ভোগান্তির ছবি তোলা যাবে না: ছাত্রদল কর্মী
Published: 23rd, May 2025 GMT
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে প্রায় সময় রাজধানী ঢাকায় বিভিন্ন দাবি দাওয়া নিয়ে রাস্তা অবরোধ করে আন্দোলন করার ফলে সাধারণ মানুষের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। সেই ভোগান্তির ছবি তোলায় সাংবাদিকের মোবাইল কেড়ে নিয়ে চেক করলেন এক ছাত্রদল কর্মী।
সেসময় তিনি বলেন, “আমি একজন ছাত্রদল কর্মী। ভোগান্তির ছবি তোলা যাবে না।”
বৃহস্পতিবার (২২ মে) বিকেল সাড়ে চারটায় রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে সামনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও দ্রুত বিচারের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচির সময় যানজট সৃষ্টি হলে সেই ছবি তোলার সময় রাইজিংবিডি ডটকমের নিজস্ব প্রতিবেদক রায়হান হোসেনের ব্যক্তিগত মোবাইল ও অফিস আইডি কার্ড নিয়ে চেক করেন ঐ ছাত্রদল কর্মী।
ভুক্তভোগী সংবাদকর্মী বলেন, “আমি সাধারণত মানুষের ভোগান্তি নিয়ে একটি প্রতিবেদন করছিলাম। হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে যানজটের ছবি তোলার সময় এক ছাত্রদল নেতা আমার মোবাইল এবং আইডি কার্ড নিয়ে নেয়। এরপর মোবাইলের ফটোগ্যালারি চেক করে। তারপর জিজ্ঞেস করে আপনি কেন ছবি তুললেন? আমি তার নাম জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, আমি একজন ছাত্রদল কর্মী। ভোগান্তির ছবি তোলা যাবে না।”
এই প্রতিবেদক আরো বলেন, “আমি বললাম, কেন ছবি তোলা যাবে না? এটা আমার কাজ। এরপর ঐ ছাত্রদল নেতা আমাকে তাদের সভাপতির কাছে নিয়ে যেতে চান। তবে বারডেম হাসপাতালের সামনে পৌঁছলে তিনি আমার মোবাইল ও আইডি কার্ড ফেরত দিয়ে আবার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের দিকে চলে যান।”
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ছাত্রদল ওই কর্মীর নাম আব্দুল কাইয়ুম। তিনি সরকারি বাংলা কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি।
সাংবাদিকের মোবাইল চেক করার বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির বলেন, “আমরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। পরবর্তীতে সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত আপনাদের জানানো হবে।”
ঢাকা/আরএইচ/এস
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সাড়ে ৫ বছর পর জামিনে মুক্তি পেলেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই দুই শিক্ষার্থী
জঙ্গি সন্দেহে গ্রেপ্তার হওয়ার সাড়ে পাঁচ বছর পর জামিনে মুক্তি পেয়েছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী—নুর মোহাম্মদ অনিক ও মোজাহিদুল ইসলাম। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় খুলনা জেলা কারাগার থেকে তাঁরা মুক্তি পান। এর আগে গত সপ্তাহে উচ্চ আদালতে তাঁদের জামিন মঞ্জুর করা হয়।
সহপাঠীদের ভাষ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ওই দুই শিক্ষার্থীকে তুলে নিয়ে যান। ১৭ দিন ধরে অজ্ঞাত স্থানে রেখে তাঁদের ওপর শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়। পরে ২৫ জানুয়ারি পুলিশ জানায়, বিস্ফোরক দ্রব্যসহ তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। একই দিন খুলনার কৃষক লীগ কার্যালয় ও আড়ংঘাটা থানার গাড়ির গ্যারেজে বোমা হামলার মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এরপর পুলিশ আরও চারটি মামলা করে তাঁদের বিরুদ্ধে।
নুর মোহাম্মদ অনিক মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা ডিসিপ্লিনের এবং মোজাহিদুল ইসলাম পরিসংখ্যান ডিসিপ্লিনের ১৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। গত বছর আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকার পরিবর্তনের পর সহপাঠী, রুমমেট, শিক্ষক ও স্বজনেরা তাঁদের মুক্তির দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন করেন।
গতকাল মুক্তির পর কারাগারের সামনে দুই শিক্ষার্থীকে ফুল দিয়ে বরণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, পরিবারের সদস্য ও ঘনিষ্ঠজনেরা।
ওই দুই ছাত্রের আইনজীবী আকতার জাহান বলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে মোট ছয়টি মামলা হয়েছিল। এর মধ্যে দুটি মামলায় তাঁরা খালাস পেয়েছেন। দুটি মামলায় জামিন হয় এবং সোনাডাঙ্গা থানার অপর দুটি মামলায় দণ্ড দেওয়া হয়। দণ্ডপ্রাপ্ত মামলাগুলোর জামিন চেয়ে উচ্চ আদালতে আবেদন করা হয়। আদালত জামিন মঞ্জুর করেছেন। ছুটি থাকায় আদালতের আদেশ কারাগারে পৌঁছাতে তিন দিন সময় লেগেছে। এরপর গতকাল সন্ধ্যায় তাঁদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রেজাউল করিম বলেন, ‘জঙ্গি নাটকে যাঁরা জড়িত, তাঁদের বিচার হওয়া উচিত। দীর্ঘদিন পর কারামুক্ত হওয়া দুই শিক্ষার্থী নতুন জীবন ফিরে পেয়েছেন। তাঁদের পাশে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থাকবে। তাঁদের বরণ করে নিতে আমাদের একটি প্রতিনিধিদল খুলনা কারাগারে গিয়েছিল।’