১৯৯১–এর ঘূর্ণিঝড়ে নিজেদের এক মেয়েসহ পরিবারের আটজন সদস্যকে হারান আবুল কালাম ও মরিয়ম বেগম দম্পতি। ৩৪ বছর পরও এখনো ভয়াল সেই স্মৃতি ভুলতে পারেননি তাঁরা। এখনো ঘূর্ণিঝড়ের কথা মনে পড়লে দুজন আঁতকে ওঠেন।

আবুল কালাম ও মরিয়ম বেগম চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার উপকূলীয় জুঁইদণ্ডী ইউনিয়নের হাজি চাঁদ মিয়া মাঝির বাড়ির বাসিন্দা। গতকাল সোমবার বাড়িতে গিয়ে দেখা হয় দুজনের সঙ্গে। আবুল কালাম ২০১৮ সালে অসুস্থ হয়ে বাক্‌শক্তি হারিয়ে ফেলেছেন। অবশ হয়ে যায় তাঁর দুটি হাতও। তিনি কথা বলতে না পারায় মরিয়ম বেগম ঘটনার বর্ণনা করেন।

মরিয়ম জানান, ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিল রাতে ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন তাঁর স্বামী, এক কন্যা, শ্বশুর-শাশুড়িসহ পরিবারের সদস্যরা। এর মধ্যেই ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে যে যাঁর মতো ছুটতে থাকেন। সকালে মরিয়ম দেখেন, চারপাশে শুধু লাশ আর লাশ। পরনের কাপড় নিয়ে স্বামী-স্ত্রী দুজন স্বজনদের খুঁজতে থাকেন। ঘরের ভেতরেই পান তাঁর মেয়ে, শ্বশুর-শাশুড়ি, ননদ-দেবরসহ পরিবারের ছয় সদস্যের লাশ। পরিবারের আরও দুই সদস্যের সন্ধান আর পাননি। মরিয়ম বলেন, ‘সব কটি লাশ মাটি খুঁড়ে এক কাপড়ে দাফন করা হয়। কাফনের কাপড় ছাড়া লাশগুলো মাটিচাপা দেওয়া হয়।’

নিজের এক মেয়েকে কীভাবে রক্ষা করেন, সেই বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘আমার মেয়ে তানজিনার বয়স তখন চার বছর। তার পরনের কাপড় দাঁতে চেপে ধরে তাকে নিয়ে গাছে উঠে যাই। তখন মনে হয়েছিল, মেয়ে বুঝি মারা গেছে। তবে মেয়ে শেষ পর্যন্ত প্রাণে রক্ষা পেয়েছিল’। মরিয়ম আরও বলেন, ‘এরপর ৩৪ বছর কেটে গেছে। এক মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি, আরেক ছেলের জন্য কনে খুঁজছি। তবু সেই দিনগুলোর কথা ভুলতে পারি না।’

আনোয়ারা উপকূলে ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধের কারণে এখনো জলোচ্ছ্বাসে প্রাণহানির ঝুঁকি রয়ে গেছে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর ব র র সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

ঝিনাইদহে ছেলের হাতে বাবা খুন

ঝিনাইদহে মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলের কোদালের কোপে শাহাদত হোসেন (৬৩) নামের এক কৃষক নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ফয়সাল হোসেনকে (২২) আটক করেছে পুলিশ।

সোমবার (১৬ জুন) সদর উপজেলার গান্না ইউনিয়নের শংকরপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত শাহাদত হোসেন ওই গ্রামের তাইজেল হোসেনের ছেলে।

নিহতের স্বজনেরা অভিযোগ করেন, সকাল ১০টার দিকে শাহাদত হোসেন ছেলে ফয়সাল হোসেনকে সাথে নিয়ে মাঠে কাজ করতে যান। কাজ করার ফাঁকে ফয়সাল কোদাল দিয়ে তার বাবার মাথায় আঘাত করেন। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পরে মৃত বাবাকে মাঠে রেখে বাড়িতে গিয়ে মাকে পুরো ঘটনা জানান ফয়সাল। স্বজনেরা দ্রুত মাঠে গিয়ে শাহাদতের লাশ পড়ে থাকতে দেখে থানায় খবর দেন।

আরো পড়ুন:

কারাগারে ‘ফাঁস নিলেন’ জুলাই-আগস্ট হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার সুজন

মহাসড়কের পাশ থেকে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ফয়সাল হোসেন দুই বছর ধরে মানসিক বিকারগ্রস্ত। পাবনা মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে কিছুদিন আগে বাড়িতে ফিরেছেন।

ঝিনাইদহ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘‘অভিযুক্ত ফয়সালকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় পরবর্তী আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।’’

ঢাকা/শাহরিয়ার/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ