অন্তর্বর্তীকালীন সংসদ সচিবালয় কমিশনের ৩৬তম বৈঠক অনুষ্ঠিত
Published: 27th, May 2025 GMT
জাতীয় সংসদ ভবনে মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সংসদ সচিবালয় কমিশনের ৩৬তম বৈঠক।
জাতীয় সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে সংসদ সচিবালয়ের আগামী অর্থবছরসহ পরবর্তী দুই অর্থবছরের বাজেট নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হয়।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মুখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়া, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব ড.
আরো পড়ুন:
বাজেটে ‘কৃষি-শিল্প-পাট-সুন্দরবন’ রক্ষায় পর্যাপ্ত বরাদ্দের দাবি
বাজেট: এসএমই ফাউন্ডেশনের ১৪০ প্রস্তাবনা
বৈঠকে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য জাতীয় সংসদের পরিচালন ও উন্নয়ন খাতে মোট ১৫৪ কোটি ৪ লাখ ৫ হাজার টাকার সংশোধিত বাজেট অনুমোদন দেওয়া হয়। পাশাপাশি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ২৩২ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট প্রাক্কলন এবং ২০২৬-২৭ অর্থবছরে ২৪৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা ও ২০২৭-২৮ অর্থবছরে ২৫৫ কোটি ৭৮ লাখ টাকার বাজেট প্রক্ষেপণ অনুমোদন করা হয়।
বৈঠকের শুরুতে ৩৫তম সংসদ সচিবালয় কমিশনের বৈঠকের কার্যবিবরণী উপস্থাপন করা হয় এবং সে বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহের বাস্তবায়ন অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হয়। পাশাপাশি সংসদ সচিবালয়ের চলমান প্রকল্পগুলোর বর্তমান অবস্থা ও অগ্রগতি সম্পর্কেও বিস্তারিত আলোচনা হয়।
বৈঠকের আলোচ্যসূচি উপস্থাপন করেন জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সচিব মোঃ মিজানুর রহমান এনডিসি।
ঢাকা/এএএম/রাসেল
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক পিছিয়ে রাজস্ব আদায়
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) ২ লাখ ৮৭ হাজার ২৫৭ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। সংস্থাটির ১০ মাসের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে যা প্রায় ৭১ হাজার ৪৭৬ কোটি টাকা কম। চলতি অর্থবছরের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে হলে এনবিআরকে পরবর্তী দুই মাসে ১ লাখ ৭৬ হাজার কোটি টাকা আহরণ করতে হবে। রাজস্ব আদায়-সংক্রান্ত এনবিআরের সাময়িক প্রতিবেদন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
অর্থবছরের ১০ মাসের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এ সময় রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হলেও গত বছরের একই সময়ের চেয়ে রাজস্ব আদায় বেড়েছে ৩ দশমিক ২৪ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের রাজস্ব আদায়ে এনবিআরের মূল লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। সম্প্রতি লক্ষ্যমাত্রা সংশোধন করে নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। তবে গত এপ্রিল পর্যন্ত আদায় হয়েছে ২ লাখ ৮৭ হাজার ২৫৭ কোটি টাকা। কিন্তু এ সময়ে রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ লাখ ৫৮ হাজার ৭৩৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ ১০ মাসে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৭১ হাজার ৪৭৬ কোটি টাকা।
চলতি অর্থবছরের ১০ মাসে ভ্যাট আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ২৯ হাজার ৪২২ কোটি টাকা। বিপরীতে আদায় ১ লাখ ১১ হাজার ২০২ কোটি টাকা। প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ৭৯ শতাংশ। আমদানি-রপ্তানি পর্যায়ে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ১ হাজার ৬৩০ কোটি টাকা। আদায় হয়েছে ৮১ হাজার ১১৬ কোটি টাকা। এ খাতে ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি ১ দশমিক ৩৬ শতাংশ। আয়কর খাতে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ২৭ হাজার ৬৮০ কোটি টাকা। আদায় হয়েছে ৯৪ হাজার ৯৩৮ কোটি টাকা। প্রবৃদ্ধি ৪ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
এনবিআরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, ‘সাধারণত মে-জুন মাসে রাজস্ব আদায় সবচেয়ে বেশি হয়। কিন্তু সরকারের চাপিয়ে দেওয়া সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে কর্মসূচির কারণে মে মাসে বড় ঘাটতির আশঙ্কা রয়েছে। তবে সরকারের সদিচ্ছা থাকলে আগামী মাসে এই ঘাটতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।’
চলতি মাসে এনবিআর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের টানা বেশ কয়েকদিনের কর্মসূচিতে অনেকটা স্থবির হয়ে পড়ে রাজস্ব কার্যক্রম। এতে চট্টগ্রাম বন্দর, কাস্টম হাউস এবং বিভিন্ন স্থলবন্দরে শুল্কায়ন কার্যক্রম প্রায় অচল হয়ে পড়ে। এতে রাজস্ব আদায়ে প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সম্প্রতি সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) বলছে, চলতি পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে অর্থবছর শেষে লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রাজস্ব ঘাটতির অঙ্ক ১ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে। আগামী ২ জুন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করবেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তার আগেই রাজস্ব ঘাটতির এই চিত্র সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
চলতি অর্থবছরের শুরুতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, পরবর্তী সময়ে রাজনৈতিক পরিবর্তন এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কারণে এনবিআরের কার্যক্রমে গতি কমে যায়। ডিসেম্বর থেকে কিছুটা গতি পেলেও এপ্রিল-মে মাসে আন্দোলনের ফলে আবারও রাজস্ব আদায়ে ভাটা পড়েছে। তবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আশ্বাসে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ তাদের কর্মসূচি স্থগিত করেছে। ফলে গতকাল থেকে রাজস্ব আদায় ও শুল্ক কার্যক্রম অনেকটা স্বাভাবিক রূপ নিয়েছে।