গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনে স্টেক হোল্ডারদের রাখা হয়নি। তারা যে রিপোর্ট দিয়েছে তাতে আমরা সন্তুষ্ট নই। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিরঙ্কুশ, সেটা আমরা চাই। গত ১৬ বছর গণমাধ্যমের কোনো স্বাধীনতা ছিল না। বর্তমান সরকারের আমলে যেন সেটা না হয়।

বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকালে শফিকুল কবির মিলনায়তনে ‘গণমাধ্যম সংস্কার: সমস্যা ও করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। সেমিনারটি ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) ও জার্নালিস্ট কমিউনিটি অব বাংলাদেশ এর উদ্যোগে আয়োজন করা হয়েছে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেন, গত ১৬ বছরে শেখ হাসিনা পুলিশ বিভাগ, বিচার বিভাগ ও গণমাধ্যমকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এতে গণমাধ্যমের ইমেজের ক্ষতি হয়েছে, গণমাধ্যম বিশ্বাষযোগ্যতা হারিয়েছে। এই সম্মান ফিরিয়ে আনার জন্য আমাদের লড়াই করতে হবে। 

তিনি বলেন, গণমাধ্যম চতুর্থ স্তম্ভ হতে পারেনি। চতুর্থ স্তম্ভ দাবি করা আগে আমাদের মাথা তুলে দাঁড়াতে হবে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য একতাবদ্ধ হতে হবে। আগামীতে যে সরকার আসবে সেই সরকার যদি এই সংস্কার না মানে তাহলে আমরা কী করবো সেই পরিকল্পনা করার আহ্বান জানান তিনি।

সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট্রের চেয়াম্যান এম আব্দুল্লাহ বলেন, সংস্কার কমিশন যে রিপোর্ট দিয়েছে তা নিয়ে সাংবাদিক সংগঠনগুলো সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দিচ্ছে না। আমরা নির্লিপ্ত ভূমিকা পালন করছি। কিন্তু এখানে প্রস্তাব দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। কমিশন যে রিপোর্ট দিয়েছে সেটা চূড়ান্ত হয়ে গেলে সরকার তা বাস্তবায়ন করবে। কিন্তু তখন আন্দোলন করলে এটা সহসাই পরিবর্তন করা যাবে না। সংস্কার কমিশনের রিপোর্টের ওপর সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

ডিআরইউ সহসভাপতি গাজী আনোয়ারের সভাপতিত্বে সেমিনার সঞ্চালনা করেন ডিআরইউ সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল, মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মিয়া হোসেন। 

সেমিনারে বক্তব্য রাখেন ডেইলি ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ, বিএফইউজে’র সাবেক কার্যনির্বাহী সদস্য শহিদুল ইসলাম, ডিইউজে সভাপতি শহিদুল ইসলাম, আসিফ শওকত কল্লোল, বাসসের শেখ দিদারুল আলম প্রমুখ।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

বিশেষায়িত বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠায় আইন মন্ত্রণালয়কে প্রস্তাব পাঠাল সুপ্রিম কোর্ট

সারা দেশে বিশেষায়িত বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠাসংক্রান্ত একটি প্রস্তাব সুপ্রিম কোর্ট থেকে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।

প্রস্তাবে জেলা জজদের মধ্য থেকে বাণিজ্যিক আদালতের বিচারক নিয়োগ করার কথা বলা হয়েছে। এ বিষয়টি উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রধান বিচারপতি কর্তৃক হাইকোর্ট বিভাগে বাণিজ্যিক আপিল বেঞ্চ গঠনের বিষয়টিও প্রস্তাবে উঠে এসেছে। প্রস্তাবে মামলা দায়েরের আগে মধ্যস্থতাকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ফলে মামলা দায়েরের আগেই অনেক বিরোধ আদালতের বাইরে নিষ্পত্তি হবে এবং আদালতের ওপর মামলার ক্রমবর্ধমান চাপ অনেকাংশে হ্রাস পাবে বলে আশা করা যায়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, কোনো বাণিজ্যিক মামলা বা আবেদনের মূল্যমান ৫০ লাখ টাকা হলে তা বাণিজ্যিক আদালতে বিচার্য হবে প্রস্তাবে উল্লেখ রয়েছে। তবে প্রয়োজন অনুযায়ী সরকার সময়ে সময়ে এই নির্ধারিত মূল্যমান সীমা পুনর্নির্ধারণ করতে পারবে।

সুপ্রিম কোর্টের গণসংযোগ কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলামের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, ব্যবসায়ী, ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বণিকদের সাধারণ লেনদেন থেকে শুরু করে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম, বিমান ও নৌপরিবহন, নির্মাণ ও অবকাঠামোগত প্রকল্প, ফ্র্যাঞ্চাইজ চুক্তি, বিতরণ ও লাইসেন্সিং, প্রযুক্তি উন্নয়ন, ট্রেডমার্ক, কপিরাইট, পেটেন্ট, শিল্প নকশা, ডোমেইন নাম, ভৌগোলিক নির্দেশক, বিমা এবং অংশীদারত্ব চুক্তি, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, পরিষেবা খাত এবং শেয়ারহোল্ডার বা যৌথ উদ্যোগ–সম্পর্কিত বিরোধকে বিশেষায়িত বাণিজ্যিক আদালতের এখতিয়ারভুক্ত করার কথা প্রস্তাবে বলা হয়েছে। এর ফলে আধুনিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ–সম্পর্কিত প্রায় সব ধরনের বিরোধ একটি বিশেষায়িত আদালতের মাধ্যমে নিষ্পত্তির সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে আশা করা যায়।

বিচারপ্রক্রিয়াকে দ্রুত ও কার্যকর করার জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে বিচার কার্যক্রম শেষ করার বিষয়ে প্রস্তাবে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, চূড়ান্ত শুনানি অবশ্যই ৯০ দিনের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে বলে প্রস্তাবে উল্লেখ রয়েছে। এ ছাড়া অপ্রয়োজনীয় বিলম্ব এড়াতে সংক্ষিপ্ত বিচারের সুযোগও প্রস্তাবে রাখা হয়েছে।

প্রস্তাবে আপিল নিষ্পত্তির ক্ষেত্রেও সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে আর বলা হয়, বাণিজ্যিক আপিল আদালত ছয় মাসের মধ্যে এবং সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ তিন মাসের মধ্যে আপিল নিষ্পত্তির প্রচেষ্টা গ্রহণ করবে প্রস্তাবে উল্লেখ রয়েছে। প্রস্তাবে বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠা ও কার্যকর করার জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়ন, বিচারক ও আইনজীবীদের জন্য প্রশিক্ষণ এবং ধারাবাহিক পেশাগত উন্নয়নের বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ