ভালো বইয়ের সুবাস পাঠকের হৃদয়ে বহু বছর থেকে যায়: ইফতেখারুল ইসলাম
Published: 10th, May 2025 GMT
বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ইফতেখারুল ইসলাম বলেছেন, বইয়ের ছোঁয়া পড়ুয়াদের পরিবর্তন করে দেয়। যাঁরা বই পড়ে আর যাঁরা পড়ে না, তাঁদের পার্থক্য খুব স্পষ্টভাবেই বোঝা যায়। একটি ভালো বইয়ের সুবাস পাঠকের হৃদয়ে বহু বছর থেকে যায়।
আজ শনিবার বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন ইফতেখারুল ইসলাম।
বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের উদ্যোগে ঢাকা মহানগরের স্কুল পর্যায়ের ছাত্রছাত্রীদের বইপড়া কর্মসূচির পুরস্কার বিতরণ উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কর্মসূচির সহযোগিতায় রয়েছে গ্রামীণফোন। অনুষ্ঠানের আয়োজক বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র।
গতকাল শুক্রবার ও আজ শনিবার আটটি পর্বে ঢাকা মহানগরের পাঁচ হাজারের বেশি স্কুলপড়ুয়া ছাত্র–ছাত্রী পুরস্কার গ্রহণ করে।
এ সময় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠার সময়কার স্মৃতি হাতড়ে ইফতেখারুল ইসলাম বলেন, ‘অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ ১৯৭৮ সালে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন। মাত্র ৩৫ টাকায় পল্লিকবি কবি জসীমউদ্দীনের “নক্সীকাঁথার মাঠ” কাব্যোপন্যাসের ১০টি কপি কিনে নিয়ে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের যাত্রা শুরু হয়েছিল।’
ইফতেখারুল ইসলাম আরও বলেন, ‘“মানুষ তাঁর স্বপ্নের সমান বড়”, অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ এ উক্তি প্রচারের পাশাপাশি বাস্তবায়ন করেছেন। আজ তাঁর বইপড়া কর্মসূচি দেশের কয়েক কোটি মানুষকে সম্পৃক্ত করেছে।’
ভালো মানুষ হওয়ার জন্য বইপড়া গুরুত্বপূর্ণ—উল্লেখ করে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে পর্বতারোহী নিশাত মজুমদার বলেন, ‘আমার স্বপ্ন ছিল এভারেস্ট জয় করা। আমি সেখানে গিয়েছি। তোমরাও স্বপ্নকে আঁকড়ে ধরে লক্ষ্যে এগিয়ে যাবে।’
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে নিশাত মজুমদার বলেন, ‘প্রত্যেক মানুষের জীবনের চড়াই-উতরাই আছে। সেটা সবাইকে অতিক্রম করতে হয়। তোমাদেরকে ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে হবে। আর ভালো মানুষ হওয়ার পূর্বশর্ত বেশি বেশি বই পড়া।’
বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের উদ্যোগে ঢাকা মহানগরের স্কুল পর্যায়ের ছাত্রছাত্রীদের বইপড়া কর্মসূচির পুরস্কার বিতরণ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানের অতিথি ও পুরস্কারপ্রাপ্তদের কয়েকজন। ১০ মে, বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইফত খ র ল ইসল ম প রস ক র অন ষ ঠ ন আবদ ল
এছাড়াও পড়ুন:
চির নতুনেরে দিল ডাক, পঁচিশে বৈশাখ
‘তোমার প্রকাশ হোক কুহেলিকা করি উদঘাটন, সূর্যের মতন। রিক্ততার বক্ষ ভেদি আপনারে করো উন্মোচন। উদয়দিগন্তে ওই শুভ্র শঙ্খ বাজে। মোর চিত্তমাঝে, চির-নূতনেরে দিল ডাক/পঁচিশে বৈশাখ।’
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এভাবে চির-নতুনের মধ্যে নিজের আবির্ভাবক্ষণকে অনুভব করেছেন। রবি’র কিরণে উজ্জ্বল এই পঁচিশে বৈশাখ। আজ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৪তম জন্মবার্ষিকী।
উপলক্ষে জাতীয় পর্যায়ে আজ থেকে শুরু হচ্ছে ৩ দিনব্যাপী অনুষ্ঠান। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির উদ্যোগে এবছর বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মবার্ষিকী উদযাপনের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘রবীন্দ্রনাথ ও বাংলাদেশ’।
১২৬৮ বঙ্গাব্দের পঁচিশে বৈশাখ কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে বাঙালির এই প্রিয় কবির জন্ম। নিজ কর্মের মাধ্যমে নতুন একটি কালের সূচনা করে গেছেন রবীন্দ্রনাথ। তিনি উপহার দিয়ে গেছেন ৫২টি কাব্যগ্রন্থ, ৩৮টি নাটক, ১৩টি উপন্যাস ও ৩৬টি প্রবন্ধ ও অন্যান্য গদ্যসঙ্কলন। তাঁর সর্বমোট ৯৫টি ছোটগল্প ও ১৯১৫টি গান যথাক্রমে গল্পগুচ্ছ ও গীতবিতান সংকলনে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
১৯১৩ সালে ‘গীতাঞ্জলি’ কাব্যগ্রন্থের জন্য সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার অর্জন করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। বহু ভাষায় অনূদিত হয়েছে তাঁর সাহিত্য। সাহিত্যের পাশাপাশি রবীন্দ্রনাথের গান বাংলা সংগীত ভাণ্ডারকে দারুণভাবে সমৃদ্ধ করেছে। এর আবেদন কোন দিনও ফুরোবার নয়। যত দিন যাচ্ছে ততই রবীন্দ্রসঙ্গীতের বাণী ও সুরের ইন্দ্রজালে নিজেকে জড়িয়ে নিচ্ছে বাঙালি। তাদের আবেগ-অনুভূতি কবিগুরুর গানের সঙ্গে মিলেমিশে একাকার হয়ে যাচ্ছে।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ২৫, ২৬, ২৭ বৈশাখ (০৮, ০৯, ১০ মে) কুষ্টিয়ার শিলাইদহের রবীন্দ্র কুঠিবাড়িতে আয়োজন করা হয়েছে সকলের জন্য উন্মুক্ত অনুষ্ঠানের। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সহযোগিতায় এবং কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় আজ সকাল সাড়ে ৯টায় প্রধান অতিথি হিসেবে এই অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। এতে সভাপতিত্ব করবেন সংস্কৃতি সচিব মো. মফিদুর রহমান।
স্বাগত বক্তৃতা করবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. ফরহাদ সিদ্দিক এবং স্মারক বক্তৃতা করবেন অধ্যাপক মনসুর মুসা। বিশেষ অতিথি থাকবেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ, কুষ্টিয়ার ভাইস চ্যান্সেলর ড. নকীব মোহাম্মাদ নসরুল্লাহ। অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করবেন কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মো. তৌফিকুর রহমান।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সমবেত নৃত্য ‘আকাশ ভরা সূর্যতারা’ পরিবেশন করবে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির নৃত্যশিল্পীবৃন্দ। ‘আনন্দ ধারা বহিছে ভূবনে’ ও ‘ভালোবেসে সখী’ গান দুটি পরিবেশন করবেন সুমা রানী রায়। এরপর একক সংগীত ‘আমি কোথায় পাবো তারে’ পরিবেশন করবেন বুলবুল ইসলাম, ‘ঘরেতে ভ্রমর এলো গুণগুনিয়ে’ পরিবেশন করবেন সুমা রানী রায় এবং ‘তুমি কেমন করে গান’ পরিবেশন করবেন বুলবুল ইসলাম। দ্বৈত সংগীত ‘বিশ্ব সাথে যোগে যেথায়’ পরিবেশন করবেন সুমা রানী রায় ও বুলবুল ইসলাম।
সবশেষে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির নৃত্যশিল্পীরা পরিবেশন করবেন সমবেত নৃত্য ‘ঐ মহা মানব আসে’।
আগামীকাল ৯ মে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সংগীত, নৃত্য ও আবৃত্তি বিভাগের আয়োজনে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে ‘আনন্দযজ্ঞে আমার নিমন্ত্রণ’ শীর্ষক অনুষ্ঠান। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সচিব ও দায়িত্বপ্রাপ্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ ওয়ারেছ হোসেন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সংগীত, নৃত্য ও আবৃত্তি বিভাগের পরিচালক মেহজাবীন রহমান অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করবেন।
এছাড়াও একাডেমির আয়োজনে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আগামীকাল ৯ মে ৭টি বিভাগে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে নিয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।
ঢাকা/টিপু