‘যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করে, আল্লাহকে ভয় করে ও তাঁর শাস্তি থেকে সাবধান থাকে, তারাই সফলকাম।’ (সুরা নুর, আয়াত: ৫২)

আয়াতটি পড়ার পর রোমান ব্যবসায়ী আয়াতের একটি ব্যাখ্যা দিয়েছেন। যে বিষয়টি তার মনে দারুণভাবে রেখাপাত করেছে। তিনি বললেন, ওই আয়াতে চারটি বিষয়ের কথা বলা হয়েছে।

১. ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর আনুগত্য করে’ এটা আল্লাহর ফরজ বিধানাবলির সঙ্গে সম্পর্কিত। ২. ‘যে ব্যক্তি রাসুলের অনুসরণ করে’ এটা নবীর সুন্নতের সঙ্গে সম্পর্কিত। ৩. ‘যে ব্যক্তি আল্লাহকে ভয় করে’ এটি অতীত জীবনের সঙ্গে সম্পর্কিত। অর্থাৎ অতীত জীবনে যত অপরাধ হয়েছে, তার জন্য আল্লাহকে ভয় করে। ৪. ‘যে অবাধ্য পথ পরিহার করে তাকওয়ার পথে চলে’ এটি ভবিষ্যৎ জীবন সম্পর্কিত। কারও মধ্যে যখন এই চারটি বিষয় সন্নিবেশিত হবে, তখন সে-ই চূড়ান্ত সফলতা অর্জন করতে পারবে। কারণ, এ চারটি বিষয়ের পুরো ইসলাম চলে এসেছে।

দীনের সব বিষয় ছোট্ট একটি আয়াতে দেখে তার মন দারুণভাবে আলোড়িত হয়েছে।

ওমর (রা.) রোমান ব্যবসায়ীর এ কথা শুনে বলেন যে, নবীজির (সা.) কথায় এর সত্যতা আছে। কারণ, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আমাকে সংক্ষিপ্ত শব্দ অথচ তার অর্থ ব্যাপক, এমন কথা বলার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১,০৫৪)

আরও পড়ুনসন্তানকে বদ দোয়া করবেন না২১ এপ্রিল ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ম ন ব যবস য় আল ল হ ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস

স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।

মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’

সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।

অনাহারে মৃত্যু ১৫৪

গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।

গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।

ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩

জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।

বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।

গাজায় স্টিভ উইটকফ

শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ