স্প্যানিশ ক্লাবে সূর্যমুখী ফুলের বীজ খাওয়া নিষিদ্ধ, কারণ জানলে অবাক হবেন
Published: 2nd, May 2025 GMT
নিজেদের স্টেডিয়ামের ভেতরে সূর্যমুখী ফুলের বীজ বিক্রি ও খাওয়া নিষিদ্ধ করেছে স্পেনের দ্বিতীয় বিভাগের দল এলচে।
স্প্যানিশ ভাষায় সূর্যমুখী ফুলের বীজ ‘পাইপাস’ নামে পরিচিত। স্পেনে এটা বেশ জনপ্রিয় ও মুখরোচক খাবার। স্প্যানিশ ফুটবলে গ্যালারিতে ম্যাচ দেখতে দেখতে দর্শকদের সূর্যমুখী ফুলের বীজ চিবোনোর ঐতিহ্য অনেক দিনের।
আরও পড়ুনএশিয়া ও আফ্রিকা সফরে ৪ ম্যাচ খেলবে আর্জেন্টিনা, প্রতিপক্ষ কারা১ ঘণ্টা আগেকিন্তু একটি সমস্যাও আছে। সূর্যমুখীর বীজ খেতে দাঁত দিয়ে এর খোসাটা আগে ছাড়াতে হয় এবং সেটি করতে গিয়ে থুতু ছেটার পাশাপাশি খোসাও পড়ে গিয়ে জায়গাটা নোংরা হয়। এ জন্য অনেক দর্শককে গ্যালারি থেকে বেরিয়েও যেতে হয়েছে। লবণমাখা এই খাবার শেষ পর্যন্ত নিজেদের ম্যানুয়েল মার্তিনেজ ভালেরো স্টেডিয়ামে নিষিদ্ধ করেছে এলচে।
ক্লাবটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বীজের খোসার কারণে তাদের স্টেডিয়ামের ড্রেনেজ ব্যবস্থার পাইপ ভরাট হয়ে গেছে। এতে পানির প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আসনগুলোর মান খারাপ হচ্ছে এবং পরিষ্কার ও ব্যবস্থাপনায় খরচ ‘উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে’। পাশাপাশি সূর্যমুখীর বীজের খোসার কারণে ‘কবুতর ও ইঁদুরের সংখ্যাও বেড়েছে’।
এলচে আরও জানিয়েছে, স্টেডিয়ামে বীজের স্তূপের কারণে কংক্রিটের ক্ষয় হচ্ছে এবং খোসাসহ আবর্জনাগুলো এমন সব জায়গায় আটকা পড়েছে, ‘পরিষ্কার করতে যেখানে পৌঁছানো খুব কষ্টকর’। এই বীজ নিষিদ্ধ করার বিষয়ে ক্লাবটির যুক্তি, এর মধ্য দিয়ে নিজেদের স্টেডিয়ামকে ‘ক্লাবের গর্ব হিসেবে প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও ভদ্রতার উদাহরণ তৈরি করতে’ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ রইল তারা।
আরও পড়ুনব্রাজিলের আনচেলত্তি–প্রেম কাটেনি, সময় বেঁধে দেওয়া হলো নতুন করে২ ঘণ্টা আগেতবে স্প্যানিশ ফুটবলে স্টেডিয়ামে সূর্যমুখীর বীজ নিষিদ্ধ করা প্রথম দল নয় এলচে। লা লিগায় ছয়বারের চ্যাম্পিয়ন ভ্যালেন্সিয়া ২০২৩ সালে ঘোষণা দেয়, তাদের স্টেডিয়ামে আর সূর্যমুখীর বীজ বিক্রি করা হবে না। সমর্থকদের প্রতি ক্লাবটি আহ্বান জানিয়েছিল, কোনো দর্শক এরপরও সূর্যমুখীর বীজ নিয়ে এলে একটি প্যাকেটে ভরে আনতে হবে এবং খোসাগুলো প্যাকেটেই রাখতে হবে।
ভ্যালেন্সিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, এই বীজের লোভে স্টেডিয়ামে ইদুরজাতীয় প্রাণীর উৎপাত বেড়েছে। আর বীজের খোসাগুলো স্টেডিয়াম থেকে পরিষ্কার করতে যে মেশিন ব্যবহার করা হয়, তার শব্দে স্টেডিয়ামের নিকটবর্তী থাকা প্রতিবেশীদের অসুবিধা হয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন ষ দ ধ কর পর ষ ক র
এছাড়াও পড়ুন:
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস
স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।
মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’
সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।
অনাহারে মৃত্যু ১৫৪গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।
গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।
ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।
বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।
গাজায় স্টিভ উইটকফশুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।