এখন নেটফ্লিক্স বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় ওটিটি (ওভার দ্য টপ) প্রতিষ্ঠান। নেটফ্লিক্সকে একসময় গুগল অধিগ্রহণ করার পরিকল্পনা করেছিল বলে জানা গেছে। গুগলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সুন্দর পিচাই এক পডকাস্টে এসব তথ্য প্রকাশ করেছেন। গুগলের সাবেক কর্মী ডেভিড ফ্রিডবার্গের কাছে এক সাক্ষাৎকারে পিচাই নেটফ্লিক্স কেনার তথ্য প্রকাশ করেন। তিনি জানান, গুগল একসময় নেটফ্লিক্স কেনার কথা ভেবেছিল। এমনকি চুক্তির কাছাকাছি পৌঁছেছিল তারা।
গুগল প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান হিসেবে যাত্রার পর অনেক প্রতিষ্ঠান অধিগ্রহণ করেছে। অ্যান্ড্রয়েড, ইউটিউব, ফিটবিট, ওয়েজ ও নেস্টসহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান এর মধ্যে অন্যতম। সাধারণত ধারণা করা হয়, গুগলের মতো বড় প্রযুক্তি কোম্পানি ছোট কোম্পানিকে বেশি অধিগ্রহণ করে। নতুন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে প্রতিযোগিতা এড়িয়ে চলে বলে এমন করে অনেক প্রতিষ্ঠান বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো কেনে।
নেটফ্লিক্স নিয়ে বেশ কিছু জল্পনা ছিল বেশ আগে। গুগল ২০১৫ সালে নেটফ্লিক্সকে কিনতে আগ্রহী ছিল। যদিও গুগলের সিইও সুন্দর পিচাই তেমন তথ্য দেননি।
পডকাস্টে সুন্দরকে গুগলের অনুশোচনা রয়েছে, এমন কাজ নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। তখন পিচাই বলেন, ‘আমরা কোনো এক সময়ে নেটফ্লিক্স নিয়ে বিতর্ক করেছিলাম। ভেতরে–ভেতরে অত্যন্ত বড় আকারে সেই বিতর্ক চলেছে। নেটফ্লিক্স কেনার জন্য বেশ কাছেও গিয়েছিল গুগল। ২০১৫ সালে নেটফ্লিক্স নতুন কোনো প্রতিষ্ঠান ছিল না। ১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় নেটফ্লিক্স। ২০০৭ সাল থেকে নেটফ্লিক্স ইন্টারনেটের মাধ্যমে স্ট্রিমিং কনটেন্ট সেবা চালু করে। ইউটিউব ২০০৫ সালে চালু হয়। গুগল তা এক বছর পরে অধিগ্রহণ করেছিল।
নেটফ্লিক্স গুগল অধিগ্রহণ করলে কেমন হতো, তা নিয়ে এরই মধ্যে অনেক জল্পনাকল্পনা শুরু হয়েছে। যদিও সুন্দর পিচাই জানিয়েছেন গুগল নেটফ্লিক্স নিয়ে অনুতপ্ত নয়। গুগল তার প্রতিষ্ঠান গুগল ডিপমাইন্ডের সিইও ডেমস হাসাবিস, পরিচালক জন জাম্পারের মতো প্রতিভাবান ব্যক্তিদের পেয়ে অত্যন্ত গর্বিত বলে জানান সুন্দর পিচাই। তাঁরা আলফাফোল্ড তৈরি করেছেন। রসায়নে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। তাদের সম্পর্কে পিচাই বলেন, ‘আমি মনে করি আমরা অসাধারণ কাজ করেছি আমরা।’
সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ন দর প চ ই
এছাড়াও পড়ুন:
‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদনের পরবর্তী শুনানি বুধবার
রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের (রিভিউ) ওপর পরবর্তী শুনানির জন্য আগামীকাল বুধবার দিন রেখেছেন আপিল বিভাগ। আজ মঙ্গলবার শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের বেঞ্চ পরবর্তী ওই দিন ধার্য করেন।
এর আগে গত ১৮ মে শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ শুনানির জন্য ১ জুলাই দিন ধার্য করেছিলেন। ধার্য তারিখে বিষয়টি শুনানির জন্য রিভিউ আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবীর সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ ১৫ জুলাই পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন। আজ বিষয়টি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের কার্যতালিকার ৭ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।
ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স সংশোধন করে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। পরে ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। রায়ে রাষ্ট্রের সাংবিধানিক পদধারীদের পদক্রম ওপরের দিকে রাখা ও অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়। পাশাপাশি জেলা জজদের পদক্রম আট ধাপ উন্নীত করে সচিবদের সমান করা হয়।
আপিল বিভাগের রায়ের পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতির পদক্রম এক ধাপ উন্নীত করে জাতীয় সংসদের স্পিকারের সমান এবং রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের (স্বাধীনতা পুরস্কার, একুশে পদক ও মহান স্বাধীনতাসংগ্রামে অংশগ্রহণ করে যে মুক্তিযোদ্ধারা বীর উত্তম খেতাব পেয়েছেন) পদক্রমে যথাযথভাবে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত বলে উল্লেখ করা হয়।
ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) তৎকালীন চেয়ারম্যান ২০১৭ সালে পৃথক আবেদন করেন। রিভিউ আবেদনে রাষ্ট্রের ৯০ জন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল পক্ষভুক্ত হন। পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের ওপর গত ২৭ এপ্রিল শুনানি শুরু হয়।
আজ আদালতে রিভিউ আবেদনকারী মন্ত্রিপরিষদ সচিবের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন শুনানি করেন। রিট আবেদনকারী পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম শুনানিতে অংশ নেন।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী, ১৯৮৬ সালে ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরি করে। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর একই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর তা জারি করা হয়। পরে বিভিন্ন সময়ে তা সংশোধন করা হয়।
সর্বশেষ সংশোধন করা হয় ২০০৩ সালের ডিসেম্বরে। সংশোধিত এই ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরির ক্ষেত্রে সাংবিধানিক পদ, সংবিধান কর্তৃক স্বীকৃত ও সংজ্ঞায়িত পদগুলো প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের নিচের ক্রমিকে রাখা হয়েছে—এমন উল্লেখ করে এর বৈধতা নিয়ে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের তৎকালীন মহাসচিব মো. আতাউর রহমান ২০০৬ সালে রিট করেন।
রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট আট দফা নির্দেশনাসহ ১৯৮৬ সালের ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স (সংশোধিত) অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ২০১১ সালে আপিল করে। এ আপিলের ওপর শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। এ রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ২০১৭ সালে করা আবেদনের ওপর শুনানি চলছে।