যে কারণে কক্সবাজার সৈকতে পর্যটকের মৃত্যু ঠেকানো যাচ্ছে না
Published: 10th, June 2025 GMT
ঈদের ছুটির দুই দিনে সাগরে নেমে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত ভ্রমণে আসা পর্যটকসহ ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। ১২০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সৈকতের একাধিক স্থানে ভাঙন ও গুপ্তখালের সৃষ্টি হওয়ায় সাগরে নামার আগে বিপদ টের পাচ্ছেন না পর্যটকেরা। পর্যটকদের উদ্ধারের আয়োজনও অপ্রতুল। ফলে সমুদ্রস্নানে যাওয়া পর্যটকদের মৃত্যু ঠেকানো যাচ্ছে না। নানা অবকাঠামোর উন্নয়ন হলেও নিরাপদ গোসলের ব্যবস্থা না হওয়ায় হতাশ পর্যটন–সংশ্লিষ্টরা।
হোটেল-মোটেল কর্তৃপক্ষ ও টুরিস্ট পুলিশের হিসাবে, ঈদের ছুটিতে গত দুই দিনে অন্তত আড়াই লাখ পর্যটক কক্সবাজারে বেড়াতে এসেছেন। আগামী দুই দিনে আসবেন আরও তিন লাখ মানুষ। ভ্রমণে আসা ৯০ শতাংশ পর্যটক সাগরে নামেন গোসল করতে। কিন্তু গত তিন দশকেও সমুদ্রের নির্দিষ্ট কোনো জায়গায় নিরাপদ গোসলের ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়নি। পর্যটন খাত থেকে হোটেল-মোটেল মালিক এবং সরকার বিপুল টাকা আয় করলেও নিরাপদ গোসলের ব্যবস্থার ক্ষেত্রে সবাই উদাসীন। ১২০ কিলোমিটারের এই সৈকতের মাত্র ৫ কিলোমিটারে (কলাতলী থেকে লাবণী পয়েন্ট পর্যন্ত) উদ্ধার তৎপরতা চালানো জন্য বেসরকারি একটি সংস্থার ২৬ জন কর্মী রয়েছেন। অবশিষ্ট ১১৫ কিলোমিটার সৈকত অরক্ষিত পড়ে থাকছে। বিশেষ করে টেকনাফ, বাহারছড়া, পাটোয়ারটেক, ইনানী, হিমছড়ি, দরিয়ানগর, কলাতলী পয়েন্টের সৈকতে কেউ গোসলে নেমে নিখোঁজ হলে উদ্ধার তৎপরতা চালানোর কেউ নেই।
পুলিশ ও লাইফগার্ডের কর্মীরা জানায়, গতকাল সোমবার বেলা দুইটার দিকে কলাতলী সৈকতে গোসলে নেমে রাজশাহীর শাহিনুর রহমান (৫৮) ও সিফাত রহমান (২০) নামের দুই পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে। তাঁরা সম্পর্কে বাবা-ছেলে। আগের দিন রোববার বিকেলে সৈকতের লাবণী পয়েন্টে গোসলে নেমে নিখোঁজ হন মো.
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইলিয়াস খান বলেন, বৈরী পরিবেশে সাগর উত্তাল রয়েছে, বিভিন্ন পয়েন্টে বেশ কয়েকটি গুপ্তখালের সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে। গুপ্তখালের পাশে গোসলে নামতে নিষেধ করে একাধিক লাল নিশানা ওড়ানো হচ্ছে। কিন্তু পর্যটকেরা সেই নির্দেশনা অমান্য করে গোসলে নেমে বিপদে পড়ছেন।
সাম্প্রতিক বৃষ্টিতে নতুন করে গুপ্তখালের কারণে পর্যটকদের ঝুঁকি বেড়েছে বলে জানান সি-সেফ লাইফগার্ডের সুপারভাইজার সিফাত সাইফুল্লাহ। তিনি বলেন, সাম্প্রতিক কয়েক দিনের বৃষ্টিতে পাহাড় থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে ভাঙন এবং গুপ্তখালের সৃষ্টি হয়েছে। গুপ্তখাল যেখানে আছে এমন সৈকতে গোসলে নামতে নিষেধ করে বালুচরে একাধিক লাল নিশানা ওড়ানো হচ্ছে। মাইকিং করেও লোকজনকে সচেতন করা হয়। কিন্তু কেউ বিধিনিষেধ মেনে চলেন না। দৈনিক এক লাখের বেশি পর্যটককে একসঙ্গে সামাল দিতে ২৫ জন লাইফগার্ড, ২৫ জন বিচ কর্মী ও ৭০-৮০ জন টুরিস্ট পুলিশের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
সি-সেফ প্রতিষ্ঠানের দেওয়া তথ্যমতে, স্রোতের টানে ভেসে কিংবা গুপ্তখালে আটকা পড়ে গত বছর আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে মারা গেছেন পাঁচজন পর্যটক। এর আগের ৬ বছরে স্রোতের টানে ভেসে গিয়ে মারা গেছেন ৪৯ জন পর্যটক।
কক্সবাজার সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে পর্যটকদের সতর্ক করতে টানানো হয়েছে লাল পতাকা। গতকাল বিকালেউৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বাবা হারালেন চিত্রনায়িকা মিষ্টি জান্নাত
ঢাকাই সিনেমার আলোচিত নায়িকা মিষ্টি জান্নাতের বাবা মো. মকবুল হোসেন মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মিষ্টি জান্নাত।
আজ বুধবার সকাল ৪টায় দেওয়া দেয়া ফেসবুক পোস্টে মিষ্টি জান্নাত লিখেছেন, "আমার বাবা আর নেই।"
তার এই সংক্ষিপ্ত বার্তাটি প্রকাশের পর থেকেই শুভাকাঙ্ক্ষী ও সহকর্মীরা শোক ও সমবেদনা জানাতে শুরু করেছেন। মিষ্টি জান্নাতের পরিবারের প্রতি নেমে এসেছে গভীর শোক।
আরো পড়ুন:
দয়া করে শাকিব খানকে প্রশ্নটি করুন: মিষ্টি জান্নাত
ক্ষোভ ঝাড়লেন মিষ্টি
তার এই দুঃসময়ে চলচ্চিত্র জগতের অনেকেই পাশে দাঁড়িয়েছেন। জনপ্রিয় খলনায়ক মিশা সওদাগর কমেন্ট বক্সে লিখেছেন,‘‘ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলায়হি রাজিউন।’’
এছাড়া অসংখ্য নেটিজেনও শোক প্রকাশ করে মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেছেন। একজন নেটিজেন লিখেছেন, ‘‘আপনার বাবার জন্য অনেক অনেক দোয়া রইলো, মহান আল্লাহ আপনার বাবাকে যেন জান্নাতুল ফেরদাউস নসীব করে, আমিন।’’
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে ‘লাভ স্টেশন’ সিনেমার মাধ্যমে রূপালি পর্দায় অভিষেক ঘটে মিষ্টি জান্নাতের। নায়িকা পরিচয়ের পাশাপাশি তিনি একজন পেশাদার চিকিৎসকও।
ঢাকা/রাহাত/লিপি