২৯ মে ২০২৫। সকাল থেকেই আকাশের মুখ ভার। অফিস যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে রাস্তায় বের হতেই জটিল এক ধাঁধার মুখোমুখি হলাম। অবিরাম বৃষ্টিতে রাজধানীর রাজপথে থমকে আছে অসংখ্য যানবাহন। মাথায় একটাই দুশ্চিন্তা—এই অবস্থায় গন্তব্যে পৌঁছাব কী করে?
যাহোক, সকাল আটটার দিকে কোনোরকমে পল্টন থেকে বাসে করে রওনা দিলাম। গন্তব্য উত্তরা। চার ঘণ্টা পরও মালিবাগ পার হতে পারলাম না। দীর্ঘ সময় ধরে বাসে আটকে থাকায় সৃষ্টি হয় গুমোট পরিবেশ। থেমে থেমে শোনা যাচ্ছিল শিশুর কান্না আর কর্মজীবীদের দীর্ঘশ্বাস। কেউ কেউ ফোনে অফিসের বসের কাছে এই সংকটের ব্যাখ্যা করছিলেন। কেউ আবার অসহায় চোখে জানালার বাইরে তাকিয়ে জলাবদ্ধ নগরীর বাসিন্দাদের ভোগান্তির নানা চিত্র দেখছিলেন। সব মিলিয়ে মনে হচ্ছিল, আমরা যেন দুর্যোগকবলিত কোনো শহরের বাসিন্দা।
গতকালের বৃষ্টিতে রাজধানীর অনেক সড়কেই পানি জমেছিল। জলজটে যানবাহনে আটকে রাস্তায় তখন অসহনীয় পরিস্থিতি। পেছন থেকে শোনা যাচ্ছে, যানবাহনের হনের মুহুর্মুহু আওয়াজ। অথচ সামনের রাস্তাটাই বন্ধ। পাশেই হাঁটুপানিতে ভেজা শরীর নিয়ে অপেক্ষা করছেন রিকশাচালক—সব মিলিয়ে নগরের করুণ এক অচলাবস্থা। যানজটে অতিষ্ঠ হয়ে ততক্ষণে অনেকেই বাস থেকে নেমে হাঁটা শুরু করেছেন। প্রায় সবার মধ্যেই চাপা আক্ষেপ—কখন শেষ হবে এই বন্দিদশা?
সবচেয়ে কষ্ট পেয়েছি এক বৃদ্ধাকে দেখে। তিনি চিকিৎসার জন্য বারডেম যাচ্ছিলেন। বলছিলেন, ‘ছেলে গাড়ি নিতে আসবে বলছিল। কিন্তু এমন বৃষ্টিতে ও (ছেলে) নিজেই আটকে গেছে।’
বাসিন্দাদের এমন অসহায় চিত্র কোনো নগরের সঙ্গে মানায় কি? এ শহর কি কখনো অধিকাংশ বাসিন্দার প্রশান্তির কারণ হতে পারবে?
ইমাম হাসান, শিক্ষার্থী, জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ, অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
খারাপ স্মৃতি না ভেবে ভালো স্মৃতি ভাবার পরামর্শ কাউন্সেলিংয়ে
যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় ট্রমা (মানসিক আঘাত) কাটিয়ে উঠতে রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ির মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কাউন্সেলিং করাচ্ছে। অন্যদিকে বিমানবাহিনীর পক্ষ থেকে অস্থায়ী মেডিকেল ক্যাম্প বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে চিকিৎসাসেবা ও ওষুধপত্র। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা কাউন্সেলিং আর চিকিৎসাসেবা নিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির ক্যাম্পাসে যাচ্ছেন।
আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত দিয়াবাড়ির মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে।
শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের পাশাপাশি কিছু উৎসুক লোকজন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির ভেতরে যাচ্ছেন। উৎসুক লোকজন মূলত বিমান বিধ্বস্তের জায়গা দেখছেন। এ ছাড়া ক্যাম্পাসের কাছাকাছি এলাকার শিক্ষার্থীরাও ক্যাম্পাসটিতে আসছেন। তবে গণমাধ্যমকর্মীদের আজ ক্যাম্পাসের ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।
দুপুর ১২টার দিকে কথা হয় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী মোমিনুল ইসলামের সঙ্গে। সে কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের বাংলা মাধ্যমের শিক্ষার্থী। ক্যাম্পাসে আসার কারণ জানতে চাইলে মোমিনুল প্রথম আলোকে বলে, ‘আজকে শিক্ষকেরা আমাদের ডেকেছেন। জানতে চেয়েছেন, বিমান বিধ্বস্তের পর আমাদের কারও কোনো সমস্যা হচ্ছে কি না? বিশেষভাবে মানসিক কোনো সমস্যা হচ্ছে কি না? হয়ে থাকলে কাউন্সেলিং নিতে বলেছেন।’
রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ির মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ফটক