রাকসু ও রুয়া নির্বাচন নির্ধারিত সময়ে নিশ্চিতের দাবিতে বিক্ষোভ
Published: 30th, April 2025 GMT
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন (রাকসু) এবং অ্যালামনাই এসোসিয়েশন (রুয়া) যথা সময়ে নিশ্চিতের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা। আজ বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের জোহা চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ শেষে একই স্থানে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়।
বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘সিন্ডিকেটের কালো হাত ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও; রুয়া নিয়ে টালবাহানা চলবে না চলবে না; রাকসু নিয়ে টালবাহানা চলবে না চলবে না; একশান টু একশান, ডাইরেক্ট একশান; সিন্ডিকেট না রুয়া, রুয়া রুয়া; সিন্ডিকেট না রাকসু, রাকসু রাকসু; সিন্ডিকেটের ঠিকানা এই ক্যাম্পাসে হবে না; ইলেকশন না সিলেকশন, ইলেকশন ইলেকশন’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকে।
এ সময় বক্তারা বলেন, রাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ থেকে নির্বাচনের আচরণবিধি সংশ্লিষ্ট একটি তারিখ ইতোমধ্যে অতিবাহিত হয়ে গেছে। খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করার নির্দিষ্ট তারিখও পার হয়ে গেছে। যে গোষ্ঠী রুয়া নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করছে একই গোষ্ঠী রাকসু নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে। রুয়া নির্বাচনে আমরা দেখতে পারবো রাকসু নির্বাচন কেমন হবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক এবং স্টুডেন্ট রাইটস এসোসিয়েশনের সভাপতি মেহেদী সজীব বলেন, রুয়া নির্বাচন ১০ মে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও এটি নিয়ে নানা ধরনের টালবাহানা দেখতে পাচ্ছি। কিন্তু আমরা রাকসু নির্বাচন নিয়ে কোনো ধরনের টালবাহানা বরদাশত করবো না। আপনারা জানেন রাকসুর খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করার তারিখ অতিক্রম হয়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা এটি ধরে নেব- যে গোষ্ঠী রুয়া নির্বাচনকে বানচাল করার চেষ্টা করেছে তারাই রাকসু নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করছে। দীর্ঘদিন শিক্ষার্থী সমাজের ওপর সন্ত্রাসবাদ, আধিপত্যবাদের রাজনীতি চাপিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে প্রত্যেক প্রশাসন রাকসু, ডাকসুসহ প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ বন্ধ রেখেছে। কোনোভাবে যদি রুয়াকে তারা বানচাল করতে পারে তাহলে রাকসু বাস্তবায়নও সম্ভব না।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী সালাহ উদ্দিন আম্মার বলেন, আমরা স্পষ্টভাবে বলে দিচ্ছি রুয়াকে বানচাল করার অপচেষ্টা রাকসুকে বানচাল করার অপচেষ্টার একটা বড় অংশ। রুয়া নির্বাচনে আমরা দেখতে পারবো রাকসু নির্বাচন কেমন হবে। রুয়া নির্বাচনের ওপর নির্ভর করছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কতটা গণতান্ত্রিক উপায়ে মানুষের সামনে নিজেদের তুলে ধরতে পারবে। আমরা একটা বিষয় খেয়াল করছি বিগত ২৮ তারিখে রাকসুর ভোটার তালিকা প্রকাশ করার তারিখ ছিল কিন্তু কোনো এক বাধার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখনো পর্যন্ত সে ভোটার তালিকা সামনে আনতে পারেনি। অনতিবিলম্বে রাকসুর ভোটার তালিকা প্রকাশ করতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএর শিক্ষার্থী ও সাবেক সমন্বয়ক আতাউল্লাহ বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি একটি বিশেষ দল রুয়া নির্বাচন বানচাল করার জন্য ইলেকশন বাদ দিয়ে সিলেকশনের পায়তারা করতেছে। তারা বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি অস্থিতিশীল পরিবেশে নিয়ে যেতে চায়। তাদের স্পষ্ট বলে দিতে চাই এই অপরাজনীতি আপনারা অতীতে করে গেছেন, এখন করার চেষ্টা করলে বর্তমান শিক্ষার্থীরা আপনাদের সামনে রুখে দাঁড়াবে। মতিহারের এই চত্বরে পূর্বের মতো দখলদারিত্বের রাজনীতি শিক্ষার্থীরা আর হতে দিবে না। রুয়া নির্বাচন ১০ তারিখেই দিতে হবে, সকল ষড়যন্ত্রের কালো হাত শিক্ষার্থীরা প্রতিহত করবে।
বিক্ষোভ পরবর্তী সমাবেশের সঞ্চালনা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক ফাহিম রেজা।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ব ক সমন বয়ক ল কশন
এছাড়াও পড়ুন:
এনসিপির উদ্বেগ আদালত অবমাননার শামিল: ইশরাক
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র পদ নিয়ে ইশরাক হোসেনের মামলা, রায় এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) তৎপরতা নিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উদ্বেগ প্রকাশের বিষয়টিকে আদালত অবমাননার শামিল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির নেতা ইশরাক হোসেন। তিনি বলেছেন, এনসিপি আইনের ব্যাখ্যা এবং আইন সম্পর্কে অজ্ঞ থাকায় ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করছে। একই সঙ্গে বিজ্ঞ আদালতের আদেশকে অবমাননা করেছে।
বুধবার রাতে এক প্রতিবাদলিপিতে ইশরাক হোসেনের পক্ষে তাঁর আইনজীবী রফিকুল ইসলাম এ কথা বলেছেন। এর আগে গতকাল বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়েছিল এনসিপি।
দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি হওয়া নিয়ে এনসিপির উদ্বেগের বিষয়টি উল্লেখ করে ইশরাক হোসেনের পক্ষে পাঠানো প্রতিবাদলিপিতে তাঁর আইনজীবী বলেন, মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির কারণ নিয়ে এনসিপির বক্তব্য একেবারেই শিশুসুলভ। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় যেকোনো মামলায় দ্রুত নিষ্পত্তির বিজ্ঞ আদালতের একটি সহজাত ক্ষমতা। তা ছাড়া ২০২০ সালে দায়ের করা মামলাটি ২০২৫ সালে নিষ্পত্তি হয়েছে। এটি দীর্ঘ পাঁচ বছরের অধিক সময় অতিক্রান্ত হয়েছে, যা মোটেও সংক্ষিপ্ত সময় নয়; বরং মোকদ্দমাটি আরও আগেই নিষ্পত্তি হওয়া প্রয়োজন ছিল।
নির্বাচনী মামলার নিষ্পত্তি সংক্ষিপ্ত সময়ে হওয়া উচিত উল্লেখ করে প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, এনসিপির এ জাতীয় বক্তব্য আদালত অবমাননার শামিল। এ ছাড়া এ-সংক্রান্ত যে বক্তব্য দিয়েছে, তার সম্পূর্ণ আইনি অজ্ঞতার বহিঃপ্রকাশ। মামলার তদবিরকারক বাদীর ইচ্ছা অনুযায়ী যে কেউ হতে পারে বিধায় বিজ্ঞ আদালত হলফনামা গ্রহণ করেছেন, যা সম্পূর্ণ আইন মেনেই করা হয়েছে। এ ছাড়া আদালত কোনো প্রকার বিচার-বিশ্লেষণ করেননি বলে যে বক্তব্য এনসিপি দিয়েছে, তা এককথায় তাদের জ্ঞানের স্বল্পতারই বহিঃপ্রকাশ এবং আদালত অবমাননার শামিল।
প্রতিবাদলিপিতে আরও বলা হয়, ‘আদালত যথাযথ আইন মেনেই রায় প্রদান করেন। এ ক্ষেত্রে কেউ যদি ন্যায়বিচার হয়নি বলে মনে করে, তাহলে উচ্চ আদালতে আপিল করার সুযোগ আছে এবং তার বক্তব্য ওই উচ্চ আদালতে রাখারও সুযোগ আছে। এভাবে প্রেসনোট দিয়ে বক্তব্য প্রদান দেশের জনগণকে বিভ্রান্ত করা ও বিজ্ঞ আদালতকে অবমাননা ছাড়া কিছুই নয়।’
২০২০ সালে অনুষ্ঠিত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের ফল বাতিল করে সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে বিএনপি নেতার ইশরাক হোসেনকে গত ২৭ মার্চ মেয়র ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন আদালত। এর এক মাস পর আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপির নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গেজেট প্রকাশের পর এটি বর্তমানে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এই মন্ত্রণালয় থেকে শপথ গ্রহণের যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করার কথা। তবে কবে নাগাদ শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান হবে, সে বিষয়টি নিয়ে এখন ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে।
নির্বাচনের হিসাব অনুযায়ী আগামী ১৫ মে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র পদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে।