বকেয়া বেতনের দাবিতে সাভারের হেমায়েতপুরে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস, জলকামান ব্যবহার করে ও লাঠিচার্জ করে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে।  

সোমবার (২ জুন) সকাল ৯টার দিকে বসুন্ধরা গার্মেন্টস লিমিটেড নামে একটি তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা  সড়ক অবরোধ করেন। প্রায় দেড় ঘণ্টা সড়ক অবরোধের পর পুলিশ শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।   

শ্রমিকদের অভিযোগ, কারখানা কর্তৃপক্ষ এপ্রিল ও মে মাসের বেতন এখনো পরিশোধ করেনি। গত ১৭ মে দেওয়া এক নোটিশে ১৮ মে থেকে ৩১ মে পর্যন্ত কারখানা লে-অফ ঘোষণা করা হয় এবং ২৫ মে বকেয়া বেতন পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। তবে নির্ধারিত দিনে বেতন পরিশোধ না করায় ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা ওই দিন বিকেলে কারখানার সামনের আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করেন। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতিতে কর্তৃপক্ষ ২৯ মে বেতন পরিশোধের আশ্বাস দেয়। কিন্তু তাও পূরণ হয়নি।

পুনরায় গতকাল রবিবার বেতন দেওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। সোমবার সকাল থেকে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শ্রমিক বলেন, “কারখানার মালিক বারবার তারিখ দিলেও বেতন দেয় না। তাই বাধ্য হয়ে আমরা সড়কে নেমেছি। পুলিশ টিয়ার শেল ছুড়েছে, লাঠিচার্জ করেছে, পানি ছিটিয়েছে। অনেকে আহত হয়েছেন।”

অপর এক শ্রমিক বলেন, “সেনাবাহিনী মালিককে এনে বেতন দেওয়ার তারিখ জানালেও মালিক তা মানেনি। ঈদের আগে বেতন-বোনাস না পেলে আমরা বাড়ি যাব কীভাবে?”

জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সাভার থানা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কবির হোসেন বলেন, “দুই মাসের বেতন পাওনা রয়েছে শ্রমিকদের। সামনে ঈদ, শ্রমিকরা বেতন না পেলে তারা চলবে কীভাবে? আমরা কারখানা কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করছি দ্রুত বকেয়া পরিশোধ করতে।”

বসুন্ধরা গার্মেন্টস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শহিদুল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোমিনুল ইসলাম ভুঁইয়া বলেন, “শ্রমিকেরা সড়ক অবরোধ করলে প্রথমে আমরা তাদের বুঝিয়ে সরানোর চেষ্টা করি। পরে বাধ্য হয়ে টিয়ার শেল ও জলকামান ব্যবহার করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি।”

ঢাকা/সাব্বির/ইভা 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর শ ধ

এছাড়াও পড়ুন:

সেই আছিয়ার পরিবারকে গরু ও ঘর দিল জামায়াত

মাগুরায় যৌন নিপীড়নের শিকার হয়ে মারা যাওয়া আলোচিত শিশু আছিয়ার পরিবারকে দুটি গরু ও একটি গোয়ালঘর উপহার দেওয়া হয়েছে। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের পক্ষ থেকে আছিয়ার পরিবারকে এ উপহার দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেলে মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার জারিয়া গ্রামে আছিয়ার বাড়িতে উপস্থিত হয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে উপহার হস্তান্তর করেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য এবং কুষ্টিয়া ও যশোর অঞ্চলের পরিচালক মোবারক হোসাইন।

এ সময় জেলা জামায়াতের আমির এম বি বাকের, সাবেক আমির ও কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা আব্দুল মতিনসহ স্থানীয় এবং জেলা কমিটির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

আরো পড়ুন:

শিশু ছাত্রীকে যৌন নির্যাতন, মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা 

অপারেশনের পর শিশুর মৃত্যু: তদন্ত কমিটি গঠন, থানায় মামলা

গত ১৫ মার্চ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান আছিয়ার বাড়িতে যান। তিনি শিশুটির মৃত্যুর ঘটনায় দ্রুত বিচার চান। সে সময় আছিয়ার পরিবারকে স্বাবলম্বী করতে একটি গোয়াল ঘর এবং দুটি গরু দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন জামায়াতের আমির। 

আট বয়সী আছিয়া মাগুরার নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের শিকার হয় বলে পরিবারের তরফ থেকে অভিযোগ ওঠে। গত ৬ মার্চ অচেতন অবস্থায় মাগুরার ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নেওয়া হয় তাকে। অবস্থার অবনতি হলে মাগুরা হাসপাতালের চিকিৎসকদের পরামর্শে শিশুটিকে নেওয়া হয় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে থেকে সেদিন সন্ধ্যায় উন্নত চিকিৎসার জন্য শিশুটিকে ঢাকায় নেওয়া হয় এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে ভর্তি করা হয়। দুই দিন পর ৮ মার্চ তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নেওয়া হয়। ১৩ মার্চ বৃহস্পতিবার সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় আছিয়ার।

ঢাকা/শাহীন/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ