এক সপ্তাহে এভারেস্ট জয় কি সত্যিই সম্ভব
Published: 30th, April 2025 GMT
একটি বাণিজ্যিক কোম্পানি জেনন গ্যাসের সাহায্যে অভূতপূর্ব সময়ে পর্বতারোহীদের বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এভারেস্টের চূড়ায় পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। তবে পর্বতারোহণ ও চিকিৎসাজগতের কিছু মানুষ প্রশ্ন তুলেছেন, এটা অকারণে জীবন বাজি রাখা হয়ে যাবে কি না।
১৯৫৩ সালে প্রথমবার এভারেস্ট জয় করেন তেনজিং নোরগে ও এডমন্ড হিলারি। এভারেস্টের চূড়ায় উঠতে তাঁদের দুই মাসের বেশি সময় লেগেছিল।
উঁচুতে উঠতে থাকলে বাতাসে অক্সিজেন কমতে থাকে। এভারেস্ট জয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে ওঠে বাতাসে অক্সিজেনের স্বল্পতা। হিলারি ও তাঁর দল কমতে থাকা অক্সিজেনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে কয়েক সপ্তাহ ধরে ধীরে ধীরে ওপরে উঠেছেন। বেজক্যাম্পে পৌঁছানোর পর তাঁরা সাত সপ্তাহ ধরে ওঠানামা করে ওপরে দড়ি বেঁধেছেন, মই পেতেছেন, উঁচু থেকে উঁচুতে ক্যাম্প পেতেছেন। এভাবে তাঁরা একটু একটু করে চূড়ার বিরূপ আবহাওয়া মোকাবিলা করেছেন।
উঁচুতে উঠতে থাকলে বাতাসে অক্সিজেন কমতে থাকে। এভারেস্ট জয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে ওঠে বাতাসে অক্সিজেনের স্বল্পতা। হিলারি ও তাঁর দল কমতে থাকা অক্সিজেনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে কয়েক সপ্তাহ ধরে ধীরে ধীরে ওপরে উঠেছেন। বেজক্যাম্পে পৌঁছানোর পর তাঁরা সাত সপ্তাহ ধরে ওঠানামা করে ওপরে দড়ি বেঁধেছেন, মই পেতেছেন, উঁচু থেকে উঁচুতে ক্যাম্প পেতেছেন। এভাবে তাঁরা একটু একটু করে চূড়ার বিরূপ আবহাওয়ার মোকাবিলা করেছেন।এখন শেরপারা মাইলের পর মাইল পথে আগে থেকেই দড়ি টানিয়ে দেন। আর বাণিজ্যিক গাইডিং কোম্পানিগুলো তাদের গ্রাহকদের জন্য নিখুঁত সব ব্যবস্থা করে রাখে। ফলে প্রতিবছর শত শত পর্বতারোহী এভারেস্টের চূড়ায় উঠতে সক্ষম হন।
কিন্তু এত সব সুবিধা থাকার পরও হিলারির প্রথমবার এভারেস্টের চূড়ায় আরোহণে যে সময় লেগেছে, অধিকাংশ পর্বতারোহীরই এখনো তেমন সময়ই লাগে। এভারেস্টের চূড়ায় ওঠার সময়ে নাটকীয় কোনো পরিবর্তন আসেনি।
অনেক অভিযানেই পর্বতারোহীদের চূড়ায় পৌঁছানোর জন্য দুই মাসের মতো সময় লেগে যাবে বলে দেওয়া হয় এবং নিবিড়ভাবে খাপ খাওয়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে এই সময়টা আবহাওয়া, পাহাড়ে মানুষের ভিড় ও পর্বতারোহীর স্বাস্থ্য-সবলতার ওপরও নির্ভর করে।
সাধারণত হেঁটে বেজক্যাম্পে পৌঁছাতে এক সপ্তাহ লাগে। সেখানে পৌঁছানোর পর বেশির ভাগ মানুষের এভারেস্টের চূড়ায় পৌঁছাতে আরও প্রায় ৪০ দিন লাগে। তবে কিছু কিছু কোম্পানি তাদের গ্রাহকদের দুই সপ্তাহের কম সময়ে এভারেস্ট জয়ের প্রস্তাব দিয়ে থাকে।
‘শুধু এরিথ্রোপয়েটিনের পরিমাণ বৃদ্ধির মাধ্যমে কোনো প্রভাব পড়ে না। এই ক্ষেত্রে আসল প্রশ্ন হলো, এটি কি সত্যিই এত অল্প সময়ের মধ্যে রক্তে লোহিত কণিকার উৎপাদন উদ্দীপিত করতে পারে?’অ্যান্ড্রু পিকক, গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চতাজনিত চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ ও অধ্যাপককিন্তু এবার একটি গাইডিং কোম্পানি গ্রাহকদের মাত্র এক সপ্তাহে এভারেস্টে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। তাদের ওই প্যাকেজে যাত্রা শুরু হবে লন্ডন বিমানবন্দর থেকে। লন্ডন থেকে তারা গ্রাহকদের উড়োজাহাজে সরাসরি নেপালের কাঠমান্ডুতে নিয়ে যাবে। তারপর সেখান থেকে হেলিকপ্টারে সরাসরি এভারেস্টের বেজক্যাম্পে উড়িয়ে আনা হবে। সেখান থেকে কয়েক দিন পাহাড় বেয়ে মাউন্ট এভারেস্টের চূড়ায় পৌঁছাবেন। এ জন্য জনপ্রতি ১ লাখ ৭০ হাজার ডলার ব্যয় হবে।
পর্বতারোহীদের জন্য এভারেস্ট জয়ের এই প্রস্তাব দিয়েছেন অস্ট্রিয়ান গাইড লুকাস ফুর্টেনবাখ। এ জন্য তিনি অপ্রত্যাশিত নতুন একটি কৌশল বেছে নিয়েছেন। সেটি হলো শ্বাসের মাধ্যমে জেনন গ্যাস টেনে নেওয়া। এই গ্যাস কখনো কখনো চেতনানাশক হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
অভিযাত্রীদের এমন প্রতিকূল পরিবেশে পড়তে হয়.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সব মাধ্যমে কাজ করতে চান জৌপারী
২০১০ সালে ঢাকায় এসেছেন বান্দরবানের মেয়ে জৌপারী লুসাই। পড়াশোনা নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন, ঘুণাক্ষরেও অভিনয়ে আসার কথা ভাবেননি। ২০১২ সালে এনটিভির টেলিফিল্ম শেষ বলে কিছু নেই দিয়ে প্রথমবার ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান জৌপারী। তখন বিএএফ শাহীন কলেজে পড়তেন। এক বন্ধুর কাছে শুনলেন টেলিফিল্মে এক কিশোরী চরিত্রের জন্য শিল্পী খুঁজছেন নির্মাতা মেজবাউর রহমান। পরে অডিশন দিয়ে টিকে যান।
নিজেকে প্রথমবার ছোট পর্দায় দেখে রীতিমতো আপ্লুত হয়েছিলেন। সেই সময়ের অনুভূতিকে অনেকটা ‘প্রথম প্রেমে পড়ার’ মতো বললেন এই তরুণ অভিনেত্রী। টেলিফিল্মটি প্রচারের পর পরিবার ও বন্ধুবান্ধবদের কাছ থেকে ভালো সাড়া পেয়েছিলেন, যেটি তাঁকে অভিনয়ে অনুপ্রাণিত করেছে।
‘রেহানা মরিয়ম নূর’ থেকে ‘আমি বীরাঙ্গনা বলছি’
আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদের আলোচিত সিনেমা রেহানা মরিয়ম নূর-এ মিমি চরিত্রে অভিনয় করে নজর কেড়েছেন জৌপারী। এটি ২০২১ সালে বাংলাদেশের প্রথম সিনেমা হিসেবে কান চলচ্চিত্র উৎসবের ‘আঁ সার্তে রিগা’ বিভাগে অংশ নিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান খেলনাছবির বিজ্ঞাপন করেছিলাম, সেখানে নির্মাতা সাদ ভাইও ছিলেন।’ খেলনাছবির সূত্র ধরেই সিনেমাটিতে কাজের সুযোগ পান তিনি। ২০১৭ সালে সিনেমার সঙ্গে যুক্ত হন, ২০১৮ সালে শুটিং করেন।
জৌপারী লুসাই বলেন, ‘সিনেমাটি করার আগে অভিনয় নিয়ে খুব একটা বুঝতাম না। সিনেমাটি করার পর অভিনয়কে সিরিয়াসলি নিই। তখন মনে হয়েছিল অভিনয় চালিয়ে যাব। সঙ্গে অভিনয় শিখবও।’
বঙ্গ অরিজিনাল সিরিজ বিএনজি-তে অভিনয় করে তরুণ দর্শকের কাছে পৌঁছেছেন জৌপারী। আরেক স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র সারভাইভ-এও মূল চরিত্রে দেখা গেছে তাঁকে। তিনি বলেন, ‘বিএনজি ও সারভাইভ দুটি কাজের জন্যই খুব ভালো রেসপন্স পেয়েছি। দুটি কাজ দেখে অনেকে আমাকে চিনেছেন।’
প্রায় এক যুগের ক্যারিয়ারে কোন কাজটিকে ‘টার্নিং পয়েন্ট’ বলবেন? জৌপারী বলেন, ‘আসলে এটা আমার পক্ষে বলা কঠিন। প্রতিটা কাজই মন থেকেই করি। আমি কাজ করে যেতে চাই, কাজটাকে ভালোবাসি।’
এর মাঝে অভিনয়ে নিজেকে শাণিত করতে নাট্যব্যক্তিত্ব সৈয়দ জামিল আহমেদের কর্মশালায় অংশ নেন জৌপারী। জামিল আহমেদ নির্দেশিত আমি বীরাঙ্গনা বলছি-এ একজন নির্যাতিতা পাহাড়ি নারীর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন তিনি।
‘পারফেক্ট ওয়াইফ’ ইরা
২২ অক্টোবর মুক্তি পাওয়া চরকির ফ্ল্যাশ ফিকশন পারফেক্ট ওয়াইফ-এ একজন জাপানি তরুণী ইরার চরিত্রে অভিনয় করেছেন জৌপারী। ফিকশনটি পরিচালনা করেছেন গিয়াস উদ্দিন সেলিম। ফিকশনটি মুক্তির পর ভালো সাড়া পাচ্ছেন জানিয়ে জৌপারী বলেন, ‘আমার পরিচিতদের মধ্যে যাঁরা কাজটা দেখেছেন, তাঁরা সবাই চরিত্রটা পছন্দ করেছেন। অনেকে বলেছেন, তুমি রোবট না মানুষ।’
সেলিমের পরিচালনায় এবারই প্রথম কাজ করেছেন তিনি। কাজের অভিজ্ঞতা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অনেক ভালো। কারণ, উনি আসলে অ্যাক্টিংটাকে দারুণভাবে ডিল করেন। খুবই আরাম করে আমি কাজ করেছি। অভিনয়ের ক্ষেত্রে পরিচালক অনেক ম্যাটার করে। আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ যে রকম আমাকে ছেড়ে দিয়েছিলেন, যেভাবে ইচ্ছা তুমি করো, ঠিক একইভাবে আমি বলব যে এই চরিত্রটা (ইরা) করতে গিয়ে আমি আমার মনে হয়েছে যে আমি আরও বেশি এনজয় করেছি।’
সব মাধ্যমে কাজ করতে চান
ওটিটি, প্রেক্ষাগৃহের সিনেমা থেকে টিভি নাটক—সব মাধ্যমেই কাজ করেছেন জৌপারী। তিনি বলেন, ‘টিভি হোক, ওটিটি হোক কিংবা সিনেমা—সব মাধ্যমেই অভিনয় করতে চাই।’
ক্যারিয়ারের প্রথম সিনেমা রেহানা মরিয়ম নূর-এর পর আর কোনো সিনেমা মুক্তি পায়নি। মাঝে এনামুল করিম নির্ঝরের একটি সিনেমার কাজ শেষ করেছেন, তবে সিনেমাটি এখনো মুক্তি পায়নি।
অভিনয়কে পেশা হিসেবে নিতে চান জানিয়ে জৌপারী বলেন, ‘আমি অভিনয়ের কোন স্টেজে আছি, জানি না। তবে অভিনয়টা আমার প্রফেশন। আমার প্যাশনের জায়গাও। আমি এটা সারা জীবন করে যেতে চাই।’
সামনে কী করছেন? তিনি বলেন, এখনো কোনো কাজ চূড়ান্ত হয়নি, তবে কিছু কাজের কথাবার্তা চলছে। যদি সবকিছু কনফার্ম হয়, তাহলে তো সামনের বছর দেখা যেতে পারে।
জৌপারী একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মিডিয়া স্টাডিজ ও জার্নালিজমে পড়াশোনা করেছেন।