নাচে-গানে মন মাতাতে বলিউডের আলাদা সুনাম আছে। বিশেষ করে বলিউডে কিছু গানের সঙ্গে নায়িকাদের নাচ ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে; যেগুলো সিনেমাপ্রেমীদের কাছে ইতিহাস হয়ে আছে! ‘এক দো তিন’ এই গান যেমন মাধুরী দীক্ষিত ছাড়া কল্পনা করা যায় না, তেমনি ‘টিপ টিপ বারসা পানি’ রাভিনা ট্যান্ডনের ক্যারিয়ারে সবচেয়ে আলোচিত একটি কাজ।

অক্ষয় কুমার ও রাভিনা ট্যান্ডন অভিনীত ‘মোহরা’ (১৯৯৪) সিনেমার জনপ্রিয় এই গান দর্শক-শ্রোতাদের মন জয় করে নিয়েছিল। এবার মায়ের সেই ‘আইকনিক’ গানে পারফর্ম করলেন রাশা থাডানি। রাশার নাচের ভিডিও এখন অন্তর্জালে ভাইরাল।   

ইন্ডিয়া টুডে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, একটি পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে নেচে স্টেজ পারফর্মে অভিষেক হলো রাশা থাডানির। এ যাত্রার সূচনালগ্নে, মাকে শ্রদ্ধাকে জানিয়ে তারই বিখ্যাত ‘টিপ টিপ বারসা’ গানে পারফর্ম করেন এই অভিনেত্রী। রাশার পরনে হলুদ রঙের শাড়ি-ড্রেস। এমন লুকে রাশার নাচে মুগ্ধতা প্রকাশ করেন উপস্থিত দর্শকরা।

আরো পড়ুন:

হেরা ফেরি থ্রি: এবার সরে দাঁড়ালেন পরেশ রাওয়াল

ভেঙে ফেলা হতে পারে মিঠুনের বাড়ি!

কেবল তাই নয়, সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে রাশার নাচের ভিডিও। যা দেখে ভূয়সী প্রশংসা করছেন নেটিজেনরা। ধনশ্রী লেখেন, “স্টেজে যেন রাভিনা নাচছেন।” রাম লেখেন, “রাশা আগুন।” ঐন্দ্রিলা লেখেন, “সে (রাশা) ভালো নেচেছে।” এমন অসংখ্য মন্তব্য ভেসে বেড়াচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।

মায়ের পথ অনুসরণ করে চলচ্চিত্রে পা রেখেছেন রাশা। গত ৬ জানুয়ারি ‘আজাদ’ সিনেমার মাধ্যমে বলিউডে অভিষেক হয়েছে তার। সিনেমাটি বক্স অফিসে সাফল্য না পেলেও প্রশংসা কুড়ান ২০ বছরের রাশা। অভিনয়-নাচ নয়, গানেও পারদর্শী এই অভিনেত্রী।

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র

এছাড়াও পড়ুন:

পাহাড়ে আমের ফলন কম, চাষিরা হতাশ

পার্বত্য জেলা বান্দরবানে প্রতিবছর আম উৎপাদন কৃষকদের জন্য আয়ের বড় উৎস। তবে চলতি বছর সময়মতো বৃষ্টি না হওয়ায় এ অঞ্চলে আমের গাছে মুকুল আসলেও তা রক্ষা পায়নি পর্যাপ্ত পানির অভাবে। এতে ফলন আশানুরূপ না হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন পাহাড়ের আম চাষিরা।

চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এবার গ্রীষ্মের শুরু থেকে তাপমাত্রা ছিল অস্বাভাবিকভাবে বেশি। অন্যদিকে, বৈশাখের শুরুতে স্বাভাবিকভাবে যে বৃষ্টি হয়, সেটি না হওয়ায় আমের গাছে সময়মতো পানির জোগান নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। ফলে অনেক গাছের মুকুল ঝরে গেছে। আবার যেসব গাছে ফল এসেছে, তাও হয়েছে কম ও মানসম্মত নয়।

প্রাকৃতিক বৈরিতা ও পানির অভাবের কারণে উৎপাদন ১০ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছে কৃষি বিভাগ। ফলে সরাসরি আর্থিক  প্রভাব পড়ছে স্থানীয় আম চাষিদের মাঝে।

বান্দরবান জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে,  বান্দরবানে ৬০ শতাংশ রাংগৈ, ২০ শতাংশ আম রূপালী ও অন্যান্য জাতের ১০ শতাংশ আমের আবাদ হয়ে থাকে। ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ১০ হাজার ২৩৯ হেক্টরে উৎপাদন হয়েছে ১ লাখ ১২ হাজার ২৮৫ মেট্রিক টন। চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে ১০ হাজার ৩০০ হেক্টর আবাদে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ১৩ হাজার ৩০০ মেট্রিক টন। তবে প্রাকৃতিক বৈরিতা ও পানির অভাবের কারণে উৎপাদন কিছুটা কমতে পারে বলে জানান।

চাষিরা বলছেন, এই সংকট মোকাবিলায় স্থানীয় প্রশাসন ও কৃষি বিভাগের সহযোগিতা এখন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। বিকল্প সেচ সুবিধা, আগাম আবহাওয়ার পূর্বাভাস ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ভবিষ্যতে এ ধরনের প্রাকৃতিক বৈরিতা মোকাবিলা করা সম্ভব বলে মনে করছেন তারা।

লাইমি পাড়ার আমচাষি আভয় বম জানান, তার পাঁচ একর আমবাগানে এ বছর গাছে মুকুল এসেছিল ঠিকই, কিন্তু বৃষ্টির অভাবে তা ঝরে গেছে। তিনি জানান, গত বছর পাঁচ একর বাগান থেকে প্রায় ২০০ মণ আম পেয়েছিলেন, কিন্তু এবার ১৫০ মণও হবে না বলে মনে করছেন তিনি।

গেৎশিমনি পাড়ার আমচাষি নান থাং বম বলেন, এ বছর সময়মতো বৃষ্টি না হওয়ায় আমের ফলন অনেক কম হয়েছে। শুধু তাই নয়, আমের আকার ও গুণগত মানও আগের বছরের তুলনায় অনেক খারাপ। গত বছর তিন-চারটি রাংগুই আমে এক কেজি হতো, আর এবার ছয়-সাতটি আম লাগছে এক কেজি করতে।

আম চাষি মংক্য চিং মারমা জানান, এ বছর আমের ফলন তুলনামূলকভাবে কম হলেও পাহাড়ি আমের চাহিদা রয়েছে বেশ। ফলে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আম ব্যাপারিরা সরাসরি বাগানে এসে প্রতি মণ আম ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায় কিনে নিচ্ছেন। কেউ কেউ আবার পুরো বাগানই একসঙ্গে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন দেশের বিভিন্ন জেলায়।

চট্টগ্রাম থেকে আসা আম ব্যবসায়ী মো. নুরুল আবছার জানান, তিনি বান্দরবানের বিভিন্ন পাড়া থেকে ‘রাংগুই’ ও ‘আম রূপালী’ প্রজাতির আম সংগ্রহ করে চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করে থাকেন।

বান্দরবান জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক এমএম শাহ্ নেয়াজ জানান, এ বছর আমের উৎপাদন কিছুটা কম হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আমের মুকুল আসার পর গুটি বাঁধার সময় গাছে সেচ দেয়ার প্রয়োজন ছিল অথবা সময়মতো বৃষ্টি হওয়া দরকার ছিল। কিন্তু প্রয়োজনের সময় বৃষ্টি হয়নি। অনিয়মিত বৃষ্টি ও দীর্ঘ বিরতির কারণে ফলনের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

তিনি আরো বলেন, ‘‘আমরা চেষ্টা করেছি, কিছু কিছু এলাকায় কৃষকদের দেখিয়েছি যে, গাছের গোড়ায় সেচ না দিয়েও ফলন রক্ষা করা সম্ভব। যদি ফল বৃদ্ধির সময়ে গাছে স্প্রে মেশিন ব্যবহার করে পানি ছিটানো যায়, তবে ফল ঝরে পড়া কিছুটা রোধ করা যাবে।’’

এ প্রসঙ্গে তিনি আরো জানান, বৃষ্টির দীর্ঘ বিরতির সময় কৃষকদের বাগানে পানি সরবরাহের ন্যূনতম ব্যবস্থা করতে একটি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। প্রস্তাব অনুযায়ী, জুমঘরে টিনের চাল স্থাপন করে দুই পাশে চার ইঞ্চি পাইপ বসানো হবে। এই দুই পাইপ সংযুক্ত করে একটি পাইপের মাধ্যমে ১০ হাজার লিটারের পানির ট্যাঙ্কে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করা যাবে। এই পানি পরবর্তীতে স্প্রে মেশিনের মাধ্যমে গাছে ব্যবহার করা হলে ফল ঝরে পড়া অনেকটাই কমে আসবে বলে তিনি মনে করেন।

ঢাকা/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ