জিয়া পরিবার দেশকে দেশি-বিদেশি শত্রুর হাত থেকে রক্ষা করেছে: খোরশেদ
Published: 1st, June 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি ও মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ বলেছেন, শহীদ জিয়া ও জিয়া পরিবার চরম দুর্যোগে বার বার বাংলাদেশকে রক্ষা করেছেন, আলোর পথ দেখিয়েছেন।
মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তৎকালীন রাজনৈতিক নেতৃত্ব দেশবাসীকে পাক হানাদার বাহীনির বন্দুকের নলের মুখে রেখে পালিয়ে গেলেও শহীদ জিয়া মহান স্বাধীনতার ঘোষনা দিয়ে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে প্রতিরোধ যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে দেশকে স্বাধীন করেছিলেন।
গতকাল রোববার ১জুন শহরের মাসদাইর তালাফ্যাক্টরি এলাকায় বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪ তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আয়োজিত রান্না করা খাবার বিতরণ ও দোয়া মাহফিল কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে একথা বলেন তিনি। এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রবীন বিএনপি নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন খান।
তিনি আরো বলেন, ১৯৭৫ সালেও দেশ যখন চরম ক্রান্তিলগ্ন অতিক্রম করছিল তখনও শহীদ জিয়া আলোকবর্তিকা হয়ে সিপাহী বিপ্লবের মাধ্যমে দেশকে স্থিতিশীল করে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। শহীদ জিয়াকে হত্যা করে ক্ষমতা কুক্ষিগত করা স্বৈরাচার এরশাদের কবল থেকে দেশকে ১৯৯০ সালে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া উদ্বার করেন।
এরই ধারাবাহিকতায় ফ্যাসিষ্ট হাসিনার পতনও হয়েছে শহীদ জিয়া ও খালেদা জিয়ার যোগ্য উত্তরসূরী তারেক রহমানের নেতৃত্বে।বাংলাদেশ যখনই কোন সংকটে পরেছে তখনই জিয়া পরিবার দেশী বিদেশী শত্রুর হাত থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করেছেন।
খোরশেদ আরো বলেন, এখন সময় এসেছে জিয়া পরিবারের নেতৃত্বে ফ্যাসিষ্ট হাসিনা কর্তৃক ধংস করা অর্থনীতি ও গণতন্ত্রকে পুননির্মাণ করার। তাই ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ধানের শীষের প্রার্থীদের বিজয়ী করার আহবান জানান খোরশেদ।
এসময় শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও আরাফাত রহমান কোকো ও জুলাই আন্দোলনে শহীদদের রুহের মাগফেরাত ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও জুলাই আন্দোলনে আহতদের সুস্থ্যতা কামনা করে দোয়া পরিচালনা করেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর ওলামাদলের আহবায়ক হাফেজ শিব্বির আহমেদ।
মহানগর বিএনপি নেতা ও ১৩ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি শাহজাহান খন্দকার, মহানগর বিএনপি নেতা আনোয়ার মাহমুদ বকুল, মহানগর বিএনপি নেতা সরকার মুজিব, মহানগর বিএনপির সাবেক দপ্তর সম্পাদক আক্তার হোসেন খোকন শাহা, মহানগর কৃষক দল নেতা রানা মুজিব, নাজমুল কবির নাহিদ, আক্তার হোসেন, আওলাদ হোসেন, শেখ মো: আমান, খসরু নোমান, বাচ্চু ব্যাপারী, রানা মুন্সী, মাসুম খন্দকার, মো: মাসুদ, আরিফ আকন্দ প্রমুখ।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ব এনপ ন র য়ণগঞ জ জ য় উর রহম ন ব এনপ র পর ব র রহম ন
এছাড়াও পড়ুন:
জনগণের বৃহত্তর ঐক্য ছাড়া এই ফ্যাসিস্ট ব্যবস্থার পতন হবে না: সাকি
এই মুহূর্তে ফ্যাসিবাদ বাংলাদেশের প্রধান সমস্যা উল্লেখ করে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, ‘জনগণের বৃহত্তর ঐক্য ছাড়া এই ফ্যাসিস্ট ব্যবস্থার পতন হবে না।’ তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদ থাকলে বাংলাদেশের শ্রমিক, কৃষক, কর্মচারী, নারী, জাতিগত বা ধর্মীয় নিপীড়িত মানুষের কোনো দাবি আদায় হবে না।
গণসংহতি আন্দোলনের পঞ্চম জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন জোনায়েদ সাকি। শুক্রবার বেলা তিনটার পর রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে দলটির তিন দিনব্যাপী জাতীয় সম্মেলন উদ্বোধন করা হয়।
কোনো একক দলের পক্ষে শেখ হাসিনার কায়েম করা ফ্যাসিস্ট ব্যবস্থার বদল সম্ভব না বলে মনে করেন জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেন, ‘আজকে আমরা নির্বাচনী গণতন্ত্রের কথা বলছি। কিন্তু এই নির্বাচনী গণতন্ত্র যদি খেটে খাওয়া মানুষের অধিকার রক্ষার গণতন্ত্রে পরিণত হতে না পারে, তাহলে এই গণতন্ত্র টেকে না। সে কারণে আমরা রাজনৈতিক ব্যবস্থা পরিবর্তনের পাশাপাশি দেশের অর্থনীতি, দেশের সামাজিক ব্যবস্থা, দেশের সাংস্কৃতিক ব্যবস্থা—সবকিছু পরিবর্তনের জন্য লড়াই করেছি।’
মুক্তিযুদ্ধ ও জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার কথা উল্লেখ করে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী বলেন, সে জন্য দেশের বিদ্যমান রাজনীতিতে পরিবর্তন আনতে হবে।
ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে জনগণের বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তোলাই এখন প্রধান কর্তব্য বলে মন্তব্য করেন জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ আজকে এমন একটা লক্ষ্য নিয়ে সামনে যাচ্ছে, কোনো কিছুই আর তাকে পিছুটান দিতে পারবে না। সেই পিছুটান যারা দেবে, যারা কোনো না কোনোভাবে, অন্য কোনো নামে কর্তৃত্ববাদী শাসন কায়েম করতে চাইবে, ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রকাঠামো তৈরি করতে চাইবে, তাদের এ দেশের জনগণ আর গ্রহণ করবে না। কাজেই এ দেশে জাতীয়তাবাদের নামে যেমন ফ্যাসিবাদ চলবে না, কোনো মতবাদ দিয়ে কোনো ফ্যাসিবাদ এ দেশে গ্রহণযোগ্য হবে না।’
‘গণতান্ত্রিক উত্তরণের জন্য বিচার, সংস্কার, নির্বাচন—সবকিছুই অপরিহার্য’ উল্লেখ করে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী বলেন, ‘ন্যূনতম জাতীয় ঐকমত্য ছাড়া আমাদের রাজনৈতিক উত্তরণ হবে না।’ রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কোনো বিরোধ তৈরি না করে জুলাই জাতীয় সনদ কার্যকর করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
‘আজকে যে সংকট তৈরি করেছে এই অন্তর্বর্তী সরকার ও ঐকমত্য কমিশন, আমি বিশ্বাস করি যে এই সংকট কেটে যাবে। এ দেশের মানুষ কখনো পরাজিত হয় না। পরাজয় বরণ করেনি, পরাজয় বরণ করবে না।’বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরএই অনুষ্ঠানে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আজকে যে সংকট তৈরি করেছে এই অন্তর্বর্তী সরকার ও ঐকমত্য কমিশন, আমি বিশ্বাস করি যে এই সংকট কেটে যাবে। এ দেশের মানুষ কখনো পরাজিত হয় না। পরাজয় বরণ করেনি, পরাজয় বরণ করবে না।’
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, বাংলাদেশ রাষ্ট্রের মৌলিক শাসনতান্ত্রিক কাঠামো পরিবর্তন করতে হবে এবং মৌলিক সংস্কারের ভিত্তিতে এককেন্দ্রিক ক্ষমতা, স্বৈরতন্ত্র তৈরির সাংবিধানিক কাঠামোর পরিবর্তন করতে হবে।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, অনেক সময় চরম বুদ্ধিমান মানুষেরা নির্বুদ্ধিতার পরিচয় দেয়; জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এবার সেই পরিচয়টা দিয়েছে। তারা এখন বিশ্বাসঘাতক, প্রতারক হিসেবে আখ্যায়িত হচ্ছে। এর চেয়ে কষ্টকর, দুঃখের, লজ্জার আর কিছু হতে পারে না।
শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে গণসংহতি আন্দোলনের জাতীয় সম্মেলনের সূচনা করেন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ নাজমুল কাজীর স্ত্রী মারিয়া সুলতানা এবং শহীদ ওমর নুরুল আবছারের স্ত্রী ফারজানা জাহান। অনুষ্ঠানে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের পাশাপাশি জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন দলের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শুরুতেই জুলাই শহীদদের প্রতি সম্মান জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, নারীর রাজনৈতিক অধিকার ফোরামের সংগঠক মাহরুখ মহিউদ্দিন, গণসংহতি আন্দোলনের রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য তাসলিমা আখতার, ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান শেখ রফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান ও ১২-দলীয় জোটের সমন্বয়ক সৈয়দ এহসানুল হুদা, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান ও জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সমন্বয়ক ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (মার্ক্সবাদী) সমন্বয়ক মাসুদ রানা প্রমুখ।
কৃষক-শ্রমিক, খেটে খাওয়া, নিপীড়িত ও প্রান্তিক মানুষের ন্যায্য হিস্যার দাবি এবং ‘বৈষম্যহীন ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশ, অধিকার ও মর্যাদার বাংলাদেশ, জনগণের বাংলাদেশ’ গড়ার অঙ্গীকারে গণসংহতি আন্দোলন তাদের পঞ্চম জাতীয় সম্মেলন করছে। তিন দিনের এই আয়োজনে সারা দেশ থেকে আসা প্রতিনিধি ও পর্যবেক্ষকেরা দলের আগামী নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন।