দেশের মাত্র ১৭ দশমিক ৪ শতাংশ নারী পিরিয়ড বা মাসিকের সময় স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করেন। বাকিদের ভরসা পুরোনো কাপড় ও তুলার মতো অস্বাস্থ্যকর কিছু। অথচ পুরোনো কাপড়, তুলা কিংবা রাসায়নিক সুগন্ধিযুক্ত ভ্যাজাইনাল প্রোডাক্ট ব্যবহারের কারণে ৯৭ শতাংশ নারীই জীবদ্দশায় কোনো না কোনো সময় সার্ভিক্যাল ইনফেকশনে আক্রান্ত হন। নারীর মাসিক স্বাস্থ্য বিধানের ওপর ক্যান্টারের ২০২৪ সালের হাউসহোল্ড পেনিট্রেশনের গবেষণায় উঠে এসেছে এমন তথ্য। 

এমন পরিস্থিতিতে আজ বুধবার পালিত হচ্ছে বিশ্ব মাসিক স্বাস্থ্য দিবস। এ উপলক্ষে মাসিক সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানানো এবং ওই সময়ে পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে সচেতনতা তৈরিতে দেশের বিভিন্ন সংগঠন নানা আয়োজন করেছে। ২০১৪ সালের ২৮ মে প্রথমবারের মতো বিশ্বব্যাপী দিবসটি পালিত হয়। এ বছর দিবসটির স্লোগান– মাসিকবান্ধব বিশ্ব গড়ি একসঙ্গে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নারীর স্বাভাবিক শারীরিক এক ক্রিয়া পিরিয়ড বা মাসিক। অথচ পরিবার কিংবা প্রতিষ্ঠান– কোথাও এ নিয়ে কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতা নেই। এতে নারীর সুস্থতা যেমন নিশ্চিত করা যাচ্ছে না, একইভাবে পেশাগত ও আর্থিক ক্ষেত্রেও তারা ক্ষতিগ্রস্ত হন। নারীর সুস্বাস্থ্যের অধিকার নিশ্চিতে তাই প্রয়োজন সম্মিলিত সহযোগিতা।

ক্যান্টারের গবেষণায়ও এই সময়ে নারীর শিক্ষা ও পেশাগত ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব দেখা গেছে। গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে ৪০ শতাংশ স্কুলছাত্রী মাসিকের সময় গড়ে তিন দিন স্কুলে অনুপস্থিত থাকে, তাদের শিক্ষাজীবনে বিরূপ প্রভাব ফেলে। উদ্বেগজনক বিষয় হলো, পোশাক শিল্পে কর্মরত প্রায় ৬০ লাখ নারী কর্মী মাসিকের সময় গড়ে ছয় দিন কাজে অনুপস্থিত থাকেন। এটি তাদের আর্থিক অবস্থার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলার পাশাপাশি শিল্প খাতের উৎপাদনশীলতাকেও ব্যাহত করে।

এ নিয়ে রাজধানীর একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মী মাহিন সমকালকে বলেন, কাজের প্রয়োজনে প্রায়ই তাঁকে থাকতে হয় অফিসের বাইরে– মাঠ পর্যায়ে। এ জন্য মাসের বিশেষ কয়েক দিন অর্থাৎ মাসিক চলার ওই সময় নিয়ে আতঙ্কে থাকেন তিনি। এর বড় কারণ, মাঠ পর্যায়ে পরিচ্ছন্ন শৌচাগার পাওয়া যায় না বললেই চলে। আবার নানা কুসংস্কারের কারণেও পড়তে হয় বিড়ম্বনায়। 

আরেক চাকরিজীবী ইসরাত জানান, অফিস বা বাসায় তেমন অসুবিধায় না পড়লেও দীর্ঘ যাত্রার ক্ষেত্রে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। 
মাহিন ও ইসরাতের মতো শিক্ষিত ও কর্মজীবী নারীদের যখন এ অবস্থা, তখন স্কুল-কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কিশোরীদের এ সময়ের সংকট মোকাবিলা করা হয়ে ওঠে আরও কঠিন। 

এ বিষয়ে প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞদের সংগঠন অবস্টেট্রিক্যাল অ্যান্ড গাইনোকোলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক ফারহানা দেওয়ান বলেন, বাংলাদেশের নারীরা মাসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়ে এখনও অনেক পিছিয়ে। দেশে এখনও মানসম্মত স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহারকারীর সংখ্যা খুবই কম। আবার যারা এটি ব্যবহার করেন, তারাও সঠিক ব্যবহার ও সময় সম্পর্কে সচেতন নয়। একই প্যাড দীর্ঘক্ষণ ব্যবহার করলে নারীর জরায়ুমুখের ত্বকে নানা সমস্যা ছাড়াও জরায়ু সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে। সেই সঙ্গে অনেক কিশোরী শিক্ষা ও সামাজিক সুযোগ থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে। নারীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় পরিবারকে এগিয়ে আসতে হবে। তাদের সচেতন করে তুলতে হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব যবহ র

এছাড়াও পড়ুন:

প্রাক্তন স্ত্রী দেবশ্রীর সঙ্গে প্রেমের সিনেমা করতে চান প্রসেনজিৎ

ভারতীয় বাংলা সিনেমার তারকা জুটি প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জি ও দেবশ্রী রায়। পর্দায় এ জুটির রোমান্স দেখে মুগ্ধ হয়েছেন অসংখ্য ভক্ত। রুপালি পর্দার রোমান্স ব্যক্তিগত জীবনেও গড়ায়। ভালোবেসে দেবশ্রী রায়কে বিয়ে করেন প্রসেনজিৎ। কিন্তু কয়েক বছর পরই এ বিয়ে ভেঙে যায়। তারপর দুজনের পথ আলাদা হয়ে যায়। 

সংসার ভাঙার পাশাপাশি দর্শক হারান রুপালি পর্দার জনপ্রিয় এই জুটিকে। এরপর আর কোনো সিনেমায় একসঙ্গে দেখা যায়নি তাদের। অবশেষে দূরত্ব কমিয়ে দেবশ্রীর সঙ্গে সিনেমা করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করলেন প্রসেনজিৎ।  

আরো পড়ুন:

নিজেকে তৈরি করে খোলামেলা দৃশ্যে অভিনয় করব: স্বস্তিকা

ছেলের বন্ধুরা ‘দিদি’ বলে ডাকে: শ্রাবন্তী

কিছুদিন আগে ‘আমি যখন হেমা মালিনী’ সিনেমার প্রচারে চিরঞ্জিত চক্রবর্তী বলেছিলেন—“দেব-শুভশ্রী জুটির পর আমি চাই আবার প্রসেনজিৎ-দেবশ্রী জুটি ফিরুক, এই জুটিটা ফেরার অত্যন্ত প্রয়োজন।” ‘দেবী চৌধুরানী’ সিনেমার প্রচারে চিরঞ্জিতের এই বক্তব্য প্রসেনজিৎকে জানানো হয়। 

এ বিষয়ে প্রসেনজিৎ বলেন, “আমি তো চাই দীপকদা একটা স্ক্রিপ্ট লিখুক আমাদের জন্য, আমার বহুদিনের ইচ্ছা ছিল এবং আমি অনেকবার দীপকদাকে বলেছি যে, আমি তোমার পরিচালনায় একটা কাজ করতে চাই। দীপকদা, আমাদের জন্য যদি পরিচালনা করেন তাহলে অবশ্যই আমি সিনেমা করতে চাই। আর আমি নিজেও ব্যক্তিগতভাবে দেবশ্রীর সঙ্গে আবারো একটা পরিণত প্রেমের সিনেমা করতে চাই।” 

তাহলে কী পুরোনো তিক্ততা ভুলে গেছেন প্রসেনজিৎ? জবাবে এই নায়ক বলেন, “আমার কারো সঙ্গে কোনো তিক্ততা নেই। যে আমার সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলবে, আমি সব সময় তাদের জন্য আছি। আর কোনো তিক্ততা নিয়ে বাঁচতে চাই না, যে কটা দিন আছি সবার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক নিয়েই থাকতে চাই।” 

এক সময় দেবশ্রীকে নিয়ে কথা বলতে খুব একটা স্বাচ্ছন্দ বোধ করতেন না প্রসেনজিৎ। তবে অভিমান ভুলে কাজের ক্ষেত্রে আবার এক হওয়ার কথা বললেন তিনি। বর্তমানকে ভালোবেসে যেমন এগিয়ে যান, ঠিক তেমনই কি অতীতকেও আঁকড়ে বাঁচেন?  

এ প্রশ্নের জবাবে প্রসেনজিৎ বলেন, “নিজের অতীতকে কখনো উপেক্ষা করা যায় না। মাঝেমাঝেই আমি আমার অতীতে ফিরে যাই; সেই সময়গুলোর জন্যই আজকের আমি। অতীত আমাকে অনেক ভালোবাসা, রাগ-দুঃখ-ক্ষোভ দিয়েছে। আমার ক্ষেত্রে যেটা অল্প কিন্তু তবু আছে সেটা হলো—ঘৃণা। সেটাও পেয়েছি, তবে অতীত যেমনই হোক না কেন, তাকে কখনো ফেলে দেওয়া যায় না। আমরা সবাই মাঝে মাঝে অতীতে ফিরে যাই।” 

সময়ের সঙ্গে অনেক কিছু বদলে গেছে। বর্তমান প্রজন্মের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতেও দ্বিধাবোধ করেন না প্রসেনজিৎ।তার ভাষায়—“এই বদলগুলোকে মেনে না নিলে আমাকে পিছিয়ে পড়তে হবে। আমি প্রচুর বদল দেখেছি, তবে যেই সময় যেটা এসেছে, তার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিয়েছি, এটাই তো করা উচিত। না হলে বর্তমান প্রজন্ম থেকে দূরে সরে যেতে হবে।”

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ