যুক্তরাষ্ট্রের নিওয়ার্ক বিমানবন্দরে এক ভারতীয় তরুণকে মাটিতে ফেলে পিছমোড়া করে হাতকড়া পরানোর ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ওই ছবি দেখার পর নড়েচড়ে বসেছে নিউইয়র্কের ভারতীয় কনস্যুলেট। সেখানকার ভারতীয় কনস্যুলেট জানিয়েছে, এই বিষয়ে তারা স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। কিন্তু যোগাযোগের পর কী জানা গেছে, এখনো তা অজানা।

গত রোববার যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সি অঙ্গরাজ্যের নিওয়ার্ক বিমানবন্দর থেকে কুনাল জৈন নামের এক অনাবাসী ভারতীয় ওই ভিডিও পোস্ট করেন। তাতে দেখা যায়, পুলিশ এক তরুণকে মাটিতে ফেলে পিছমোড়া করে হাতকড়া পরাচ্ছে।

কুনাল বলেন, সম্ভবত ওই তরুণকে নিওয়ার্ক থেকে ভারতে ফেরত পাঠানো হচ্ছিল। তরুণটির পরনে ছিল কালো পোশাক। তিনি কাঁদছিলেন। কর্তৃপক্ষ তাঁর সঙ্গে এমন আচরণ করছিল, যেন তিনি অপরাধী।

কুনাল জৈন পরপর একাধিক পোস্ট করেন। ভিডিও ও ছবি দিয়ে তিনি লেখেন, ‘তরুণটি স্বপ্ন ধাওয়া করে এসেছিলেন। কারও ক্ষতি করেননি। এক অনাবাসী হিসেবে নিজেকে অসহায় লাগছিল। আমার মন ভারাক্রান্ত হয়ে পড়েছিল। এ এক মানবিক ট্র্যাজেডি।’

ভারতীয় দূতাবাস ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে ট্যাগ করে অন্য এক পোস্টে কুনাল লেখেন, ‘অসহায় এই ছেলেটির মা–বাবা জানতেও পারবেন না, তাঁদের ছেলের কী দশা হয়েছে। আমার সঙ্গে একই ফ্লাইটে তাঁর ওঠার কথা ছিল। কিন্তু তাঁকে উড়োজাহাজে তোলা হয়নি। তাঁকে দেখে দিশাহারা মনে হচ্ছিল। নিউ জার্সি কর্তৃপক্ষ তাঁর সঙ্গে কী করেছে, সেই খোঁজখবর করা উচিত।’

ভিডিওতে দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে ‘পোর্ট অথরিটি পুলিশ’ লেখা জামা ও টুপি পরা অবস্থায় দেখা গেছে। পোর্ট অথরিটি পুলিশ বিভাগ নিউইয়র্ক ও নিউ জার্সিতে ট্রানজিট আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। তারা বিমান ও সমুদ্রবন্দর, বাস ও রেল টার্মিনাল, সেতু, টানেল ও ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার কমপ্লেক্সের নিরাপত্তা কাজ করে।

অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসনের মনোভাব খুবই কঠোর। বহু দেশের বিরুদ্ধে সরকার ইতিমধ্যে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। ভারত থেকে অবৈধভাবে সে দেশে যাওয়া কিংবা ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়া সত্ত্বেও থেকে যাওয়া অভিবাসীদের সে দেশ থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। সেসব নাগরিককে উড়োজাহাজের অভ্যন্তরেও হাতকড়া ও পায়ে বেড়ি পরিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অমানবিক আচরণের বিরুদ্ধে দেশে প্রতিবাদ হলেও ভারত সরকার কঠোর কোনো মনোভাব গ্রহণ করেনি। সংসদে এ নিয়ে প্রশ্ন উঠলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর সে দেশের অভ্যন্তরীণ আইনের উল্লেখ করেছিলেন। পরে নারী ও শিশুদের বিমানযাত্রার সময় হাতকড়া না পরিয়ে নিয়ে আসার কথা যুক্তরাষ্ট্র সরকারের পক্ষে জানানো হয়েছিল।

অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে নতুন করে ট্রাম্প প্রশাসন যে ব্যবস্থা নিয়েছে, মনে করা হচ্ছে, ওই তরুণের প্রত্যাবর্তন তারই অংশ। কিন্তু সেটা যে মানবিকভাবেও করা যায়, কুনাল তাঁর ভিডিওতে সেটাই বলতে চেয়েছেন। এই বিষয়ে আজ মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত ভারতীয় দূতাবাস নতুন কোনো আলোকপাত করতে পারেনি। তরুণটির পরিচয়ও জানা যায়নি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র র সরক র হ তকড়

এছাড়াও পড়ুন:

জার্মানিতে ‘জলদানবের’ আতঙ্ক

দক্ষিণ জার্মানির মিটেলফ্রাঙ্কেনের একটি হ্রদে দুই মিটারের বেশি লম্বা একটি মাছের আক্রমণে অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন। স্থানীয় পুলিশ জানায়, একজন পুলিশ অফিসার শেষ পর্যন্ত তাঁর পিস্তল দিয়ে রাক্ষুসে ওয়েলস মাছটিকে গুলি করে মেরেছেন। কর্মকর্তাদের মতে, মাছটির ওজন ছিল প্রায় ৯০ কিলোগ্রাম।

গ্রীষ্মের রৌদ্রোজ্জ্বল আবহাওয়াতে রোববার ব্যাভেরিয়া রাজ্যের মিটেলফ্রাঙ্কেনের হ্রদে অনেক মানুষ সাঁতার কাটতে নেমেছিলেন। হঠাৎ করে একে একে পাঁচজন রক্তাক্ত শরীর নিয়ে চিৎকার করে হ্রদের তীরে উঠে আসেন। গভীর জলে ‘দানবের’ উপস্থিতিতে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েন সবাই। ঘটনার আগে কেউ জানতেন না, মিটেলফ্রাঙ্কেনের এই হ্রদে জলদানব মাছটি ঘাঁটি গেড়েছে।

ঘটনার পরপরই স্থানীয় হ্রদরক্ষীরা দ্রুত পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ এসে সাঁতারের পুরো এলাকা বন্ধ করে দেয়। এ সময় হ্রদের পাশে চলতে থাকা একটি সংগীত উৎসবও থমকে যায়।

এর আগে শুক্রবার মিটেলফ্রাঙ্কেনের হ্রদে মাছটি প্রথম দেখা যায়। পুলিশ জানায়, মাছটি দীর্ঘ সময় ধরে হ্রদে ছিল। তবে ইতিপূর্বে মাছটি এমন আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেনি। তবে রোববার ৩১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় মাছটি আক্রমণাত্মক আচরণ শুরু করে। এ সময় মাছটি পাঁচজনকে আক্রমণ করে রক্তাক্ত করে। স্থানীয় পুলিশ মুখপাত্র মিশায়েল পেটসল্ড বলেছেন, এ ধরনের ওয়েলস মাছের ক্ষেত্রে এমন আচরণ একেবারেই অস্বাভাবিক। সম্ভবত মাছটি তার বাসা এবং ছানাদের রক্ষা করতে চাচ্ছিল।

ঘটনার পর পুলিশ এসে প্রথমে সাঁতারের এলাকা বন্ধ করে দেয় যাতে আর কেউ আক্রান্ত না হন। পরে একজন পুলিশ সদস্য তাঁর সার্ভিস পিস্তল দিয়ে মাছটিকে গুলি করেন। পরে দুইজন জেলে মাছটিকে একটি নৌকা দিয়ে হ্রদ থেকে তুলে আনেন। এরপর সাঁতারের এলাকা পুনরায় খুলে দেওয়া হয়।

ওয়েলস মাছ আকারে অনেক বড় হতে পারে। প্রায়ই জার্মানিতে তারা আলোচনায় আসে। ২০ বছর আগে নর্ডরাইন-ভেস্টফালেন রাজ্যে মুনশেনগ্লাডবাখ শহরে ‘কুনো, দ্য কিলার ওয়েলস’ নামে একটি মাছ আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করেছিল। তখন বলা হয়েছিল, মাছটি একটি তরুণ রাউহারড্যাকেল কুকুরকে গিলে ফেলেছিল।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী বাছাইয়ে কে এগিয়ে
  • সাবেক সিইসি নূরুল হুদাকে হেনস্তার ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত দাবি ব্লাস্টের
  • বিশ্বকে যুদ্ধক্ষেত্র বানাতে চান ট্রাম্প
  • তপন চৌধুরী, নাসিম মঞ্জুর ও জারিন মাহমুদ এমটিবির পরিচালক
  • নিউইয়র্কে প্রথমবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে বাংলা ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল
  • ‘মব’ মানবাধিকার লঙ্ঘনের গুরুতর দৃষ্টান্ত, সরকারের দায় এড়ানোর সুযোগ নেই
  • সিরাজুল আলম খান স্বাধীনতা ও ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ
  • জার্মানিতে ‘জলদানবের’ আতঙ্ক
  • সংবাদ সংগ্রহকালে সাংবাদিকদের হেনস্তার অভিযোগ ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে
  • ‘আপনার কাছে করজোড়ে ক্ষমা ক্ষমা চাইছি’, মেজবাহর এই বক্তব্যের নেপথ্যে কী