Samakal:
2025-08-01@21:59:08 GMT

পড়ন্ত সূর্যের নিভৃতচারিতা

Published: 5th, May 2025 GMT

পড়ন্ত সূর্যের নিভৃতচারিতা

মুখোমুখি দাঁড়িয়ে
নকুল শর্ম্মা

অবসর বিকেলের গল্প
দিনের ক্লান্তি মুছে 
ছুটে আসে কিছু নিরিবিলি সময়,
অভিমানী হৃদয় লিখে 
ভালোবাসার স্বরলিপি। 
নিস্তব্ধ পাহাড়ে বৈকালিক সুর
মনের ময়ূর কল্পনার 
পেখমে আঁকে প্রণয়ের চিঠি,
হৃদয়ের কম্পনে শুধু 
তোমার অনিন্দ্য বাক্যালাপ।

পড়ন্ত সূর্যের নিভৃতচারিতা
গন্তব্যে ফেরা পাখির ঠোঁটে রাত্রির নীরবতা,
মুখোমুখি দাঁড়িয়ে অব্যক্ত সন্ধ্যার বন্দনা।
অনন্ত সুন্দরের মানসপ্রতিমা
তারার রাজ্যে ধ্রুবতারার আধিপত্য,
সময়ের স্রোতে অনাদিকালের বাসর রচনা।
 

 

দৃশ্যদেবী
সুমন শামসুদ্দিন

তোমার ওই–
রেশম-কোমল চুলকে আমি
অনেক বেশি ঈর্ষা করি।
ইচ্ছে করে–
ওই চুলের মতো
আমিও তোমার কপোল ছুঁয়ে
ঘুমিয়ে পড়ি।
চুলের ছোঁয়ায়–
লাজুক-রাঙা কপোল তোমার
মন ভোলানো লাস্যময়ী।
কপোলের ওই মুগ্ধ-চারু
টোল ছুঁয়েছে আমার মনের
হৃদয়-গহিন প্রণয়-কুটির।
তোমারও ওই– 
আয়ত-আঁখির
ঐন্দ্রজালিক মোহিনী-দৃষ্টে
আটকে আছি শাশ্বত-কাল!
হতাম যদি রেশমি চুড়ি–
তোমার হাতের স্পর্শ নিয়ে
গ্রহাস্তরের অভিসারে দিতাম পাড়ি।
যখন তুমি–
গান কর ওই মোহন সুরে,
আমার চোখে তুমি ছাড়া
জাগতিক সব অলক্ষিত।
বক্ষ-মরুর রুক্ষপথে
অবশেষে পেলাম খুঁজে–
লৌকিকতার আয়ুষ্কালে
তুমি আমার দৃশ্যদেবী।
 

 

বিশৃঙ্খল বেঁচে থাকা 
ইসতিয়াক আহমেদ হৃদয়

বেঁচে থাকা আজকাল; বিশৃঙ্খলা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
হৃদয়ের বেদি ব্যথা, ঘুমের অসুখ, আহারের অরুচি,
বিছানায় ছন্নছাড়া অনিয়মের ছড়াছড়ি—
বয়সের ক্লান্ত লোমে বেড়ে চলেছে ক্রমাগত।
দিন-রাত কবিতার টেবিলে তৈরি হচ্ছে
তোমাকে নিয়ে বাঁচার গল্প!

তবুও স্বপ্নের মধ্যে জেগে থাকার স্মৃতি 
তোমার নেপথ্যে নিশীথের হট্টগোল। 

ভাঙা চুড়ির আওয়াজ, মোলায়েম স্পর্শ,
দুঃখের ভর সমেত একটি শরীর–
আর বল ক’জন নারীই বা নিতে চাইবে?
কে জানে– কবে শেষ হবে এই দুর্ভেদ্য জীবন! 

 

স্বর্গ ফেরত 
ওলি মুন্সী 

বাতাসে তোমার গন্ধ 
রোদ্রে তোমার রূপ 
কালো চুলে মেঘের কারু 
প্রকৃতি হয়েছে চুপ।

জোছনা ভরা চক্ষু তোমার
সদ্য হয়েছে ভোর 
মুগ্ধ করা রমণী তুমি 
স্বর্গ ফেরত হুর।
 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস

স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।

মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’

সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।

অনাহারে মৃত্যু ১৫৪

গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।

গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।

ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩

জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।

বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।

গাজায় স্টিভ উইটকফ

শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ