জাজিরায় পদ্মা নদীর বাঁধের ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন দুই উপদেষ্টার
Published: 11th, June 2025 GMT
শরীয়তপুরে পদ্মা সেতু প্রকল্প এলাকা রক্ষা বাঁধের ভাঙনকবলিত স্থান পরিদর্শন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টা। বুধবার দুপুরে অর্থ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ জালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান জাজিরার নাওডোবা এলাকায় আসেন। তাঁরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তা, স্থানীয় জনসাধারণ ও গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন।
আরও পড়ুনপদ্মা সেতু প্রকল্প এলাকা রক্ষা বাঁধে ভাঙন, স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক২২ ঘণ্টা আগেউপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান জানান, নদীভাঙনের কারণ নদীর গতিপথ পরিবর্তন ও অবৈধভাবে বালু উত্তোলন। অবৈধভাবে ড্রেজার (খননযন্ত্র) চালানোর ফলে পদ্মা নদীর আশেপাশের এলাকায় ভাঙন দেখা দেয়। তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দিয়েছি। তবে জেলা প্রশাসনের লোকজন ড্রেজার শ্রমিকদের ধরেন। তাঁদের ধরে লাভ নেই। আমরা বলেছি ড্রেজারগুলো আটকাতে হবে এবং এসব ড্রেজার জব্দ করে মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। এটা বন্ধ করা না গেলে বাঁধ দিলেও সমস্যার সমাধানে আসবে না।’
প্রয়োজনে সেনাবাহিনী, কোস্টগার্ডকে সঙ্গে নিয়ে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করে নদীভাঙন রোধ করা হবে বলে জানান ফাওজুল কবির। অবৈধ ড্রেজার পরিচালনায় জেলা প্রশাসক জনস্বার্থবিরোধী অনুমতি দিয়ে থাকলে তাঁর বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন উপদেষ্টা।
ভাঙন ঠেকাতে দ্রুত টেকসই বাঁধ নির্মাণের কথা জানিয়েছেন অর্থ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে ভাঙনকবলিত জায়গায় ভাঙন ঠেকাতে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ডাম্পিং করা হচ্ছে। এ ছাড়া এ বিষয়ে পাউবো ও সেতু বিভাগের সমীক্ষার পর ফলাফল ও নকশা অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্ত স্থানে দ্রুত টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হবে।
এ সময় দুই উপদেষ্টার সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন পাউবোর অতিরিক্ত মহাপরিচালক এনায়েত উল্লাহ, প্রধান প্রকৌশলী শাহজাহান সিরাজ, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন, পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম, পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মাদ তারেক হাসান।
শরীয়তপুর পাউবো সূত্রে জানা যায়, গত বছর নভেম্বর মাসে নাওডোবার জিরো পয়েন্ট এলাকায় পদ্মা সেতুর প্রকল্প রক্ষা বাঁধে ভাঙন দেখা দেয়। এরপর গত শনিবার সকালে আবার বাঁধের ২০০ মিটার অংশ ভেঙে নদীতে ধসে পড়ে। এরপর ওই স্থানে ভাঙন ঠেকাতে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলছে পাউবো।
বাঁধের অংশ ভেঙে যাওয়ায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে জাজিরার আলম খার কান্দি, উকিল উদ্দিন মুন্সি কান্দি ও ওছিম উদ্দিন মুন্সি কান্দি গ্রামের অন্তত ৬০০ পরিবার। এর মধ্যে আলম খার কান্দি গ্রামের ১৫ ব্যক্তি তাঁদের ১৩টি বসতঘর ও দুটি দোকান সরিয়ে নিয়েছেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উপদ ষ ট
এছাড়াও পড়ুন:
অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস, পাহাড়ে ভূমিধসের শঙ্কা
আজ শ্রাবণের ১৬ তারিখ। প্রকৃতির নিয়মে এ মাসে বৃষ্টি বেশি ঝরে। আজও ঢাকার আকাশ মেঘলা। বুধবার রাত থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। কখনও ঝুম বৃষ্টি কখনও গুঁড়ি গুঁড়ি। তবে সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে উপকূলীয় ও পাহাড়ি এলাকায় অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। রয়েছে ভূমিধসের ঝুঁকি।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন স্থানে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা করা হচ্ছে। ফলে চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি ও কক্সবাজারের পাহাড়ি এলাকায় কোথাও কোথাও ভূমিধসের ঝুঁকি রয়েছে।
আবহাওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, অতিভারী বৃষ্টির কারণে খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম মহানগরীর কিছু এলাকায় সাময়িক জলাবদ্ধতা দেখা দিতে পারে। নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়াসহ বাস, রিকশা ও সাধারণ চলাচলে বিঘ্ন ঘটতে পারে।
বঙ্গোপসাগরে উত্তাল থাকায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। নদী ও সমুদ্রবন্দর এলাকায় অবস্থানরত নৌযানগুলোকে সাবধানতার সঙ্গে চলাচলের নির্দেশ দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সারা দেশে আজ দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে, রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে।
শুক্রবার ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়, এবং রংপুর, রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের অনেক জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে।
শনিবারও সারা দেশে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে। বিশেষ করে ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে অধিকাংশ এলাকায় এবং অন্যান্য বিভাগে অনেক জায়গায় দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি হতে পারে। সারা দেশে দিনের ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।
রবিবার রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং খুলনা ও বরিশাল বিভাগে অনেক জায়গায় বৃষ্টি হতে পারে। কোথাও কোথাও হতে পারে অতি ভারী বৃষ্টিপাত।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের বর্ধিত পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী পাঁচ দিন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে।
গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে কক্সবাজার ৬৮ মিলিমিটার। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল সৈয়দপুরে ৩৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
ঢাকা/ইভা