‘সংঘাত বাড়িয়ে পরস্পরকে দুষছে ভারত-পাকিস্তান’
Published: 10th, May 2025 GMT
কাশ্মীরের পেহেলগামের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘাতে জড়িয়েছে ভারত ও পাকিস্তান। দুই দেশের এই সংঘাতের খবর গুরুত্ব পাচ্ছে বিশ্বের গণমাধ্যমগুলোতে। পরিস্থিতি এখন কোন দিকে মোড় নেয়, সে বিষয়ে নজর গোটা বিশ্বের।
শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, সামরিক উত্তেজনা বৃদ্ধির জন্য একে অপরকে দুষছে ভারত-পাকিস্তান। ভারত বলছে, পাকিস্তান তাদের সীমান্তে ড্রোন ও অন্যান্য গোলাবারুদ ব্যবহার করে বৃহস্পতিবার রাতভর হামলা চালিয়েছে। পাকিস্তানের একটি নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছে, শুক্রবার ভোরে পাকিস্তানে ড্রোন হামলা চালিয়েছে ভারত। বুধবার দ্বন্দ্ব বাড়ার পর থেকে বারবার একে অপরকে আক্রমণের জন্য অভিযুক্ত করছে দেশ দুটি।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সও বলছে, সংঘাত বাড়তে থাকায় একে অপরকে দুষছে ভারত-পাকিস্তান। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা ‘উত্তেজনা চরমে ওঠায় ভারতীয়দের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে’ শিরোনামের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বেশ কয়েক শহরের লাখ লাখ ভারতীয় বৃহস্পতিবার নির্ঘুম রাত কাটিয়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি ‘২৫ জন ভারতীয় সেনা নিহতের দাবি পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর’ শিরোনামের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, কিছু পাকিস্তানি কর্মকর্তার দাবি, সীমান্তে নিয়ন্ত্রণরেখা বা লাইন অব কন্ট্রোলে গুলি বিনিময়ের সময় তাদের বাহিনী ডজনখানেক ভারতীয় সেনাকে হত্যা করেছে। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেছেন, বুধবার থেকে প্রায় ২৫ ভারতীয় সেনা নিহত হয়েছেন বলে তাঁর ধারণা।
এদিকে যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান ভারত-পাকিস্তানের সংঘাতকে ‘কাশ্মীর সংকট’ বলে উল্লেখ করছে। ‘ভারত-পাকিস্তান সংঘাতে হস্তক্ষেপ করবে না যুক্তরাষ্ট্র’ শিরোনামের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স বলেছেন, ভারত ও পাকিস্তানের নিজেদের মধ্যকার উত্তেজনা নামিয়ে আনা উচিত। তাদের মধ্যে সংঘাত মোটেও আমাদের দেখার বিষয় নয়।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের তৈরি পাকিস্তানের রাডার লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে ভারত।
এদিকে পাকিস্তান ও ভারতের সংবাদমাধ্যম সংঘাতের বিষয়ে পক্ষপাতদুষ্ট প্রতিবেদন করার অভিযোগ আছে। এ কারণে দেশ দুটির সংবাদমাধ্যমগুলোর বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
আইনস্টাইনের ধারণা ভুল প্রমাণ করলেন এমআইটির বিজ্ঞানীরা
পদার্থবিজ্ঞানের দুনিয়ায় শতাব্দীপ্রাচীন এক বিতর্কের অবসান করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) একদল বিজ্ঞানী। সম্প্রতি এক গবেষণায় বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইনের ধারণা ভুল প্রমাণ করে কোয়ান্টাম এনট্যাঙ্গেলমেন্ট বা কোয়ান্টাম জট পাকানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তাঁরা। গবেষণায় দেখা যায়, কোয়ান্টাম কণা তাৎক্ষণিকভাবে দূর থেকে একে অপরকে প্রভাবিত করতে পারে। ক্ল্যাসিক্যাল পদার্থবিজ্ঞানের ধারণা এই প্রভাবকে অস্বীকার করে। নতুন এই গবেষণা ফলাফল কোয়ান্টাম মেকানিকসের বিষয়ে একাধিক ভবিষ্যদ্বাণীকে চ্যালেঞ্জ করেছে।
কয়েক দশক ধরে বিজ্ঞানীরা দূরে অবস্থিত দুটি কণা একে অপরকে তাৎক্ষণিকভাবে প্রভাবিত বা যোগাযোগ করতে পারে কি না, তা জানার চেষ্টা করছেন। এমআইটির গবেষণায় দেখা গেছে, কোয়ান্টাম কণা যত দূরেই থাকুক না কেন, তাৎক্ষণিকভাবে একে অপরকে প্রভাবিত করতে পারে। এই অদ্ভুত সংযোগকে কোয়ান্টাম জট হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়। কয়েক দশক ধরে বিজ্ঞানীরা এই জট নিয়ে বিভ্রান্ত ছিলেন।
আরও পড়ুনবিজ্ঞানী আইনস্টাইনের জন্য নভেম্বর কেন গুরুত্বপূর্ণ১১ নভেম্বর ২০২৩কোনো স্পষ্ট সংযোগ বা সংকেত ছাড়া কণা একে অপরকে প্রভাবিত করতে পারে, এমন ধারণা নিয়ে আইনস্টাইনের বেশ অস্বস্তি ছিল। তিনি বিশ্বাস করতেন, মহাবিশ্ব স্পষ্ট, যৌক্তিক নীতির ওপর পরিচালিত হওয়া উচিত। ১৯৩৫ সালে তিনি বরিস পোডলস্কি ও নাথান রোজেনের সঙ্গে মিলে একটি বিখ্যাত গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছিলেন। সেই গবেষণাপত্রে কোয়ান্টাম তত্ত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল। সে সময় আইনস্টাইনসহ বরিস পোডলস্কি ও নাথান রোজেন যুক্তি দিয়েছিলেন, কোয়ান্টাম মেকানিকস অবশ্যই অসম্পূর্ণ হতে হবে। কারণ, সেখানে কোনো কারণ ছাড়াই ভয়ংকর মিথস্ক্রিয়া ঘটতে পারে।
আরও পড়ুনআইনস্টাইনের ভবিষ্যদ্বাণী অনুসরণ করে গ্রহ আবিষ্কার০১ জুলাই ২০২৫আইনস্টাইন মনে করতেন, কোনো কণা তাৎক্ষণিকভাবে অন্য কণাকে প্রভাবিত করতে পারে না। এ জন্য কোনো লুকানো চলক থাকতে হবে, যা সবকিছুকে আরও সহজভাবে ব্যাখ্যা করে। আর তাই আইনস্টাইনের ধারণার প্রমাণ খুঁজে দেখার পাশাপাশি কোয়ান্টাম পদার্থবিদ্যার প্রকৃত রূপ জানতে বহু বছর ধরেই গবেষণা করছেন বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা। বিভিন্ন পরীক্ষা কোয়ান্টাম ফিজিকসকে সমর্থন করলেও সেগুলোতে বেশ কিছু ত্রুটি ছিল। তবে এমআইটির গবেষণায় পুরোনো ত্রুটিগুলোর সমাধান করা হয়েছে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া