পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় পায়রা বন্দরের জন্য ভূমি অধিগ্রহণের সময় উচ্ছেদ হওয়া ছ-আনিপাড়ার ৬টি রাখাইন পরিবারকে পুনর্বাসনের দাবিতে আজ রাজধানীতে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এই সভা হয়। বেসরকারি সংগঠন নাগরিক উদ্যোগ ও ভুক্তভোগী পরিবারগুলো যৌথভাবে এর আয়োজন করে। সভায় বক্তারা উচ্ছেদের ন্যায়সংগত সমাধান এবং অবিলম্বে পুনর্বাসনের দাবি জানান।

সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস। সঞ্চালনায় ছিলেন মানবাধিকারকর্মী দীপায়ন খীসা। আলোচনায় অংশ নেন এএআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, আদিবাসী ফোরামের কোষাধ্যক্ষ মেইনথিন প্রমীলা, নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেনসহ আরও অনেকে।

ভুক্তভোগী চিং ধামো রাখাইন বলেন, ‘২৫০ বছরের পুরোনো আমাদের ভিটেমাটি অধিগ্রহণ করা হয়েছে কোনো আলোচনা ছাড়াই। এখন পর্যন্ত জমির ক্ষতিপূরণ না পেলেও বাড়ি ও গাছের সামান্য ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। মাসিক ভাড়া বাবদ ৫ হাজার টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ছিল, তা–ও ছয় মাস পর বন্ধ।’

অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, ‘অনেক চেষ্টার পর রাখাইন পরিবারগুলোর একটা পুনর্বাসনের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু যেখানে রাখা হয়েছে, সেটা তাদের সংস্কৃতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। রাখাইনদের একটি বিল্ডিংয়ে রাখা হলেও বলা হয় যত দিন পর্যন্ত তাদের স্থায়ী পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে না, তত দিন পর্যন্ত তাদের বাসাভাড়া দেওয়া হবে। কিন্তু কিছুদিন দেওয়ার পর সেসবও বন্ধ করে দেওয়া হয়। এভাবে মূলত সেখানে আদিবাসীদের উচ্ছেদ করা হচ্ছে এবং নিঃশেষ করে দেওয়া হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার সাখাওয়াত হোসেনকে দাবিনামাটি পাঠিয়েছি এবং একটি স্মারকলিপি দেওয়া হবে।’

শামসুল হুদা বলেন, ‘ভূমি অধিগ্রহণের নামে আদিবাসীদের ইতিহাস-ঐতিহ্য ধ্বংস করা হচ্ছে। উন্নয়নের নামে এই আগ্রাসন বন্ধ হওয়া উচিত। বাংলাদেশে যে ভূমি অধিগ্রহণ আইন রয়েছে, এটি আসলে সংবিধানের যে মৌলিক অধিকার, তার পরিপন্থী। অধিগ্রহণের বিপরীতে যে ক্ষতিপূরণটুকু পাওয়ার কথা, তা–ও পাওয়া যায় না।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র খ ইন পর ব র

এছাড়াও পড়ুন:

আনচেলত্তির অভিষেকে মন ভরাতে পারল না ব্রাজিল

ইকুয়েডর ০ : ০ ব্রাজিল

নিজের প্রথম ম্যাচেই হতশ্রী ব্রাজিল দলকে কার্লো আনচেলত্তি আমূল বদলে দেবেন, এমন প্রত্যাশা হয়তো কেউ করেননি। কিন্তু ব্রাজিলের পারফরম্যান্সে আতবিশ্বাস ও উন্নতির আশা নিশ্চয় অনেকেরই ছিল। কিন্তু সেই আশা পূরণ হয়নি।

ব্রাজিলের পারফরম্যান্স আনচেলত্তির চেয়ে বরং গত মার্চে আর্জেন্টিনার কাছে বিধ্বস্ত হয়ে বিদায় নেওয়া দরিভাল ‍জুনিয়রকেই বেশি মনে করিয়ে দিচ্ছিল। পুরো ম্যাচে বলার মতো তেমন কোনো সুযোগও তৈরি করতে পারেনি আনচেলত্তির শিষ্যরা। এমনকি ইকুয়েডর যদি ফিনিশিংয়ে দুর্বলতা না দেখাত, তবে গোল শূন্য ড্র হওয়ার পরিবর্তে এই ম্যাচে হারতেও পারত ব্রাজিল।

এই ড্রয়ে দক্ষিণ আমেরিকার বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ১৫ ম্যাচে ২২ পয়েন্ট নিয়ে চার নম্বরে আছে ব্রাজিল। সমান ম্যাচে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে ইকুয়েডর আছে দুই নম্বরে।  

আরও পড়ুনএ মাসেই বিশ্বকাপের টিকিট পেতে ব্রাজিলের কী হিসাব, আর কারা পাচ্ছে টিকিট১২ ঘণ্টা আগে

আনচেলত্তির প্রথম দিনের অনুশীলনের পরই ব্রাজিলের সম্ভাব্য একাদশের কথা জানায় ব্রাজিলিয়ান সংবাদমাধ্যমগুলো। ইকুয়েডরের মনুমেন্টাল স্টেডিয়ামে নিজের প্রথম ম্যাচে সেই একাদশই মাঠে নামান ইতালিয়ান এই কোচ। তবে আনচেলত্তির অধীনে এখনো মানিয়ে নিতে না পারার বিষয়টি ব্রাজিলের খেলায় স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল।

হুটহাট কিছু ভালো আক্রমণ তৈরি করলেও, খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্সে ধারাবাহিকতার বেশ অভাব ছিল। বল দখলে রাখতেও বেশ হিমশিম খাচ্ছিল ব্রাজিল। এ সময় ব্রাজিলের চেয়ে ইকুয়েডরই তুলনামূলকভাবে বেশি উজ্জ্বল ছিল। তবে প্রথমার্ধে গোল পায়নি তারাও।

বিরতির পর ব্রাজিলকে চেপে ধরে ইকুয়েডর। শুরু থেকেই আক্রমণে গিয়ে সুযোগ তৈরির চেষ্টা করে তারা। কিন্তু বক্সের কাছাকাছি গিয়ে খেই হারাচ্ছিল ইকুয়েডরের খেলোয়াড়রা। মাঝমাঠে ভালো খেললেও ফিনিশিংয়ে ইকুয়েডর খুব একটা সুবিধা করতে পারছিল না।

ইকুয়েডরের চাপের মুখে একপর্যায়ে জোড়া বদল আনেন আনচেলত্তি। রিচাার্লিসন ও এস্তেভাওয়ের পরিবর্তে মাঠে নামেন গ্যাব্রিয়েল মার্তিনেল্লি ও ম্যাথিউস কুনিয়া। কিন্তু তাতেও খুব একটা পরিবর্তন আসেনি ব্রাজিলের খেলায়।

ইকুয়েডরের ওপর সাময়িক কিছু চাপ প্রয়োগ করলেও তা গোল আদায়ের জন্য যথেষ্ট ছিল না। ৭৬ মিনিটে কাসেমিরোর শট ঠেকিয়ে ইকুয়েডরকে রক্ষা করেন গোলরক্ষক ভালে। এই ম্যাচের বেশিরভাগ সময় নিজেদের ছায়াতেই ঢাকা ছিলেন ব্রাজিলের আক্রমণভাগের খেলেোয়াড়রা।

ম্যাচের শেষ দিকে ব্রাজিলের ওপর বেশ চাপ প্রয়োগ করে ইকুয়েডর। তবে ব্রাজিলের রক্ষণকে কাঁপিয়ে দিয়েও শেষ পর্যন্ত কাঙ্ক্ষিত গোলটি আদায় করতে পারেনি ইকুয়েডর। ঘরের মাঠে পয়েন্ট ভাগ করেই মাঠ ছাড়তে হয়েছে তাদের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ