খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে (খুবি) ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক/স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষে ভর্তি পরীক্ষার চারটি ইউনিটের ফল প্রকাশ করা হয়েছে। 

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট http://admission.ku.ac.bd/-এ বুধবার (৩০ এপ্রিল) রাতে ফল প্রকাশ করা হয়। পরীক্ষার্থীরা এ ওয়েবসাইটে নিজেদের প্রোফাইলে লগইন করে ফল জানতে পারবেন।

মেধাতালিকায় স্থান পাওয়া শিক্ষার্থীদেরকে বৃহস্পতিবার (১ মে) থেকে শনিবার (৩ মে) রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত অনলাইনে ডিসিপ্লিনের পছন্দক্রম পূরণ করতে হবে। ডিসিপ্লিনভিত্তিক চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হবে আগামী বৃহস্পতিবার (৮ মে)।

গত ১৭ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) সি ইউনিট (কলা ও মানবিক, সামাজিক বিজ্ঞান, আইন, শিক্ষা এবং চারুকলা স্কুল) ও ‘ডি’ ইউনিট (ব্যবস্থাপনা ও ব্যবসায় প্রশাসন স্কুল) এবং ১৮ এপ্রিল (শুক্রবার) ‘এ’ ইউনিট (বিজ্ঞান, প্রকৌশল ও প্রযুক্তিবিদ্যা স্কুল) ও ‘বি’ ইউনিটের (জীববিজ্ঞান স্কুল) ভর্তি পরীক্ষা শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়।

ঢাকা/হাসিবুল/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর ক ষ ইউন ট

এছাড়াও পড়ুন:

পেশাদার পুলিশ চাইলে এখনই সংস্কার জরুরি

জনগণ প্রভাবমুক্ত ও পেশাদার পুলিশ চাইলেও রাজনৈতিক নেতারা কখনো তা চাননি। ১৯৩০ সাল থেকে দমন করাই ছিল পুলিশের কাজ। এ সংস্কৃতি বদলাতে হবে, পুলিশকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করতে হবে। এ জন্য পুলিশ সংস্কারের এখনই উপযুক্ত সময়।

পুলিশ সপ্তাহ ২০২৫ উপলক্ষে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে পুলিশ অডিটরিয়ামে ‘নাগরিক ভাবনায় জনতার পুলিশ: নিরাপত্তা ও আস্থার বন্ধন’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বিশিষ্ট নাগরিকদের বক্তব্যে এমন মতামত উঠে এসেছে। এ সময় পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, সব মহানগর পুলিশের কমিশনার, রেঞ্জ ডিআইজি ও পুলিশ সুপাররা উপস্থিত ছিলেন।

মতবিনিময় সভায় শিক্ষক, সাংবাদিক, ধর্মীয় নেতা, লেখক, খেলোয়াড়, সংগীতশিল্পী, চলচ্চিত্র নির্মাতা, অর্থনীতিবিদ, সাহিত্যিক, শ্রমিকনেতাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নাগরিকেরা উপস্থিত ছিলেন।

নাগরিকদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে পুলিশের সাবেক দুজন মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বক্তব্য দেন। তাঁদের মধ্যে মোহাম্মদ নুরুল হুদা বলেন, রাজনৈতিক নেতৃত্বের উচিত পুলিশকে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দেওয়া। পুলিশকে একটি দানবীয় বাহিনীতে পরিণত করা হয়েছে। পুলিশ সংস্কারের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক সদিচ্ছা সবচেয়ে বেশি দরকার।

মতবিনিময় অনুষ্ঠানে মুখ্য আলোচক ছিলেন লেখক ও গবেষক অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান। তিনি বলেন, পুলিশের জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েছে, এর কারণ অনুসন্ধানের মতো উদার চিন্তা থাকা উচিত। পুলিশ দলীয় পুলিশ হয়ে যায়, সেটা তো বাহ্যিক। কিন্তু ভেতরে সমস্যা আছে।

বিচারব্যবস্থার কিছু সমস্যার কথা তুলে ধরে সলিমুল্লাহ খান বলেন, ‘আমাদের যে ফৌজদারি বিচারব্যবস্থা, সেখানে কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করলে সেটা আদালতের হাতে চলে যায়। প্রায়ই আমরা পুলিশের থেকে শুনেছি, আমাদের দেশের ফৌজদারি ব্যবস্থার ওপর নির্ভর করা যায় না। আদালত জামিন দিয়ে দেন, অপরাধী মুক্ত হয়ে যায়। কোনো ক্ষেত্রে নিরপরাধ শাস্তি পায়, অপরাধীরা ছাড়া পেয়ে যায়।’ তিনি আরও বলেন, সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছেন, বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার করা যাবে না। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত থাকা সত্ত্বেও এটা বাস্তবে প্রয়োগ হয় না।

সাবেক আইজিপি আবদুল কাইয়ুম বলেন, সবাই স্বাধীন হতে চায়। কিন্তু স্বাধীনতা দিলে ভালো লাগে না। তখন গোলামি ভালো লাগে। অনেকেই গোলামি করতে চায়। পদোন্নতি-পদায়নের জন্য মন্ত্রীদের বাসায় গিয়ে গোলামি করতে চায়। এ দ্বিচারিতার অবসান হওয়া উচিত। এর থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

পুলিশ সংস্কার কমিশন নিয়ে সমালোচনা

পুলিশ সংস্কার কমিশনের কার্যক্রম ও প্রতিবেদনে দেওয়া সুপারিশ নিয়ে মতবিনিময় সভায় সমালোচনা করেছেন বক্তাদের কেউ কেউ। অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেন, ১৮৬১ সালের যে পুলিশ আইন এবং পুলিশ বিধি রয়েছে, তার পদে পদে সমস্যা

আছে। সর্বশেষ যে সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন দেওয়া হলো, তারাও বিষয়টি উপলব্ধি করতে পারেনি। পুলিশের সঙ্গে জনগণের দূরত্বের গোড়ায় যেতে হবে। জনগণের বিপক্ষে পুলিশকে দাঁড় করানো যাবে না।

পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের সমালোচনা করে সাবেক আইজিপি নুরুল হুদা বলেন, এই প্রতিবেদনে যেসব কথাবার্তা বলা হয়েছে, এগুলো সাত দিনেই তৈরি করা যায়। বর্তমান আইজিপিও সংস্কার নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন। কমিশন কিছু বিষয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার কথা বলেছে। যদি পরীক্ষা-নিরীক্ষারই দরকার হয়, তাহলে এই কমিশনের দরকার ছিল কি?

সূচনা বক্তব্যে আইজিপি বাহারুল আলম বলেন, পুলিশের প্রতি জনসাধারণের দৃষ্টিভঙ্গি তখনই ইতিবাচক হয়, যখন মানুষ দেখে এই বাহিনী কেবল আইন প্রয়োগ করছে না, বরং জনগণের অধিকার রক্ষা ও মানবিক মূল্যবোধ বজায় রাখার দায়িত্ব গ্রহণ করছে।

নিউএজ পত্রিকার সম্পাদক নূরুল কবীর বলেন, রাষ্ট্র যখন নিপীড়ক হয়ে ওঠে, তখন পুলিশকে জনতার পুলিশ হতে দেয় না। অতীতে দেখা গেছে, রাষ্ট্র কতটা নির্লজ্জ হলে পুলিশ সদস্যদের পদক দেওয়ার কারণ হিসেবে বিরোধী দলকে দমন করার কথা উল্লেখ করা হয়। তাঁর মতে, পুলিশকে জনতার পুলিশ হতে হলে কতগুলো বিষয় মাথায় রাখতে হবে। ন্যায় বা অন্যায় দেখার মতো বুদ্ধিমত্তা থাকতে হবে।

জাহেদ উর রহমান বলেন, এর আগে পুলিশ সপ্তাহগুলোতে দেখা গেছে, নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন বাতিলের দাবি উঠত। ওই আইনে শারীরিক নির্যাতনের পাশাপাশি মানসিক নির্যাতনের কথাও উল্লেখ রয়েছে। অথচ পুলিশই এই আইন বাতিল চেয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত সেটা করতে না পেরে এই আইনের প্রয়োগে কিছু শর্ত যুক্ত করার কথাও বলেছিল পুলিশ।

পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সদস্য অধ্যাপক চৌধুরী সায়মা ফেরদৌস বলেন, নতুন বাংলাদেশে পুলিশ যদি সত্যের পথে থাকে, তাহলে মানুষের কাছে তাদের আস্থার জায়গা তৈরি হবে। পুলিশকে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে।

শিল্পোদ্যোক্তা সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, পুলিশের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। পুলিশকে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ তৈরি করে দিতে হবে। পুলিশে ঊর্ধ্বতন পদসহ বিভিন্ন পদে যাঁদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে, তাঁদের মধ্যে সেবার মানসিকতা তৈরি করা যাচ্ছে কি না, দেখতে হবে।

অধ্যাপক সাজ্জাদ সিদ্দিকী বলেন, বিরোধী দল দমনে পুলিশকে যেভাবে ব্যবহার করা হয়, সংস্কারের ক্ষেত্রে এগুলো বিবেচনায় না নিলে পুলিশ মানুষের পুলিশ হয়ে উঠতে পারবে না।

আইজিপি বাহারুল আলমের সভাপতিত্বে আলোচনায় আরও অংশ নেন মতবিনিময় সভা-সংক্রান্ত উপকমিটির সভাপতি ও পুলিশের বিশেষ শাখার অতিরিক্ত আইজি গোলাম রসুল।

সম্পর্কিত নিবন্ধ