কমলার অভিযোগ: আধুনিক মার্কিন প্রেসিডেন্টের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক সংকট তৈরি করেছেন ট্রাম্প
Published: 1st, May 2025 GMT
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দেশটির আধুনিক সময়ের প্রেসিডেন্টদের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক সংকট তৈরি করেছেন। তাই তাঁর বিরুদ্ধে সবাইকে এক হতে হবে। স্থানীয় সময় গত বুধবার এক বক্তৃতায় দেশটির সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস এ আহ্বান জানান।
ট্রাম্পের রাজনীতি থেকে ধনীরা লাভবান হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন কমলা বলেন, ট্রাম্প ‘সংকীর্ণ, স্বার্থপর দৃষ্টিভঙ্গির’ মানুষ। তাঁর এই দৃষ্টিভঙ্গির কারণে ‘সত্যবাদীদের শাস্তি দেওয়া হচ্ছে, অনুগতদের পক্ষে অবস্থান নেওয়া হচ্ছে, ক্ষমতার অপব্যবহার করে অনেকে লাভবান হচ্ছেন, আর সাধারণ মানুষদের নিজেদের মতো করে টিকে থাকতে হচ্ছে।’
যুক্তরাষ্ট্রের ২০২৪ সালের নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির থেকে শেষ মুহূর্তে নাটকীয়ভাবে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হয়েছিলেন কমলা হ্যারিস। তিনি রিপাবলিকান পার্টির ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। কিন্তু ট্রাম্পের কাছে বিপুল ব্যবধানে হেরে যান। এর পর থেকে কমলা তেমন একটা জনসমক্ষে আসেননি।
বুধবার ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণের ১০০ দিন পূর্ণ হয়। এ উপলক্ষে ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যে কমলার নিজের শহর সান ফ্রান্সিসকো বে এরিয়ার এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন কমলা। ‘ইমার্জ আমেরিকা’ নামের একটি সংগঠন এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। এই সংগঠন ডেমোক্রেটিক নারী প্রার্থীদের নির্বাচনে জেতাতে কাজ করে।
বক্তৃতায় কমলা বলেন, ট্রাম্প এখন পর্যন্ত যেসব পদক্ষেপ নিয়েছেন, সেগুলোর মধ্যে বিভিন্ন দেশের ওপর শুল্ক আরোপ অন্যতম। কিন্তু তাঁর এই অর্থনৈতিক নীতি ‘সুস্পষ্টভাবে মন্দা ডেকে আনছে’।
ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সান্তা বারবারার আমেরিকান প্রেসিডেন্সি প্রজেক্টের তথ্যমতে, ট্রাম্প গত জানুয়ারিতে ক্ষমতা নেওয়ার পর থেকে ১৪২টি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন, যা সাম্প্রতিক সময়ে যেকোনো মার্কিন প্রেসিডেন্টের চেয়ে বেশি।
ট্রাম্প ক্ষমতা নেওয়ার পর প্রথম প্রান্তিক যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি গত তিন বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো সংকুচিত হয়েছে। কিন্তু দুর্বল অর্থনীতির জন্য তিনি সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে দোষারোপ করেছেন। অন্যদিকে নিজের সফলতা দেখাতে ঘরোয়া চাহিদা বাড়ার হিসেবে তুলে ধরেন ট্রাম্প।
রয়টার্স/ইপসোসের সাম্প্রতিক জরিপ অনুযায়ী, ট্রাম্পের সমর্থনের ৪২ শতাংশে নেমে এসেছে। মার্কিন জনগণের মাত্র ৩৬ শতাংশ তাঁর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা সমর্থন করেন।
তবে এখন পর্যন্ত ডেমোক্র্যাটদের চেয়ে রিপাবলিকানদের সমর্থকেরাই নিজেদের নেতৃত্বের প্রতি বেশি আস্থাবান। দেশটির ডেমোক্র্যাটদের ৭১ শতাংশ নিজেদের নেতৃত্বের প্রতি আস্থা রাখেন। রিপাবলিকানদের মধ্যে তা ৮৩ শতাংশ।
গত জানুয়ারিতে দায়িত্ব ছাড়ার পর বুধবারই প্রথমবারের মতো বড় কোনো অনুষ্ঠানে কথা বললেন কমলা। এর মধ্য তিনি রাজনীতির কক্ষপথে আবার হাঁটা শুরু করছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। আগামী বছর ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর নির্বাচন। তিনি চাইলে এতে অংশ নিতে পারবেন। অংশ নিলে তাঁর জয় পাওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। তবে অনেকে মনে করেন, তিনি আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও আবার প্রার্থী হতে পারবেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জমজমাট নাটকের পর কিংসের শিরোপা উৎসব
সময়ের চেয়েও বেশি দীর্ঘ হলো অপেক্ষা। উত্তেজনার বাঁকে বাঁকে লুকিয়ে ছিল ফুটবলীয় রোমাঞ্চ। শেষ ১৫ মিনিট যেন পরিণত হলো রূপকথার উপসংহারে—যেখানে আবাহনীর স্বপ্ন থেমে যায়, আর বসুন্ধরা কিংস খুঁজে পায় চতুর্থ ফেডারেশন কাপের সোনালি মুহূর্ত।
বৃষ্টির ছন্দে বিভ্রান্ত হওয়া ফাইনাল আবার শুরু হলো এক সপ্তাহ পর। ১-১ সমতায় থাকা ম্যাচের বাকি অংশ গড়ালো ময়মনসিংহ জেলা স্টেডিয়ামে। যেখানে শুরু থেকেই ১০ জনের দল নিয়ে খেলতে নামে কিংস। অতিরিক্ত সময়ে কিছুই হল না। তবে অপেক্ষার পুরস্কার মিলল টাইব্রেকারে।
সেখানে বাজিমাত করলেন কিংসের গোলরক্ষক মেহেদী হাসান শ্রাবণ। আবাহনীর দ্বিতীয় শট আটকে দিয়ে দলকে দিলেন এগিয়ে যাওয়ার আত্মবিশ্বাস। আর শেষ শটটি নেন ব্রাজিলিয়ান ড্যাসিয়েল, যা গোললাইন পার হয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই উৎসবে ফেটে পড়ে কিংস শিবির।
আরো পড়ুন:
যে কারণে এবারের লিগ জয়কে এগিয়ে রাখছেন সালাহ
পাঁচ গোলের রোমাঞ্চকর ফাইনালে শেষ হাসি বার্সার
কিছুদিন আগেই আবাহনীর কাছে টাইব্রেকারে হেরেছিল কিংস। এবার সেই হারের উত্তরটা যেন মিলল একই মঞ্চে, একই কৌশলে— তবে ভিন্ন ফলাফলে। মোরসালিন, তপু, ইনসান, জোনাথন আর ড্যাসিয়েল— কেউই ভুল করেননি। আবাহনীর একমাত্র ব্যর্থ শটটি ছিল নাইজেরিয়ান এমেকার, যা ঠেকিয়ে দেন শ্রাবণ। আর মিরাজুলের চতুর্থ শট, যা প্রথমবার ঠেকিয়ে দিয়েছিলেন শ্রাবণ। কিন্তু রেফারির সিদ্ধান্তে আবার নিতে হয়। তাতেও গোল হলেও ততক্ষণে কিংস হয়ে গেছে অপ্রতিরোধ্য।
এদিন মাত্র ১৫ মিনিট খেলা হলেও মাঠের উত্তাপ ছিল পূর্ণদৈর্ঘ্য নাটকের মতো। শুরুতেই হলুদ কার্ড দেখেন আবাহনীর সুমন রেজা ও অধিনায়ক হৃদয়। আগের ম্যাচেও হলুদ-লাল কার্ডে ভরা ছিল দৃশ্যপট। ফুটবল এখানে শুধু কৌশলের খেলা নয় তা যেন হয়ে ওঠে মানসিক স্থিতির পরীক্ষাও।
এই জয়ে বসুন্ধরা কিংস চতুর্থবারের মতো ফেডারেশন কাপ জয় করল। একই সঙ্গে আবাহনীকে প্রথমবার কোনো ফাইনালে হারানোর কৃতিত্বও অর্জন করল তারা। অতীতে দুই ফাইনালে পরাজিত হয়েছিল কিংস। এবার তারা সেই রেকর্ড মুছে দিল নির্ভার ফুটবলে।
ঢাকা/আমিনুল