আইপিএলে খেলার লোভে পড়ে প্রতারক চক্রের কাছে ২৪ লাখ রুপি খোয়ালেন তরুণ ক্রিকেটার
Published: 23rd, May 2025 GMT
আইপিএলের ফ্র্যাঞ্চাইজি দল রাজস্থান রয়্যালসের স্কোয়াডে সুযোগ পাইয়ে দেওয়ার লোভ দেখিয়েছিল সাইবার প্রতারক চক্র। সেই ফাঁদে পা দিয়ে ২৪ লাখ রুপি খুইয়েছেন কর্ণাটকের ১৯ বছর বয়সী রাজ্য পর্যায়ের এক ক্রিকেটার। গতকাল এই খবর জানিয়েছে কর্ণাটক পুলিশ।
আরও পড়ুন৪৩৭ রানের ম্যাচে সেঞ্চুরি করে নায়ক মার্শ১১ ঘণ্টা আগেকর্ণাটকের বেলাগাভি জেলার চিনচানি গ্রামের উঠতি ক্রিকেটার রাকেশ ইয়াদুরে গত বছর মে মাসে হায়দরাবাদে অনুষ্ঠিত এক টুর্নামেন্টে স্থানীয় নির্বাচকদের নজরে আসেন। এরপরই পেশাদার ক্রিকেটার হওয়ার আশা বেড়ে যায় রাকেশের।
পুলিশ জানিয়েছে, গত বছর ডিসেম্বরে রাকেশ ইনস্টাগ্রামে একটি বার্তা পান। সেই বার্তায় তাঁকে জানানো হয়, রাজস্থান রয়্যালসে খেলার জন্য তাঁকে নির্বাচন করা হয়েছে। বার্তা প্রেরকের পক্ষ থেকে বলা হয়, ২০০০ রুপির বিনিময়ের একটি নিবন্ধন ফরম পূরণ করতে হবে। বিশ্বাস করে বার্তা প্রেরকের কথামতো কাজ করেন রাকেশ। ব্যস সেই যে শুরু, এরপর গত বছরের ২২ ডিসেম্বর থেকে এ বছরের ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত কয়েক দফায় রাকেশ মোট ২৩ লাখ ৫৩ হাজার রুপি দিয়েছেন বলে জানিয়েছে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
প্রতারক চক্র খুব দ্রুত অর্থ তুলে নিয়েছে। ব্যাংক হিসাব খালি পড়ে আছে। প্রাথমিক সূত্র বলছে প্রতারক চক্রের অবস্থান রাজস্থান। আমরা সেখানে সাইবার দল মোতায়েন করছি। বেলাগাভির পুলিশ সুপার ভীমাশঙ্কর গুলেদপ্রতারক চক্র তাঁকে ৪০ হাজার থেকে ৮ লাখ রুপি ম্যাচ ফি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নিজেদের কথামতো কাজ করিয়ে নিয়েছে।
আরও পড়ুন৪ রানে ১ উইকেট সাকিবের, দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে লাহোর১১ ঘণ্টা আগেপ্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও রাকেশ রাজস্থানের অফিশিয়াল কিট ব্যাগ, জার্সি কিংবা ফ্লাইটের টিকিট পাননি। নিজেদের দেওয়া প্রতিশ্রুতির কিছুই পূরণ না করে প্রতারক চক্র যখন রাকেশের কাছে আরও তিন লাখ রুপি দাবি করে, তখন তিনি বুঝতে পারেন প্রতারণার শিকার হয়েছেন। প্রতারক চক্র এরপরই যোগাযোগের সব প্ল্যাটফর্মে রাকেশকে ব্লক করে দেয়। একটি ফোন নম্বর থেকে এখনো কিছু বার্তা পান রাকেশ। তবে সেই নম্বরেও যোগাযোগ করতে পারেননি তিনি।
রাকেশ এরপর বেলাগাভি কেন্দ্রীয় পুলিশ স্টেশনে অভিযোগ দায়ের করেন এবং এরপরই তদন্ত শুরু হয়। বেলাগাভির পুলিশ সুপার ভীমাশঙ্কর গুলেদ জানিয়েছেন, রাকেশের বাবা কর্ণাটক সড়ক পরিবহন করপোরেশনের নিরাপত্তাকর্মী। তিনি অনেক কষ্ট করে ছেলের হাতে প্রায় ২৪ লাখ রুপি তুলে দিয়েছেন।
ভীমাশঙ্কর বলেন, ‘প্রতারক চক্র খুব দ্রুত অর্থ তুলে নিয়েছে। ব্যাংক হিসাব খালি পড়ে আছে। প্রাথমিক সূত্র বলছে প্রতারক চক্রের অবস্থান রাজস্থান। আমরা সেখানে সাইবার দল মোতায়েন করছি।’
অর্থ ফিরে পাওয়ার অপেক্ষায় থাকা রাকেশ চান না তাঁর মতো এমন ভুল আর কেউ করুক, ‘আশা করি পুলিশ আমার অর্থ উদ্ধার করে দেবে। আমি যার ভেতর দিয়ে গিয়েছি, অন্য কারও তা হোক সেটা চাই না।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বন্দীদের ফুল দিয়ে বরণ, চালু হলো ফেনীর দ্বিতীয় কারাগার
সংস্কার শেষে ফেনীর দ্বিতীয় কারাগার চালু হয়েছে। আজ শনিবার সকালে বন্দীদের ফুল দিয়ে বরণ করার মধ্য দিয়ে এ কারার যাত্রা শুরু হয়। এতে চট্টগ্রাম বিভাগের আটটি কারাগারের সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের ও ফেনী জজ আদালতে বিচারাধীন মামলার আসামিদের রাখা হবে।
কারা সূত্র জানায়, দেশের পুরোনো চারটি কারাগারের মধ্যে ফেনী-২ কারাগার একটি। শত বছরের পুরোনো এ কারাগার ভবন ছিল জরাজীর্ণ। এ কারণে ২০১৯ সালে ১২ জানুয়ারি এ কারাগার থেকে বন্দীদের ফেনীর শহরতলির রানীরহাট এলাকার নতুন কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। এরপর থেকে কারাগারটি অনেকটা ‘পরিত্যক্ত’ অবস্থায় ছিল।
নতুন করে চালু হওয়া কারাগারটির অবস্থান ফেনী শহরের মাস্টারপাড়ায়। এটি ১৯১৫ সালে সাবজেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এরপর ১৯৯৮ সালে জেলা এটিকে কারাগারে উন্নীত হয়। এ কারাগারের বর্তমান ধারণক্ষমতা ১৭২ জন। এর মধ্যে ১৭০ জন পুরুষ ও ২ জন নারী। কারাগার চালু করার জন্য গতকাল কুমিল্লা জেলা কারাগার থেকে ২৪ জন ও চট্টগ্রাম থেকে চারজন বন্দীকে আনা হয়েছিল। তাঁরা সবাই সশ্রম সাজাপ্রাপ্ত। এ কারাগারে তাঁরা রান্নার দায়িত্বে থাকবেন।
কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, ধাপে ধাপে সাজাপ্রাপ্ত ও বিচারাধীন বন্দীদের ফেনীর দ্বিতীয় কারাগারে আনা হবে। আপাতত এতে কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ২৬ জন, কুমিল্লা থেকে ৭৪ জন, নোয়াখালী থেকে ১৫ জন, লক্ষ্মীপুর থেকে ৪ জন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ৩৩ জন বন্দী এখানে স্থানান্তর করা হবে। এতে সেল, রান্নাঘর, কিশোর ওয়ার্ড, মসজিদসহ প্রয়োজনীয় সুবিধা রয়েছে। এ কারাগার নিয়ে বর্তমানে দেশে কারার সংখ্যা ৭১।
জানতে চাইলে ফেনী-২–এর জেল সুপার মো. দিদারুল আলম বলেন, ‘রাষ্ট্র চায়, কারাগার শুধু শাস্তির জায়গা নয়, সংশোধনের কেন্দ্র হোক। এরই অংশ হিসেবে সংস্কার শেষে ফেনী কারাগার-২ চালু হয়েছে।’
কারাগারের ভারপ্রাপ্ত জেলার ফেরদৌস মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ কারাগারে স্থানান্তরিত বন্দীদের সব সুযোগ-সুবিধা ইতিমধ্যে নিশ্চিত করা হয়েছে। চিকিৎসক ও প্রশিক্ষিত নার্সও যোগদান করেছেন। বেশির ভাগ পদে কর্মচারীরাও কাজ শুরু করেছেন।’