ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) থেকে ভবঘুরে উচ্ছেদে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) ও মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ।

বুধবার (২৮ মে) ঢাবিতে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ও সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে আয়োজিত সভায় এ পারস্পারিক সহযোগিতার ভিত্তিতে ভবঘুরে উচ্ছেদে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সভায় ঢাবি মেট্রোরেল স্টেশনের নিচ থেকে হকার, রিকশা ও ভ্রাম্যমাণ দোকান উচ্ছেদে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার কথা জানিয়েছে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ। মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের এই কাজে ঢাবির প্রক্টরিয়াল টিম ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) সহযোগিতা করবে বলেও জানানো হয়েছে।

আরো পড়ুন:

‘তপন বিহারী’ বৃত্তি পাচ্ছেন নোবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা 

যবিপ্রবিতে এয়ারটেলের কনসার্টে অবাধে মাদক সেবনের অভিযোগ

সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকার মেট্রোরেল স্টেশনের নিচে রিকশা, হকার, ভ্রাম্যমাণ দোকান এবং ভবঘুরে লোকজনের অবস্থান থেকে উদ্ভূত যানজট ও নিরাপত্তা ঝুঁকির বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে আলোচনা করা হয়। এ ধরনের বহিরাগতদের কারণে অপ্রীতিকর ঘটনা ও বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় পরিবেশ বিনষ্ট হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়।

সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, মেট্রোরেলের আওতাধীন ডিভাইডার এলাকায় বসবাসরত ভবঘুরে লোকজনকে সরাতেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন।

এছাড়া, স্টেশনের নিচে পর্যাপ্ত আলো নিশ্চিত করতে সেখানে বাতি স্থাপন ও নিরাপত্তা জোরদারে সিসি ক্যামেরা লাগানো হবে বলে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে সভায় সহকারী প্রক্টরবৃন্দ, এস্টেট ম্যানেজার, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি), ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এবং মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

ঢাবি প্রশাসন সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপদ ও পরিচ্ছন্ন রাখতে সবার সহযোগিতা কামনা করেছে।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ড এসস স সহয গ ত ভবঘ র

এছাড়াও পড়ুন:

গোপালগঞ্জে সহিংসতায় আরেক মামলা দায়ের

গোপালগঞ্জে গত ১৬ জুলাই জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশকে কেন্দ্র করে হামলার ঘটনায় আরেকটি মামলা হয়েছে। গোপালগঞ্জ সদর থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইন এবং বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে এ মামলাটি দায়ের করা হয়। এতে আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনের ৪৪৭ জন নেতাকর্মি ও সমর্থকদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং পাঁচ হাজার জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। এ মামলায় মোট আসামি ৫ হাজার ৪৪৭ জন।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) রাতে গোপালগঞ্জ সদর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মতিয়ার মোল্লা বাদী হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইন ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে এ মামলাটি দায়ের করেন। 

গোপালগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মোহাম্মদ সাজেদুর রহমান মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিদের মধ্যে রয়েছে, গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহবুব আলী খান, গোপালগঞ্জের সাবেক পৌর মেয়র শেখ রকিব হোসেন, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী লিয়াকত আলী (লেকু), জেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম এম মাসুদ রানা, সাবেক সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নিতীশ রায়, শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম কবির, সাধারণ সম্পাদক আলিমুজ্জামান (বিটু), শহর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলী নাঈম খান জিমি।

আরো পড়ুন:

গংগাচড়ায় হিন্দু পাড়ায় হামলা: গ্রেপ্তার ৫ জন আদালতে

শিক্ষকের মুক্তি চেয়ে শিক্ষার্থীদের আদালত চত্বরে অবস্থান, সড়ক অবরোধ

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ১৬ জুলাই এনসিপির গোপালগঞ্জ পৌর পার্কের উন্মুক্ত মঞ্চের সমাবেশ স্থলে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মীরা জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করে এবং স্বাভাবিক কাজ থেকে বিরত রাখে। আসামিরা রাষ্ট্র ও সরকার বিরোধী সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সংগঠিত করে। সরকারি কাজে বাধাদান ও সরকারি কর্মচারীদের আক্রমণ করে হত্যার উদ্দেশ্যে ককটেল নিক্ষেপ করে যৌথ বাহিনীর সদস্যদের মারধর ও গুরুতর জখম করে।

এ নিয়ে গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে হামলা, পুলিশের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ এবং রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগে ও হত্যার ঘটনায় মোট ১৩টি মামলা করা হলো। সদর, কাশিয়ানী, টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া থানায় এসব মামলা করা হয়। ১৩টি মামলায় কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৫ হাজার ৬৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

গত ২৬ জুলাই হামলায় নিহত রমজান মুন্সীর ভাই জামাল মুন্সী বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। অজ্ঞাত আসামির সংখ্যা এ মামলায় উল্লেখ করা হয়নি। গত ১৯ জুলাই রাতে ৪ যুবকের নিহতের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে গোপালগঞ্জ সদর থানায় ৪টি হত্যা মামলা দায়ের করে। ৪ হত্যা মামলায় অজ্ঞাত ৫ হাজার ৪০০ দুষ্কৃতকারীকে আসামি করা হয়। এছাড়া গোপালগঞ্জ সদর থানায় সন্ত্রাস দমন আইনে ২টি ও জেলা কারাগারে হামলার ঘটনায় ১টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

অন্যদিকে, বিশেষ ক্ষমতা আইনে কাশিয়ানী থানায় ২টি, কোটালীপাড়া থানায় ১টি ও টুঙ্গিপাড়া থানায় ১টি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।

গত ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জে এনসিপির পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে হামলা চালায় নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। ৫ ঘণ্টার হামলা-সহিংসতায় ৪ জনের মৃত্যু হয়। পরের দিন ১৭ জুলাই গভীর রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরো ১ জনের মৃত্যু হয়। এ নিয়ে নিহতের সংখ্যা দাড়ায় পাঁচ জনে। আহত হয় সাংবাদিক ও আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যসহ শতাধিক মানুষ। 

ঢাকা/বাদল/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ