রবীন্দ্র কাছারি বাড়িতে দর্শনার্থীকে নির্যাতনের অভিযোগ: প্রতিবাদে বিক্ষোভ, অডিটোরিয়াম ভাঙচুর
Published: 10th, June 2025 GMT
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছারি বাড়িতে এক দর্শনার্থীকে আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার (১০ জুন) দুপুরে এ ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে স্থানীয় জনতা।
এ সময় কাছারি বাড়ির অডিটোরিয়াম ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। এছাড়া, কাছারি বাড়ির পরিচালক সিরাজুল ইসলামকে মারধর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ঈদের পরদিন বিকালে শাহনেওয়াজ নামের এক দর্শনার্থী স্ত্রী ও ভাতিজাকে নিয়ে রবীন্দ্র কাছারি বাড়ি ঘুরতে আসেন। তিনি প্রবেশ মূল্য নিয়ে টিকেট নেন। কিন্তু, মোটরসাইকেল পার্কিংয়ের জন্য টাকা নেওয়া হলেও তাকে কোনো টোকেন দেয়নি কর্তৃপক্ষ।
শাহনেওয়াজ কাছারি বাড়ি পরিদর্শন শেষে বের হওয়ার সময় মোটরসাইকেলের টিকেট দেখতে চান মেইন গেইটে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মচারী। টিকেট দেখাতে ব্যর্থ হওয়ায় শাহনেওয়াজের সঙ্গে ওই কর্মচারীর কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
পরে কাস্টোডিয়ানসহ কাছারি বাড়ির অন্যান্য কর্মচারীরা মিলে শাহনেওয়াজকে ধরে নিয়ে গিয়ে অফিসের মধ্যে আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতন চালায়।
খবর পেয়ে শাহনেওয়াজের অভিভাবক এবং স্থানীয় বিএনপি নেতারা তাকে উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় শাহনেওয়াজ ওই দিন রাতেই শাহজাদপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দেন।
দুই দিন পরও ওই ঘটনায় পুলিশ কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় দোষীদের শাস্তির দাবিতে শাহজাদপুরের সর্বস্তরের জনতার ব্যানারে প্রেস ক্লাবের সামনে মঙ্গলবার দুপুরে মানববন্ধন কর্মসূচি করা হয়।
শাহনেওয়াজের ভাই সুমন আহমেদ অভিযোগ করে বলেছেন, ‘‘তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শাহনেওয়াজকে আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়েছিল। এই কাস্টোডিয়ান দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই দর্শনার্থীদের সঙ্গে বাজে আচরণ করে আসছে।’’
এদিকে, শাহজাদপুর কাছারি বাড়ির কাস্টোডিয়ান হাবিবুর রহমান ঈদের পরদিনের ঘটনাটিকে ‘অনাকাঙ্ক্ষিত’ বলে মন্তব্য করেছেন।
শাহজাদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আসলাম আলী বলেন, ‘‘দর্শনার্থীকে আটকে রেখে নির্যাতন ও ভাঙচুরের ঘটনায় তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’’
ঢাকা/রাসেল/রাজীব
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
জবিতে নিখোঁজ ৩ ছাত্রদল নেতার সন্ধানে মানববন্ধন
২০১৩ সালের ৪ ডিসেম্বর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) নিখোঁজ তিন ছাত্রদল নেতার সন্ধানের দাবিতে মানববন্ধন করেছে ছাত্রদল। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এই কর্মসূচিতে শিক্ষক সমিতির নেতারাও সংহতি জানান।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, “ছাত্রদল নেতা মাজহারুল ইসলাম রাসেল, আসাদুজ্জামান রানা ও আল-আমিনকে নিখোঁজের ১১ বছর পরও উদ্ধার করা যায়নি। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় গুম-খুন, পেটোয়া বাহিনীর হামলা ও নির্যাতন ছিল নিয়মিত ঘটনা।”
আরো পড়ুন:
ভাইকে তো পাব না, অন্তত বিচার যদি পাই: বিশ্বজিতের ভাই
বিশ্বজিৎ হত্যার দৃশ্যচিত্র আজো দেশের মানুষকে কাঁদায়: অধ্যাপক রইছ
বক্তারা সব নিখোঁজ নাগরিকের সন্ধান নিশ্চিত করা এবং বিচার বিভাগের কার্যকর ভূমিকা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জবির ছাত্রদল সমর্থিত জাকসুর প্যানেলের জিএস প্রার্থী ও শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক খাদিজাতুল কোবরা বলেন, “আজ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস। বিগত ফ্যাসিস্ট আমলে বহু মানুষ গুম হয়েছে। স্বাধীন দেশে ভাইদের খুঁজতে রাস্তায় দাঁড়াতে হয়, এটাই আমাদের বেদনা। আমরা এমন দেশ চাই যেখানে কেউ গুম হবে না এবং সবার ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে।”
শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল বলেন, “ফ্যাসিস্ট আমলে বহু বিএনপি নেতা গুম-খুনের শিকার হয়েছেন। ছাত্রলীগের হাতে বহু শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। আমাদের অনেকে ফিরে এলেও জবির তিন ভাইকে এখনো পাইনি। দীর্ঘ ১৭ বছর আমরা মৃত্যুকে উপেক্ষা করে আন্দোলন করছি। গুম-খুনের সঙ্গে জড়িতদের বিচার চাই।”
মানববন্ধনে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছ্ উদ্দিন বলেন, “বিগত ফ্যাসিস্ট আমলে গুম-খুন ছিল নৈমিত্তিক ঘটনা। জুলাই আন্দোলনের পরও অনেকের সন্ধান পাইনি। জবির তিন ছাত্রদল নেতা, আমার কাজিন ইলিয়াস আলীসহ বহু মানুষ এখনো নিখোঁজ। প্রতি ১০ ডিসেম্বর মানববন্ধন করি, পরদিন ভুলে যাই-এটাই দুঃখজনক।”
শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোশাররফ হোসেন বলেন, “অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে গুম হওয়া শিক্ষার্থীদের বিষয়ে তদন্ত কমিটি হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলো জবিতে এখনো হয়নি। আমরা চাই, জবি থেকে গুম হওয়া শিক্ষার্থীদের বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হোক।”
ঢাকা/লিমন/জান্নাত