অস্ট্রিয়ায় স্কুলে বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত ৯
Published: 11th, June 2025 GMT
অস্ট্রিয়ার গ্রাজ শহরের একটি মাধ্যমিক স্কুলে বন্দুকধারীর গুলিবর্ষণে ৯ জন নিহত হয়েছেন। পরে ওই হামলাকারী নিজেও আত্মঘাতী হন। গতকাল মঙ্গলবার এ ঘটনা ঘটে। ২১ বছরের সন্দেহভাজন হামলাকারী স্কুলটির সাবেক শিক্ষার্থী বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
হামলায় আরও কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। বিবিসি জানায়, অন্তত দু’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। গ্রাজ শহরের মেয়র এলকে কাহার এ ঘটনাকে ‘জাতীয় ট্র্যাজেডি’ বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি জানান, নিহতদের মধ্যে শিক্ষার্থী ও স্কুল কর্মচারী রয়েছেন। এ ঘটনায় হামলাকারীসহ ১০ জন নিহত হয়েছেন বলে জানান তিনি।
হামলাকারী ওই স্কুলের সাবেক শিক্ষার্থীর মরদেহ বাথরুম থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, হামলার পর তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন। পুলিশ জানায়, স্কুল থেকে একাধিক গুলির আওয়াজের খবর পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে যান। পুলিশের মুখপাত্র সাবরি ইয়রগুন বলেন, স্থানীয় সময় সকাল ১০টার দিকে ফোন পেয়ে বিশেষ বাহিনী স্কুলে পাঠানো হয়। ঘটনার বিস্তারিত জানতে কাজ করছে কর্তৃপক্ষ।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গ্রাজ পুলিশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে জানায়, স্কুলটি খালি করা হয়েছে এবং শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এখন আর সেখানে কোনো ঝুঁকি নেই। এলাকাটি নিরাপদ ঘোষণা করা হয়েছে। স্থানীয় এক সংবাদিক ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে তিনি শহরের রাস্তায় সাধারণ মানুষকে কান্নারত অবস্থায় দেখেছেন। তিনি বলেন, গ্রাজ শহরটির বাসিন্দারা একে অন্যকে চেনেন।
হামলাকারীর অতীতের কোনো অপরাধ রেকর্ড নেই। তিন লাখেরও বেশি জনসংখ্যার শহর গ্রাজের অবস্থান অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনার প্রায় ২০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে। এটি অস্ট্রিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর।
অস্ট্রিয়ায় কঠোর অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইন রয়েছে। দেশটিতে আগ্নেয়াস্ত্রের মালিকানার জন্য লাইসেন্সের প্রয়োজন হয়। দেশটিতে নাবালকদের অস্ত্র রাখার অনুমতি নেই। ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের বাসিন্দাদের অস্ট্রিয়ায় অস্ত্র আনতে বিশেষ অনুমতি নিতে হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে অস্ট্রিয়ায় তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
বেলাবতে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ, যুবক নিহত
নরসিংদীর বেলাব উপজেলায় দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে সাইফুল ইসলাম (২৭) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১১ পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ৩০ জন।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে উপজেলার বেলাব ইউনিয়নের মাটিয়ালপাড়া ও চরবেলাব গ্রামের মধ্যবর্তী সেতু এলাকায় দফায় দফায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। নিহত সাইফুল চরবেলাব গ্রামের মো. জীবন মিয়ার ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, বুধবার বিকেলে বেলাব হোসেন আলী সরকারি কলেজ মাঠে একটি প্রীতি ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। খেলা শেষে বাড়ি ফেরার পথে চরবেলাব গ্রামের মোটরসাইকেল আরোহী ও বেলাব মাটিয়ালপাঁড়া গ্রামের অটোরিকাশচালকের মধ্যে সড়কে সাইড দেওয়াকে কেন্দ্র করে কথা কাটাকাটি হয়। পরে এ ঘটনায় দুই গ্রামের বেশ কয়েকজন যুবক সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় আহত হন চারজন। এ ঘটনার জেরে আজ সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বেলাব মাটিয়ালপাঁড়া ও চরবেলাব গ্রামের শত শত মানুষ লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। এ সময় ১১ পুলিশ সদস্যসহ দুই গ্রামের অন্তত ১৯ জন আহত হন। তাদের বেলাব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ নরসিংদী ও ভৈরবের বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নিহত সাইফুলের পরিবারের দাবি, পুলিশের ছোড়া রাবার বুলেটে সাইফুলে মৃত্যু হয়েছে।
বেলাব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মাহবুবুর রহমান বলেন, সংঘর্ষে দেশীয় অস্ত্রের পাশাপাশি দুই গ্রামের মানুষই আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে। এসময় উত্তেজিত গ্রামবাসী পুলিশের ওপরও
হামলা করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও আত্মরক্ষার্থে পুলিশও রাবার বুলেটে ছোড়ে। যিনি মারা গেছেন তিনি গ্রামবাসীর নাকি পুলিশের গুলিতে মারা গেছেন, তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে জানা যাবে।
নরসিংদী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুজন চন্দ্র সরকার জানান, ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত।