Prothomalo:
2025-11-02@06:24:28 GMT

ইমান শক্তিশালী করার ১০ উপায়

Published: 10th, June 2025 GMT

 ইমান মানুষের হৃদয়ের সেই আলো, যা তাকে আল্লাহর পথে পরিচালিত করে এবং জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সঠিক নির্দেশনা প্রদান করে। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘শরীরে একটি মাংসপিণ্ড আছে, যা সুস্থ থাকলে পুরো শরীর সুস্থ থাকে, আর যা নষ্ট হলে পুরো শরীর নষ্ট হয়। সেটি হলো হৃদয়।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫২)

ইমানের শক্তি হৃদয়ের পবিত্রতা ও সুস্থতার ওপর নির্ভর করে। তাই ইমানকে শক্তিশালী করা প্রতিটি মুসলিমের জন্য অপরিহার্য। আমরা এখানে ইমান বৃদ্ধির ১০ গুরুত্বপূর্ণ উপায় উল্লেখ করেছি।

১.

আল্লাহর সুন্দর নামসমূহের জ্ঞান অর্জন

আল্লাহর সুন্দর নামসমূহ (আসমাউল হুসনা) জানা এবং তা বোঝা ইমানের মূল ভিত্তি। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহর ৯৯টি নাম আছে, যে তা সংরক্ষণ করবে, তাদের অর্থ বুঝবে, বিশ্বাস করবে এবং তা দিয়ে আল্লাহর ইবাদত করবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ২৭৩৬)

মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘শরীরে একটি মাংসপিণ্ড আছে, যা সুস্থ থাকলে পুরো শরীর সুস্থ থাকে, আর যা নষ্ট হলে পুরো শরীর নষ্ট হয়। সেটি হলো হৃদয়।’সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫২

আল্লাহর নাম ও গুণাবলির গভীর জ্ঞান মানুষের হৃদয়ে ইমানের শিকড় গভীর করে এবং আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা বৃদ্ধি করে। এই জ্ঞান হৃদয়ে প্রশান্তি এনে ইমানকে অটুট রাখে।

আরও পড়ুনইমান কাকে বলে১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

২. কোরআনের আয়াত নিয়ে গভীরভাবে ভাবা

কোরআন আল্লাহর কালাম, যা হৃদয়ের খোরাক এবং আত্মার প্রশান্তি। কোরআনের আয়াত নিয়ে গভীর চিন্তাভাবনা ইমানকে শক্তিশালী করে। আল্লাহ বলেন, ‘যখন তাঁর আয়াতসমূহ তাদের সামনে তিলাওয়াত করা হয়, তখন তা তাদের ইমান বৃদ্ধি করে এবং তারা তাদের প্রতিপালকের ওপর ভরসা করে।’ (সুরা আনফাল, আয়াত: ২)

কোরআনের শিক্ষা, উপদেশ ও গল্প মনের সন্দেহ ও প্ররোচনা দূর করে। এটি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্র—ব্যক্তিগত, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক—জন্য পথনির্দেশ প্রদান করে। নিয়মিত কোরআন তিলাওয়াত ও তা বোঝার চেষ্টা ইমানের আলো উজ্জ্বল করে।

৩. মহানবী (সা.)-এর জীবনচরিত জানা

রাসুল (সা.)-এর জীবনী ও তাঁর উত্তম গুণাবলি সম্পর্কে জানাশোনা ইমানের শক্তি বাড়ায়। আল্লাহ বলেন, ‘তারা কি তাদের রাসুলকে চেনেনি, তাই তারা তাঁকে অস্বীকার করছে?’ (সুরা মুমিনুন, আয়াত: ৬৯)

তিনি আরও বলেন, ‘নিশ্চয়ই তুমি মহান চরিত্রের অধিকারী।’ (সুরা কালাম, আয়াত: ৪)

মহানবী (সা.)-এর সত্যবাদিতা, ধৈর্য, দয়া ও উত্তম আচরণ জানলে তাঁর প্রতি ভালোবাসা বাড়ে, যা ইমানের ভিত্তি। তাঁর জীবন থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা আমাদের জীবনে ইমানের প্রকাশ ঘটায় এবং তাঁকে আদর্শ হিসেবে অনুসরণের প্রেরণা জোগায়।

নিয়মিত কোরআন তিলাওয়াত ও তা বোঝার চেষ্টা ইমানের আলো উজ্জ্বল করে।আরও পড়ুনআল্লাহর ভয়ে কাতর থাকা ০৭ মার্চ ২০২৪

৪. সৃষ্টি নিয়ে চিন্তাভাবনা

মহাবিশ্বের সৃষ্টি, আকাশ-পৃথিবী, মানুষ ও অন্যান্য সৃষ্টির মধ্যে চিন্তাভাবনা ইমান শক্তিশালী করে। এই সৃষ্টির সৌন্দর্য, নিখুঁত বিন্যাস ও অপার উপকারিতা আল্লাহর কুদরত, জ্ঞান ও রহমতের প্রমাণ বহন করে। আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয় আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টিতে, রাত ও দিনের পরিবর্তনে জ্ঞানীদের জন্য নিদর্শন রয়েছে।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৯০)

প্রকৃতি আল্লাহর মহিমা উপলব্ধি করতে এবং তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ভক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।

৫. বেশি বেশি আল্লাহর জিকির ও দোয়া করা

জিকির ও দোয়া ইমানের প্রাণ। আল্লাহর জিকির হৃদয়ে ইমানের বৃক্ষ রোপণ করে এবং তা বৃদ্ধি করে। আল্লাহ বলেন, ‘যারা ইমান এনেছে, তাদের হৃদয় আল্লাহর জিকির দ্বারা প্রশান্তি লাভ করে। জেনে রাখো, আল্লাহর জিকির দ্বারাই হৃদয় প্রশান্তি পায়।’ (সুরা রা’দ, আয়াত: ২৮)

জিকির হৃদয়কে আল্লাহর নুরে জীবন্ত করে। শরীর ও মনকে শক্তি দেয়। রাসুল (সা.) হজরত ফাতিমা ও আলী (রা.)-কে রাতে ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ, ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ এবং ৩৪ বার আল্লাহু আকবার পড়তে বলেছিলেন, যা তাদের দৈনন্দিন কাজে শক্তি জোগায়। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২৭২৭)

যখন তাঁর আয়াতসমূহ তাদের সামনে তিলাওয়াত করা হয়, তখন তা তাদের ইমান বৃদ্ধি করে এবং তারা তাদের প্রতিপালকের ওপর ভরসা করে।সুরা আনফাল, আয়াত: ২আরও পড়ুনমরিয়ম (আ.)-এর অলৌকিক ঘটনা০৯ মে ২০২৫

৬. ইসলামের সৌন্দর্য জানা

ইসলামের আকিদা, নৈতিক বিধি ও আদেশ-নিষেধের সৌন্দর্য জানা ইমানকে শক্তিশালী করে। বিশুদ্ধ আকিদা হৃদয়কে সত্যের পথে রাখে, এর উত্তম নৈতিকতা জীবনকে সৌন্দর্যময় করে এবং এর ন্যায়বিচারপূর্ণ আইন জীবনকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করে। আল্লাহ বলেন, ‘কিন্তু আল্লাহ তোমাদের জন্য ইমানকে প্রিয় করেছেন এবং তা তোমাদের হৃদয়ে সৌন্দর্যমণ্ডিত করেছেন।’ (সুরা হুজুরাত, আয়াত: ৭)

জাফর ইবনে আবি তালিব (রা.) নাজাশির দরবারে ইসলামের সৌন্দর্য তুলে ধরে কুরাইশদের অন্ধকার জীবনের বিপরীতে ইসলামের আলোর প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। ইসলামের এই সৌন্দর্য হৃদয়ে ইমানের মাধুরী ছড়ায়।

৭. ‘ইহসান’ অর্জন

ইহসান হলো এমনভাবে আল্লাহর ইবাদত করা, যেন তিনি আমাদের দেখছেন। এটি ইমানের শ্রেষ্ঠ স্তর। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘ইহসান হলো তুমি এমনভাবে আল্লাহর ইবাদত করবে, যেন তুমি তাঁকে দেখছ, আর যদি তুমি তাঁকে না দেখো, তিনি তোমাকে দেখছেন।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৮)।

ইহসানের মাধ্যমে ইবাদত ও মানুষের সঙ্গে ব্যবহারে নিখুঁততা আসে। মানুষের প্রতি দয়া, সহানুভূতি ও সাহায্য ইমানের প্রকাশ। আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ ন্যায়বিচার, ইহসান এবং আত্মীয়দের প্রতি দান করার নির্দেশ দেন।’ (সুরা নাহল, ১৬: ৯০)

৮. আল্লাহর পথে দাওয়াত

আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেওয়া এবং সত্যের পথে পরস্পরকে উৎসাহিত করা ইমানের শক্তি বাড়ায়। আল্লাহ বলেন, ‘তার চেয়ে উত্তম কথা কার, যে আল্লাহর দিকে আহ্বান করে, সৎকর্ম করে এবং বলে, ‘আমি মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত’?’ (সুরা ফুসসিলাত, আয়াত: ৩৩)

আমর বিল মারুফ ও নাহি আনিল মুনকার (সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজে বাধা দেওয়া) ইমানের অবিচ্ছেদ্য অংশ। দাওয়াতের কাজে প্রমাণ ও যুক্তি দিয়ে সত্য প্রচার করতে হয়, ফলে এটি দাঈর নিজের ইমানকে শক্তিশালী করে।

আরও পড়ুনপ্রাঞ্জল বাংলা অনুবাদে কোরআন১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ইহসানের মাধ্যমে ইবাদত ও মানুষের সঙ্গে ব্যবহারে নিখুঁততা আসে। মানুষের প্রতি দয়া, সহানুভূতি ও সাহায্য ইমানের প্রকাশ।

৯. ইমানের বিপরীত বিষয়গুলো প্রতিরোধ করা

ইমানের শক্তি বাড়াতে কুফর, পাপাচার ও অবাধ্যতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। পাপ থেকে দূরে থাকা, তাওবা করা এবং শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গকে হারাম থেকে রক্ষা করা ইমানের জন্য অপরিহার্য।

আল্লাহ বলেন, ‘তোমাদের কেউ কি চায় যে, তার খেজুর ও আঙুরের বাগান থাকবে, তার নিচে নদী প্রবাহিত হবে, তাতে সব ধরনের ফল থাকবে, কিন্তু তাকে বার্ধক্য গ্রাস করবে, তার দুর্বল সন্তান থাকবে, আর তখন আগুনের ঝড় এসে তা পুড়িয়ে দেবে?’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ২৬৬)

এই উপমা দিয়ে আল্লাহ সতর্ক করেন, শয়তানি প্ররোচনা ও পাপ ইমানকে ধ্বংস করতে পারে। তাই ইমানের শত্রুদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করা জরুরি।

 ১০. দুনিয়ার স্বরূপ জানা

দুনিয়ার স্বরূপ জানা ইমানকে শক্তিশালী করে। দুনিয়া ক্ষণস্থায়ী এবং এর সুখ-সম্ভোগ তুচ্ছ। আল্লাহ বলেন, ‘দুনিয়ার জীবনের দৃষ্টান্ত যেন আকাশ থেকে বর্ষিত পানি, যা দিয়ে পৃথিবীর গাছপালা মিশ্রিত হয়, যা মানুষ ও পশু খায়।

অবশেষে যখন পৃথিবী তার শোভা গ্রহণ করে এবং সৌন্দর্যমণ্ডিত হয়, তখন তার অধিবাসীরা মনে করে তারা এর ওপর ক্ষমতাবান। তখন আমার আদেশ রাতে বা দিনে আসে, আর আমি তা শস্য কাটা মাঠে পরিণত করি, যেন গতকাল এর কিছুই ছিল না।’ (সুরা ইউনুস, আয়াত: ২৪)

দুনিয়াকে আখিরাতের পথ হিসেবে দেখলে ইমান শক্তিশালী হয় এবং আখিরাতের প্রতি মনোযোগ বাড়ে।

ইমান হলো মুমিনের জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ। ইমানের পথে অবিচল থাকলে মুমিন দুনিয়া ও আখিরাতে সাফল্য লাভ করবে।

 সূত্র: আল-জাজিরা ডটনেট।  অনুবাদ: মনযূরুল হক

আরও পড়ুনযে ১০ কারণে ইমান নষ্ট হয়ে যায়১৮ আগস্ট ২০২৩

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

শাহরুখের ব্যাপারে সাবধান করলেন জুহি চাওলা

বলিউড বাদশা শাহরুখ খান। অভিনয় গুণে কোটি কোটি ভক্তের হৃদয়ে দোলা দিয়েছেন তিনি। দীর্ঘ অভিনয় ক্যারিয়ারে যশ-খ্যাতি যেমন পেয়েছেন, তেমনি আয় করেছেন মোটা অঙ্কের অর্থও। রবিবার (২ নভেম্বর) ৬০ বছর পূর্ণ করে একষট্টিতে পা দেবেন এই তারকা।  

অভিনয় ক্যারিয়ারে অনেক নায়িকার সঙ্গে জুটি বেঁধে অভিনয় করেছেন শাহরুখ খান। তাদের মধ্যে অন্যতম জুহি চাওলা। ‘রাজু বান গায়া জেন্টলম্যান’, ‘রামজানে’, ‘ডর’, ‘ইয়েস বস’, ‘ডুপ্লিকেট’সহ আরো কিছু জনপ্রিয় সিনেমা উপহার দিয়েছেন এই জুটি। একসঙ্গে অভিনয় ছাড়াও, এই দুই তারকা বাস্তব জীবনে খুবই ভালো বন্ধু। কেবল তাই নয়, ব্যবসায়ীক অংশীদারও তারা। 

আরো পড়ুন:

শাহরুখের অজানা এই সাত তথ্য জানেন?

পাকিস্তানের সন্ত্রাসী তালিকায় সালমান খান কেন?

বন্ধু শাহরুখের জন্মদিন উপলক্ষে হিন্দুস্তান টাইমসের সঙ্গে কথা বলেছেন জুহি। এ আলাপচারিতায় স্মৃতিচারণ তো করেছেনই, পাশাপাশি শাহরুখের বিষয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছেন এই অভিনেত্রী।  

শাহরুখের সঙ্গে প্রথম পরিচয়ের বিষয়ে জুহি চাওলা বলেন, “আমি যখন প্রথম ‘রাজু বান গায়া জেন্টলম্যান’ সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হই, তখন সহপ্রযোজক বিবেক ভাসওয়ানি আমাকে বলেছিলেন, ‘আমার নায়ক দেখতে আমির খানের মতো।’ আমি শাহরুখকে দেখে ভীষণ অবাক হয়েছিলাম। দেখি, শাহরুখের চুল চোখের ওপরে নেমে এসেছে। আর সে একেবারেই আমার কল্পনার সেই ‘চকলেট বয়’ নয়! যখন কাজ শুরু করি, তখন বুঝতে পারি, সে একদম নতুন অভিনেতাদের মতো নয়, সে পরিশ্রমী, দিনে তিন শিফটে কাজ করছে।” 

একটি ঘটনা বর্ণনা করে জুহি চাওলা বলেন, “আমার মনে আছে, ‘ইয়েস বস’ সিনেমার শুটিংয়ের সময়, কোনো দৃশ্য ঠিকমতো লেখা না থাকলে পরিচালক আজিজজি (আজিজ মির্জা) বলতেন, ‘শাহরুখ আসুক, সব ঠিক হয়ে যাবে।’ রোমান্স আর মজার মিশেলে থাকা দৃশ্যগুলো আমাদের সবচেয়ে ভালো ছিল। সেই সূত্রেই আমরা অনেকগুলো সিনেমায় একসঙ্গে কাজ করেছি।” 

শাহরুখের পাশে অবস্থান করলে সাবধান থাকার কথার কথা বলেছেন জুহি। হাসতে হাসতে এ অভিনেত্রী বলেন, “শাহরুখের আশেপাশে থাকলে সাবধানে থাকবেন। কারণ সে কথা দিয়ে আপনাকে যেকোনো কিছু করাতে রাজি করিয়ে ফেলতে পারে। ওর কথাবলার ভঙ্গি এমন যে, আপনি ‘না’ বলতেই পারবে না। আমি ‘ডুপ্লিকেট’ সিনেমা করতে চাইছিলাম না, কারণ সেখানে আমার তেমন কিছু করার ছিল না। আমরা তখন আরেকটি সিনেমার শুটিং করছিলাম, আর শাহরুখ আমাকে সিঁড়িতে বসিয়ে দুই ঘণ্টা বোঝায় এবং আমি সিনেমাটিতে চুক্তিবদ্ধ হই। সে আপনাকে যেকোনো কিছু করতে রাজি করাতে পারে, তাই সাবধানে থাকবেন।” 

শাহরুখ খানের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্কের বিষয়ে জুহি চাওলা বলেন, “অফস্ক্রিনে আমাদের সম্পর্কেও উত্থান-পতন রয়েছে। কিন্তু সৃষ্টিকর্তা কোনো না কোনোভাবে আমাদের যুক্ত রেখেছেন, এমনকি আইপিএলের মাধ্যমেও। আমাদের বন্ধন কোনো পরিকল্পনার ফল নয়, এটা একেবারেই ভাগ্যের ব্যাপার।” 

শাহরুখ খানের সঙ্গে আইপিএল দল কলকাতা নাইট রাইডার্সের (কেকেআর) সহ-মালিক জুহি ও তার স্বামী জয় মেহতা। এই দলের পেছনে জুহি বিনিয়োগ করেছেন ৬২৯ কোটি রুপি। বর্তমানে এই দলটির মূল্য আছে ৯ হাজার ১৩৯ কোটি রুপি। শাহরুখ খানের সঙ্গে ‘রেড চিলিস গ্রুপ’ প্রতিষ্ঠা করেন জুহি। 

১৯৬৫ সালে ২ নভেম্বর ভারতের নয়াদিল্লিতে এক মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন শাহরুখ খান। তার শৈশবের প্রথম পাঁচ বছর কেটেছে ম্যাঙ্গালুরুতে। শাহরুখের দাদা ইফতিখার আহমেদ স্থানীয় পোর্টের প্রধান ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। যার কারণে সেখানে বসবাস করেন তারা। শাহরুখের বাবার নাম তাজ মোহাম্মদ খান, মা লতিফ ফাতিমা। 

দিল্লির হংসরাজ কলেজ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন শাহরুখ খান। তারপর জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়াতে গণযোগাযোগ বিষয়ে মাস্টার্সে ভর্তি হন। কিন্তু অভিনয় জীবন শুরু করার কারণে পড়াশোনা ছেড়ে দেন তিনি। তবে বলিউডে ক্যারিয়ার শুরুর দিকে দিল্লির ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামা-তে ভর্তি হন এই শিল্পী। 

১৯৯২ সালে ‘দিওয়ানা’ সিনেমার মাধ্যমে বলিউডে পা রাখেন শাহরুখ খান। রোমান্টিক ঘরানার এ সিনেমায় অভিনয় করে নজর কাড়েন তিনি। সিনেমাটিতে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের কারণে সেরা নবাগত অভিনেতা হিসেবে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার লাভ করেন শাহরুখ। 

একই বছর ‘চমৎকার’, ‘দিল আসনা হে’ ও ‘রাজু বান গায়া জেন্টলম্যান’ সিনেমায় অভিনয় করেন শাহরুখ। তার পরের বছর ‘ডর’ ও ‘বাজিগর’ সিনেমায় অভিনয় করে নিজের জাত চেনান শাহরুখ। তার অভিনয়ের জাদুতে মুগ্ধ হন কোটি ভক্ত; পৌঁছে যান সাফল্যের চূড়ায়। তার অভিনয়ের খ্যাতি আরো বাড়তে থাকে যশরাজ ফিল্মসের সিনেমায় ধারাবাহিকভাবে অভিনয় করে। একের পর এক হিট সিনেমা দিয়ে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে অবস্থান করেন শাহরুখ। যদিও তার এই সফলতার জার্নির গল্প মোটেও সহজ ছিল। আর সে গল্প সবারই জানা। 

অভিনয় ক্যারিয়ারে অসংখ্য সম্মাননা পেয়েছেন শাহরুখ খান। তার মধ্যে মোট পনেরোবার ফিল্মফেয়ার পুরস্কার লাভ করেছেন তিনি। এর মধ্যে আটবার সেরা অভিনেতা হিসেবে পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। হিন্দি সিনেমায় বিশেষ অবদানের জন্য ২০০২ সালে তাকে পদ্মশ্রী পুরস্কারে ভূষিত করে ভারত সরকার। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি গ্রহণ করেছেন মোট পাঁচবার। তবে শাহরুখ খানের ৩৩ বছরের অভিনয় ক্যারিয়ারে অধরা ছিল জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। চলতি বছর ‘জওয়ান’ সিনেমার জন্য সেরা অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন শাহরুখ।

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ